আল-ফিকহুল আকবর ইমাম আবূ হানীফা ও আল-ফিকহুল আকবার ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
১১. ২. ইবনুল মাদীনী: আলী ইবন আব্দুল্লাহ (১৬১-২৩৪হি)

তৃতীয় শতকের জারহ-তাদীলের অন্য দিকপাল ইমাম ইবনুল মাদীনী (রাহ)। আয্দী ও ইবন আব্দুল বার্র তাঁদের সনদে উদ্ধৃত করেছেন, ইবনুল মাদীনী বলেন:


أبو حنيفة روى عنه الثوري وابن المبارك وحماد بن زيد وهشيم ووكيع بن الجراح وعباد بن العوام وجعفر بن عون وهو ثقة لا بأس به.


‘‘আবূ হানীফা থেকে সুফইয়ান সাওরী, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারাক, হাম্মাদ ইবন যাইদ, হুশাইম, ওকী ইবনুল জার্রাহ, আববাদ ইবনুল আউয়াম, জাফর ইবন আউন প্রমুখ হাদীস শিক্ষা করেছেন। তিনি নির্ভরযোগ্য, তাঁর বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই।’’[1]

এখানে ইবনুল মাদীনী নিজে ইমাম আবূ হানীফাকে নির্ভরযোগ্য বলে উল্লেখ করা ছাড়াও অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন। তিনি যাদের নাম উল্লেখ করেছেন এরা সকলেই দ্বিতীয় হিজরী শতকের প্রসিদ্ধতম মুহাদ্দিস ও জারহ-তাদীলের ইমাম ছিলেন। বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য মুহাদ্দিস তাঁদের হাদীস গ্রহণ করেছেন। এরা সকলেই ইমাম আবূ হানীফা থেকে হাদীস শিখেছেন। এর অর্থ দ্বিতীয় শতকের মুহাদ্দিসগণ ইমাম আবূ হানীফাকে নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিস বলে গণ্য করতেন। আমরা দেখেছি যে, ইবন মায়ীনও এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছেন: ‘‘আবূ হানীফা থেকে অনেক নেককার মানুষ হাদীস শিক্ষা করেছেন।’’

অন্য বর্ণনায় ইবনুল মাদীনী ইমাম আবূ হানীফাকে দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন। খতীব বাগদাদী ইবনুল মাদীনীর ছেলে আব্দুল্লাহ থেকে উদ্ধৃত করেছেন:


سألته يعني أباه عن أبي حنيفة صاحب الرأي فضعفه جدا وقال ... وروى خمسين حديثا أخطأ فيها


আমি আমার পিতা ইবনুল মাদীনীকে ‘রায়’ বা ‘কিয়াসপন্থী’ আবূ হানীফা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তখন তিনি তাঁকে খুব দুর্বল বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন: তিনি ৫০টি হাদীস বর্ণনা করেছেন যেগুলোতে ভুল করেছেন।’’[2]

উভয় বক্তব্যের মধ্যে দূরত্ব স্পষ্ট। আমরা জানি না কোন্টি তাঁর সর্বশেষ বক্তব্য। তবে বাহ্যত ‘‘কিয়াসপন্থী’’ হওয়া তাঁর প্রতি মুহাদ্দিসদের বিরক্তির অন্যতম কারণ।


[1] ইবন আব্দুল বার্র, জামিউ বায়ানিল ইলম ২/২৯১-২৯২।

[2] খতীব বাগদাদী, তারীখ বাগদাদ ১৩/৪৫০।