হজ সফরে সহজ গাইড প্রারম্ভিকা ও প্রস্তুতি মুহাম্মাদ মোশফিকুর রহমান
বোর্ডিং পাস ও ইমিগ্রেশন
- হজ যাত্রার প্রস্থান প্রক্রিয়ার কাজ (বড় ব্যাগ জমা করণ, বোর্ডিং পাস ও ইমিগ্রেশন) ঢাকা হজ ক্যাম্প থেকে শুরু হতে পারে আবার বিমান বন্দর থেকেও শুরু হতে পারে, এটা নির্ভর করে বিমান কর্তৃপক্ষ ও সরকার এর সিদ্ধান্তের উপর। সাধারণত বাংলাদেশ বিমান এর প্রস্থান প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয় ঢাকা হজ ক্যাম্প থেকে এবং সৌদি এয়ারলাইনস-এর কাজ শুরু হয় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে।
- আপনি যদি ঢাকা শহরের মধ্য থেকে সরাসরি আসেন তবে আপনার হজ এজেন্সির সাথে কথা বলে জেনে নিন আপনার ফ্লাইট কোন এয়ারলাইনসে এবং আপনাকে প্রথমে কোথায় রিপোর্ট করতে হবে - ঢাকা হজ ক্যাম্প নাকি বিমান বন্দর। এখানে আমরা ধরে নিয়েছি আপনি প্রথমে ঢাকা হজ ক্যাম্পে এসেছেন কারণ বেশিরভাগ হজযাত্রী হজ ক্যাম্প হয়ে বিমানে উঠেন।
- যখন ফ্লাইটের সময় নিকটবর্তী হবে -সাধারণত ফ্লাইটের ৫/৬ ঘন্টা আগে হজ ক্যাম্পে ও বিমানবন্দরে বিমান শিডিউল এর ঘোষণা হবে তখন আপনি আপনার ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিয়ে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হন।
- আপনার হজ এজেন্সির পরিকল্পনা অনুসারে আপনি যদি প্রথমে মক্কায় যান তাহলে আপনার বাড়ি থেকে অথবা হজ ক্যাম্প অথবা বিমানবন্দর থেকেই শুধু ইহরামের কাপড় পরে নিবেন কিন্তু নিয়ত বাকি রাখবেন। তবে ইহরামের কাপড় আপনি বিমানের ভেতরেও পরতে পারবেন। পৃষ্ঠা নং .... থেকে আপনি ইহরামের তাৎপর্য ও বিধি-বিধান বিস্তারিত জানতে পারবেন।
- আপনি যদি প্রথমে মদীনায় যান তাহলে ইহরামের কাপড় পরিধান করার দরকার নেই। সাধারণ কাপড় পরিধান করে যাবেন। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ হজযাত্রী প্রথমে মক্কা যান ও উমরাহ পালন করেন তাই এখানে ধরে নিচ্ছি আপনি প্রথমে মক্কায় যাচ্ছেন।
- বিমানে ইহরামের কাপড় পরা দৃষ্টিকটু ও কঠিন কাজ। তাই বিমানে আরোহণের পূর্বেই ইহরামের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নিবেন মানে ইহরামের কাপড় পড়ে নিবেন। শুধুমাত্র নিয়তটা বাকি রাখবেন। ইহরাম করবেন বা নিয়ত করবেন যখন আপনি মিকাত এর কাছাকাছি পৌছাবেন। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মীকাতের কাছাকাছি পৌছানোর পূর্বে ইহরামের নিয়ত করেন নি।[1]
- হজ ক্যাম্পে অথবা বিমানবন্দরে আপনার দলনেতা বা আমীরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথমে লাইন ধরে বিমান টিকেট হাতে নিয়ে কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে ব্যাগ জমাকরণ কাউন্টারে আপনার বড় ব্যাগটি জমা দিয়ে দিন। এখানে আপনার বিমান টিকেট চেক করা হবে এবং আপনার লাগেজে স্টিকার লাগিয়ে বিমানের কার্গোতে জমা করা হবে। এখানে আপনাকে বোর্ডিং পাস দেওয়া হবে। যত্নসহকারে বোর্ডিং পাসটি সংরক্ষণ করুন।
এরপর ইমিগ্রেশন অফিসের দিকে অগ্রসর হউন এবং লাইনে দাঁড়ান। ইমিগ্রেশন অফিসার আপনার পাসপোর্ট চেক করবেন এবং সিল দিবেন, তিনি আপনাকে কিছু প্রশ্ন করতে পারেন, আপনার অফিস অনাপত্তিপত্র (NOC) দেখতে পারেন। ইমিগ্রেশন-এর কাজ শেষ হলে হজযাত্রী অপেক্ষা কক্ষে গিয়ে বসুন। মনে মনে দো‘আ ও যিকির করুন। এরপর হজ ক্যাম্পে হজযাত্রী পরিবহন বাস এসে হাজীদের বিমানবন্দর নিয়ে যাবে।
[1] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১২১৮