(ক) তালক্বীন করানো : ‘তালক্বীন’ (التلقين) অর্থ: কথা বুঝানো বা দ্রুত মুখস্থ করে নেওয়া। মৃত্যুর আলামত দেখা গেলে রোগীর শিয়রে বসে তাকে কালেমায়ে ত্বাইয়িবা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পড়ানো উচিৎ।[42] যাতে সে দ্রুত মুখস্থ বা স্মরণ করে নেয়। তাওহীদের স্বীকৃতিবাচক এই কালেমাই তাকে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছা্ঃ) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তির সর্বশেষ বাক্য হবে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ (অর্থ : নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত), সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[43] জমহূর বিদ্বানগণ কেবল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। কেননা হাদীছে কেবল এতটুকুই এসেছে।[44]
তালক্বীনের অর্থ মৃত্যুমুখী ব্যক্তিকে কেবল কালেমা শুনানো নয়। বরং তাকে কালেমা পড়ানোর চেষ্টা করা। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক আনছার রোগীকে দেখতে গেলেন ও বললেন, হে মামু! আপনি পড়ুন লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ। তিনি বললেন যে, আমাকে এখতিয়ার দিন, আমি নিজেই পড়ি...। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হ্যাঁ’।[45] কিন্তু কালেমা পড়ানোর জন্য চাপাচাপি করা উচিৎ নয়। তাতে মুখ দিয়ে বেফাস কথা বের হয়ে যেতে পারে। একবার বলানোর পরে দ্বিতীয়বার চেষ্টা না করা উচিৎ। যাতে এই কালেমাই তার শেষ বাক্য হয়। এই সময় তাকে ক্বিবলামুখী করার জন্য উত্তর দিকে মাথা করে বিছানা ঠিক করে দেওয়া সম্পর্কে কোন ছহীহ হাদীছ নেই। খ্যাতনামা তাবেঈ সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িবকে ক্বিবলামুখী করে বিছানা ঘুরিয়ে দিলে হুঁশ ফেরার পর তিনি পুনরায় পূর্বের ন্যায় শয়ন করেন ও বলেন, মাইয়েত কি মুসলমান নয়? [46] এই সময় মাইয়েতের শিয়রে বসে সূরা ইয়াসীন পাঠ করার হাদীছ ‘যঈফ’।[47]
[43]. আবুদাঊদ, মিশকাত হা/১৬২১।
[44]. ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২৫৬।
[45]. আহমাদ হা/১২৮৯৯, সনদ ছহীহ; তালখীছ ১১ পৃঃ।
[46]. তালখীছ ১১, ৯৬ পৃঃ।
[47]. আহমাদ, আবুদাঊদ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১৬২২।