আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
(وَقَالَ مُوسَى رَبَّنَا إِنَّكَ آتَيْتَ فِرْعَوْنَ وَمَلَأَهُ زِينَةً وَأَمْوَالًا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا رَبَّنَا لِيُضِلُّوا عَنْ سَبِيلِكَ رَبَّنَا اطْمِسْ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَاشْدُدْ عَلَى قُلُوبِهِمْ فَلَا يُؤْمِنُوا حَتَّى يَرَوُا الْعَذَابَ الْأَلِيمَ (88) قَالَ قَدْ أُجِيبَتْ دَعْوَتُكُمَا فَاسْتَقِيمَا وَلَا تَتَّبِعَانِّ سَبِيلَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ (89)) [يونس: 88 - 89]
‘আর মূসা বললেন, হে আমাদের রব!আপনি ফির‘আউন ও তার পরিষদবর্গকে দুনিয়াবী জীবনে সৌন্দর্য ও ধন-সম্পদ দান করেছেন। হে আমাদের রব! যাতে তারা আপনার পথ হতে গোমরাহ করতে পারে। হে আমাদের রব!তাদের ধন-সম্পদ ধ্বংস করে দিন, তাদের অন্তরসমূহকে কঠোর করে দিন। ফলে তারা ঈমান আনবে না, যতক্ষণ না যন্ত্রণাদায়ক আযাব দেখে। (৮৮) তিনি বললেন, তোমাদের দো‘আ কবুল করা হয়েছে। সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাক এবং যারা জানে না, তাদের পথ অনুসরণ করো না’(সূরা ইউনুস:৮৮-৮৯)। আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন:
(وَقَالَ نُوحٌ رَبِّ لَا تَذَرْ عَلَى الْأَرْضِ مِنَ الْكَافِرِينَ دَيَّارًا (26) إِنَّكَ إِنْ تَذَرْهُمْ يُضِلُّوا عِبَادَكَ وَلَا يَلِدُوا إِلَّا فَاجِرًا كَفَّارًا (27)) ... [نوح: 26 - 27].
‘আর নূহ বললেন, ‘হে আমার রব! যমীনের উপর কোনও কাফেরকে অবশিষ্ট রাখবেন না। (২৬) আপনি যদি তাদেরকে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং দুরাচারী ও কাফের ছাড়া অন্য কারো জন্ম দেবে না’ (সূরা নূহ:২৬-২৭)।
وَعَنْ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أنَّ النَّبِيَّ - صلى الله عليه وسلم - كَانَ يُصَلِّي عِنْدَ البَيْتِ وَأبُو جَهْلٍ وَأصْحَابٌ لَهُ جُلُوسٌ إذْ قال بَعْضُهُمْ لِبَعْض: أيُّكُمْ يَجِيءُ بِسَلَى جَزُورِ بَنِي فُلانٍ، فَيَضَعُهُ عَلَى ظَهْرِ مُحَمَّدٍ إذَا سَجَدَ؟ فَانْبَعَثَ أشْقَى القَوْمِ فَجَاءَ بِهِ، فَنَظَرَ حَتَّى سَجَدَ النَّبِيُّ - صلى الله عليه وسلم -، وَضَعَهُ عَلَى ظَهْرِهِ بَيْنَ كَتِفَيْهِ وَأنَا أنظُر لا أُغِيّرُ شَيْئاً، لَوْ كَانَ لِي مَنَعَةٌ، قال: فَجَعَلُوا يَضْحَكُونَ وَيُحِيلُ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ، وَرَسُولُ اللهِ - صلى الله عليه وسلم - سَاجِدٌ لا يَرْفَعُ رَأْسَهُ، حَتَّى جَاءَتْهُ فَاطِمَةُ فَطَرَحَتْ عَنْ ظَهْرِهِ، فَرَفَعَ رَأْسَهُ ثُمَّ قالَ: «الَّلهُمَّ عَلَيْكَ بِقُرَيْشٍ». ثَلاثَ مَرَّاتٍ فَشَقَّ عَلَيْهِمْ إذْ دَعَا عَلَيْهِمْ، قالَ: وَكَانُوا