নিচের প্রশ্নগুলোর ইসলামি জবাব প্রত্যাশা করছি।
- যে ব্যক্তি ব্যাংকে টাকা রেখেছে বছরান্তে সে কি এর লভ্যাংশ গ্রহণ করতে পারবে ?
- অতিরিক্ত লাভ দিয়ে নির্দিষ্ট মেয়াদের ওপর ঋণগ্রহীতার লভ্যাংশ ভোগ করে না ?
- যে ওইসব ব্যাংকে টাকা আমানত রাখে কিন্তু লভ্যাংশ ভোগ করে না ?
- ওই সব ব্যাংকে চাকুরীরত কর্মকর্তা চাই সে পরিচালক বা অন্য কেউ ?
- ওই ভূ-স্বামী যে এসব ব্যাংকে তার ভূমি লিজ দেয় ?
উত্তর: লাভের ওপর ব্যাংককে লাভের ওপর ঋণ বা আমানত দেয়া কোনোটাই জায়িয নেই। কারণ এ দুটোই সুস্পষ্ট সুদ। ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও লাভের ওপর অর্থ আমানত রাখা জায়িয নেই। এভাবে লাভের ওপর কাউকে কর্জ দেয়াও জায়িয নেই। কারণ এর সবই উলামায়ে কেরামের সর্ব সম্মতিক্রমে হারাম। ইরশাদ হয়েছে-‘আল্লাহ বেচাকেনা হালাল করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন।[1]
আরও ইরশাদ হয়েছে- আল্লাহ সুদকে মিটিয়ে দেন এবং সদাকাকে বাড়িয়ে দেন।[2] অন্যত্র ইরশাদ করেন- ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা অবশিষ্ট আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা মুমিন হও। কিন্তু যদি তোমরা তা না কর তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও, আর যদি তোমরা তাওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই থাকবে। তোমরা যুলম করবে না এবং তোমাদের যুলম করা হবে না।’[3] এসবের পর আল্লাহ তাআলা বলেন, আর যদি সে অসচ্ছল হয়, তাহলে সচ্ছলতা আসা পর্যন্ত তার অবকাশ রয়েছে।[4] এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তার বান্দাকে সতর্ক করে বলছেন, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির কাছে ঋণের বিনিময়ে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা বৈধ নয়। বরং কর্তব্য হলো বেচারাকে তার সুবিধামত ঋণ পরিশোধের অবকাশ দেয়া। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার ওপর বিশেষ দয়া ও অনুগ্রহ যাতে সে জুলুম ও নিপীড়ন থেকে বাচতে পারে।
তবে লভ্যাংশ ভোগ না করে শুধু আমানত রাখায় কোনো অসুবিধা নেই যতক্ষণ সুদী ব্যাংকের বিকল্প না পাওয়া যায়। আর সুদী ব্যাংকে চাকুরি করা চাই পরিচালক হিসেবে হোক আর হিসাব রক্ষক, রেজিস্ট্রার বা অন্য যে পদেই হোক বৈধ নয়। কারণ ইরশাদ হয়েছে- সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা কর। মন্দকর্ম ও সীমালঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা করো না।[5]
[2]. বাকারা : ২৭৬
[3]. বাকারা : ২৭৮
[4]. বাকারা : ২৮০
[5]. মায়িদা : ০২