আল্লাহ তা‘আলা ইয়াহুদীদেরকে যে কিতাব দিয়েছেন তা থেকে তারা যাদু পুস্তক রচনার মাধ্যমে বিনিময় গ্রহণ করে। মহান আল্লাহ তা‘আলা তা উল্লেখ করে বলেন,
(وَلَمَّا جَاءَهُمْ رَسُولٌ مِنْ عِنْدِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِمَا مَعَهُمْ نَبَذَ فَرِيقٌ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ كِتَابَ اللَّهِ وَرَاءَ ظُهُورِهِمْ كَأَنَّهُمْ لا يَعْلَمُونَ وَاتَّبَعُوا مَا تَتْلُوا الشَّيَاطِينُ عَلَى مُلْكِ سُلَيْمَانَ وَمَا كَفَرَ سُلَيْمَانُ وَلَكِنَّ الشَّيَاطِينَ كَفَرُوا يُعَلِّمُونَ النَّاسَ السِّحْرَ)
আর যখন তাদের নিকট আল্লাহর কাছ থেকে একজন রসূল এল, তাদের সাথে যা আছে তা সমর্থন করে, আহলে কিতাবের একটি দল আল্লাহর কিতাবকে তাদের পেছনে ফেলে দেয়, (এভাবে যে) মনে হয় যেন তারা জানে না। আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরী করেনি। বরং শয়তানরা কুফরী করেছে। তারা মানুষকে যাদু শেখাত (সূরা আল বাক্বারাহ ২ : ১০১,১০২)।
ব্যাখ্যা: তাওরাতে মুহাম্মাদ এর গুণাবলী বর্ণিত আছে এবং তাকে অনুসরণ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ইয়াহুদীরা তা অস্বীকার করতো।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الْأُمِّيَّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوباً عِنْدَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالْأِنْجِيلِ يَأْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَائِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَالْأَغْلالَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ
যারা অনুসরণ করে রসূলের যে উম্মী নাবী; যার গুণাবলী তারা নিজেদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃংখল যা তাদের উপরে ছিল অপসারণ করে (সূরা আল আরাফ ৭:১৫৭)।
এমনিভাবে ঈসা আলাইহিস সালাম সম্পর্কে ইনজিলে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَا بَنِي إِسْرائيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ مُصَدِّقاً لِمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّراً بِرَسُولٍ يَأْتِي مِنْ بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ
‘হে বণী ইসরাঈল! নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট আল্লাহর রসূল। আমার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যায়নকারী এবং একজন রসূলের সুসংবাদদাতা যিনি আমার পরে আসবেন, যার নাম আহমদ’। অতঃপর সে যখন সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল, ‘এটাতো স্পষ্ট যাদু’ (সূরা ছবাফ ৬১:৬)।
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম, তার রিসালাত ও তার গুণাবলীর কথা তাওরাত ও ইনজিলে উল্লেখ আছে, এমনকি ইয়াহুদীরা তাদের সন্তানদের মতই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চিনলেও আল্লাহর কিতাব তাওরাতকে অস্বীকার করলো ও তাকে বর্জন করলো। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পরীক্ষায় ফেললেন এভাবে যে, তারা শয়তানের কর্ম যাদুর কিতাব গ্রহণ করলো।
তারা শয়তানের কর্ম দ্বারা বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহ তা‘আলার অহীর পরিবর্তন ঘটালো, যা তাদের শাস্তি হিসাবে নির্ধারিত। যারা হক্ব থেকে বিমুখ হয়, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বাতিলে নিমোজ্জিত করেন।
যারাই হক্ব পরিত্যাগ করে তাদেরকে বাতিলের পরীক্ষায় পড়তে হয়। আল্লাহর একত্ব ও একমাত্র আল্লাহর ইবাদাতের ব্যাপারে যারা রসূলগণের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে, তাদের জন্য স্পষ্ট বর্ণনা হলো তারা শিরক ও কুসংস্কারে লিপ্ত থাকার মাধ্যমে পরীক্ষায় পড়ে। আর শিরক ও কুসংস্কারের পক্ষে দলীল পেশ করে বাতিলকে হক্ব হিসাবে মানুষের মাঝে প্রচার করে।
কুসংস্কারে নিমোজ্জিত ও কবর পূজারী অনেক আলেম আল্লাহর একত্ব, আল্লাহর কিতাব ও রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতের দিকে দাওয়াতের পরিবর্তে বাতিলের দিকে আহবান করে এবং আল্লাহ, কবর পূজা এবং মৃতদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের দিকে মানুষকে দাওয়াত দেয়। তারা মানুষের মাঝে সন্দেহ সৃষ্টি করে এবং বাতিল কর্মে ব্যস্ত থাকে। এ থেকে আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।