يَرَوْنَ أنَّ الدَّعْوَةَ فِي ذَلِكَ البَلَدِ مُسْتَجَابَةٌ، ثُمَّ سَمَّى: «الَّلهُمَّ عَلَيْكَ بِأبِي جَهْلٍ، وَعَلَيْكَ بِعُتْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ، وَشَيْبَةَ بْنِ رَبِيعَةَ، وَالوَلِيدِ بْنِ عُتْبَةَ، وَأمَيَّةَ بْنِ خَلَفٍ، وَعُقْبَةَ بْنِ أبِي مُعَيْطٍ» وَعَدَّ السَّابِعَ فَلَمْ نحْفَظهْ، قال: فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَقَدْ رَأيْتُ الَّذِينَ عَدَّ رَسُولُ اللهِ - صلى الله عليه وسلم - صَرْعَى فِي القَلِيبِ قَلِيبِ بَدْرٍ. متفق عليه، أخرجه البخاري برقم (240) , واللفظ له، ومسلم برقم (1794)
আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা বায়তুল্লাহর পাশে ছালাত আদায় করছিলেন এবং সেখানে আবূ জাহাল ও তার সাথীরা বসে ছিল। এমন সময় তাদের একজন অন্যজনকে বলে উঠল, তোমাদের মধ্যে কে অমুক গোত্রের উটনীর নাড়িভুঁড়ি এনে মুহাম্মাদ যখন সাজদাহ করেন, তখন তার পিঠের উপর চাপিয়ে দিতে পারে? তখন গোত্রের পাষণ্ড (উক্ববাহ) তাড়াতাড়ি গিয়ে তা নিয়ে এলো এবং তার প্রতি লক্ষ্য রাখল। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সাজাদায় গেলেন, তখন সে তার পিঠের উপর দুই কাধের মাঝখানে তা রেখে দিল। ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) বলেন, আমি (এ দৃশ্য) দেখেছিলাম কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না। হায়! আমার যদি বাধা দেওয়ার শক্তি থাকত! তিনি বলেন, তারা হাসতে লাগল এবং একে অন্যের উপর লুটোপুটি খেতে লাগল। আর আল্লাহর রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন সাজাদায় থাকলেন, মাথা উঠালেন না। অবশেষে ফাতিমা (রা.) এসে সেটি তার পিঠের উপর হতে ফেলে দিলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল মাথা উঠিয়ে বললেন: হে আল্লাহ! আপনি কুরাইশকে ধ্বংস করুন। এরূপ তিনবার বললেন। তিনি যখন তাদের বদ দু‘আ করেন, তখন তা তাদের অন্তরে ভয় জাগিয়ে তুলল। বর্ণনাকারী বলেন, তারা জানত যে, এ শহরে দু‘আ কবূল হয়। অতঃপর তিনি নাম ধরে বললেন: হে আল্লাহ! আবূ জাহালকে ধ্বংস করুন এবং উতবাহ ইবনু রবী‘আহ, শায়বাহ ইবনু রবী‘আহ, ওয়ালীদ ইবনু উতবাহ, উমাইয়াহ ইবনে খালাফ ও উক্ববা ইবনু আবি মু‘আইতকে ধ্বংস করুন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি সপ্তম ব্যক্তির নামও বলেছিলেন কিন্তু তিনি স্মরণ রাখতে পারেননি। ইবনু মাস‘ঊদ (রা.) বলেন: সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, আল্লাহর রাসূল যাদের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, তাদের আমি বদরের কূপের মধ্যে নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি’ (ছহীহ বুখারী, হা/২৪০; ছহীহ মুসলিম, হা/১৭৯৪)।