সমস্ত অসচ্চরিত্রের মূল হলো অহংকার, অপমান ও নীচুতা। আর সব সচ্চরিত্রের মূল হলো বিনয় ও উচ্চ হিম্মত।
অতএব, অহংকার, অবাধ্যতা, দাম্ভিকতা, অহমিকা, হিংসা, সীমালঙ্ঘন, গর্ব, যুলুম, কঠোরতা, দাপট দেখানো, উপেক্ষা করা, সদুপদেশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা, একচেটিয়া ক্ষমতা দেখানো, উচ্চ পদ কামনা করা, ক্ষমতা ও পদ প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা করা, কাজ না করে মানুষের প্রশংসা কামনা করা ইত্যাদি সব কিছুই অহংকার থেকেই সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে মিথ্যাচার, তুচ্ছতা, খিয়ানত, লোক দেখানো, ষড়যন্ত্র করা, ধোঁকা দেওয়া, উচ্চাভিলাষ, দুশ্চিন্তা, ভীরুতা, কৃপণতা, অক্ষমতা, অলসতা, আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছে নত হওয়া ও উত্তম জিনিসের পরিবর্তে নিম্নমানের জিনিস চাওয়া ইত্যাদি নীচতা, হীনতা ও ছোট মানসিকতা।
আর উত্তম চরিত্র হলো ধৈর্য, বীরত্বতা, ন্যায়পরয়নতা, পুরুষত্ব, পবিত্রতা, রক্ষণাবেক্ষণতা, দানশীলতা, সহিষ্ণুতা, ক্ষমাশীলতা, মার্জনা, সম্ভাবনা, অন্যকে প্রধান্য দেওয়া, হীনতা থেকে নিজের আত্মসম্মানবোধ, বিনয়, সল্পেতুষ্টি, সততা, ইখলাস, ইহসানের অনুরূপ বা তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দেওয়া, মানুষের ভুল-ত্রুটি এড়িয়ে যাওয়া, বেহুদা কাজ বর্জন করা, সব ধরণের অসচ্চরিত্র থেকে অন্তরকে পবিত্র রাখা ইত্যাদি বিনয় ও উচ্চ হিম্মত থেকেই সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তা‘আলা জমিন সম্পর্কে বলেছেন যে, সেটি শুষ্ক, অতঃপর এতে তিনি পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর জমিন সজিব ও উজ্জীবিত হয় এবং এর সৌন্দর্য ও রূপ ধারণ করে। এমনিভাবে সব সৃষ্টি যখন আল্লাহর তাওফীকে তার যথাযথ অংশ প্রাপ্ত হয় তখন তা উত্তম রূপ ধারণ করে।
অন্যদিকে আগুণের বৈশিষ্ট্য হলো উচ্চ-মুখী ও ধ্বংসাত্মক। অতঃপর যখন আগুন নিভে যায় তখন তা সর্বনিকৃষ্ট তুচ্ছ জিনিসে পরিণত হয়। এমনিভাবে সৃষ্টিকুল ঊর্ধ্বমুখী ও নিম্নমুখী। যখন ঊর্ধ্বমুখী হয় তখন অস্থিরতায় ভোগে, আবার যখন হীন ও নীচুমুখী হয় তখন তা নিভে যায় ও নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। অসচ্চরিত্র আগুনের অনুগামী এবং তা আগুন থেকে তৈরি। আর সচ্চরিত্র জমিনের অনুগামী এবং তা জমিন থেকে সৃষ্ট। সুতরাং যে ব্যক্তির হিম্মত উচুঁ হবে এবং নিজেকে বিনয়ী করবে সে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হবে, আর যে নিম্ন হিম্মতের হবে এবং নিজে অবাধ্য হবে সে অসচ্চরিত্রে ভূষিত হবে।