আদম ‘আলাইহিস সালামের শরীর জমিন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে আর তার রূহ ঊর্ধ্বজগত থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং উভয়ের মাঝে সমন্বয় করা হয়েছে। যখন তার শরীর রূহকে কাজের মাধ্যমে ক্ষুধার্ত রাখে, তাকে জাগিয়ে রাখে এবং নানা কাজে তাকে ব্যস্ত রাখে তখন তার রূহ হালকা ও আরাম অনুভব করে এবং সে যেখান থেকে সৃষ্ট হয়েছে সেখানে ফিরে যেতে ইচ্ছা পোষণ করে, সে ঊর্ধ্বজগতে ফিরে যেতে চায়। আর শরীর যখন তৃপ্ত করে, তাকে আরাম-আয়েশে রাখে, তাকে ঘুম পড়িয়ে রাখে, তার খেদমত ও বিশ্রামের কাজে নিয়োজিত থাকে তখন শরীর তাকে যেখান থেকে সৃষ্ট হয়েছে সেখানে স্থায়ী করে (অর্থাৎ জমিনে স্থায়ী করে রাখে)। তখন শরীরের সাথে রূহের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়, ফলে তা একধরণের জেলখানায় পরিণত হয়। রূহ যদি সেখানে খাদ্য না পায় তখন সে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ঊর্ধ্বজগতে মিলিত হয়ে এমনভাবে চিৎকার ও সাহায্য কামনা করে যেমনিভাবে শাস্তিভোগকারী ব্যক্তি চিৎকার ও সাহায্য প্রার্থনা করে।
মূলকথা, শরীর যত হালকা হয় রূহ তত সূক্ষ্ম ও হালকা হয় এবং তখন সে ঊর্ধ্বজগতে ফিরে যেতে আশা করে। আর শরীর যত ভারী হয় এবং প্রবৃত্তি ও আরাম-আয়েশের প্রতি স্থায়ী করে রাখতে চায়, তখন রূহও তত ভারী হয় ও ঊর্ধ্বজগত থেকে নিম্ন জগতে ছিটকে পড়ে এবং তখন তা নিম্ন ভূমির বস্তুতে পরিণত হয়।