আমরা দেখেছি যে, ইসলামের প্রথম দুটি ফিরকা- শীয়া ও খারিজী ফিরকা- উভয়ের উদ্ভব উন্মেষ ঘটেছিল রাজনৈতিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে। রাজনৈতিক বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিভক্তি ঘটে। শীয়াগণ দাবি করেন যে, ইমামাত একমাত্র ‘‘নিষ্পাপ’’ ব্যক্তির প্রাপ্য। এজন্য পাপীর ইমামত অবৈধ। পাপী ব্যক্তিকে অপসারণ করে সর্বোচ্চ মুত্তাকীকে- তাদের বিশ্বাসে তাদের ইমাম বা তাঁর মনোনীত ব্যক্তিকে- রাষ্ট্রীয় ইমামতে অধিষ্ঠিত করাকে তারা অন্যতম ফরয দায়িত্ব বলে গণ্য করেন।
খারিজীগণও এ বিষয়ে দুটি আকীদার উদ্ভাবন করে: (১) পাপী ব্যক্তির ইমামতের অবৈধতা এবং (২) পাপী ইমামের অপসারণের আবশ্যকতা। তাদের দাবি, পাপী ব্যক্তি কাফির, আর কাফির ব্যক্তি সালাতের বা রাষ্ট্রের ইমামতি করতে পারে না। বরং মুমিনের জন্য ফরয যে, এরূপ ইমামের বিরুদ্ধে সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধের অংশ হিসেবে বিদ্রোহ করবে এবং জিহাদ করে তাকে অপসারণ করবে।
এ কারণে শীয়াগণ ও খারিজীগণ সর্বদা বিদ্রোহ ও রাষ্ট্র পরিবর্তন প্রচেষ্টায় লিপ্ত থেকেছেন। তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ছাড়া সকল রাষ্ট্রকে তাগূতী ও অনৈসলামিক রাষ্ট্র বলে গণ্য করেন। এ সকল দেশে তারা সালাতুল জুমুআ আদায় করেন না। সুন্নী ইমামদের পিছনে জামা‘আত আদায় করেন না। এ ছাড়া এ সকল দেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বা গোপন যুদ্ধ করে তাদেরকে উৎখাত করে নিজ আকীদার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তারা সচেষ্ট থাকেন। শীয়াগণ সাধারণত গোপন প্রচার, ষড়যন্ত্র ইত্যাদির আশ্রয় গ্রহণ করতেন। পক্ষান্তরে খারিজীগণ সাধারণত সরাসরি বিদ্রোহ ও যুদ্ধে লিপ্ত হতেন। ইমাম আবূ হানীফা ও ইমাম তাহাবীর বক্তব্যের আলোকে আমরা এ বিষয়ে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা পর্যালোচনা করব, ইনশা আল্লাহ।