হজ সফরে সহজ গাইড প্রারম্ভিকা ও প্রস্তুতি মুহাম্মাদ মোশফিকুর রহমান
হজের জন্য নিজকে প্রস্তুত করুন
- প্রথমেই ঈমানকে নবায়ন ও আকীদাকে শুদ্ধ করুন। যত দ্রুত সম্ভব সুস্থ ও বলিষ্ঠ থাকা অবস্থায় হজ পালন করুন, হজ পালনে বিলম্ব করা উচিৎ নয়।
- অন্তরের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করুন, কারণ ‘‘নিয়তের ওপর আমল নির্ভরশীল’’। সকল প্রকার শির্ক ও বিদ‘আত সম্পর্কে জানুন ও তা থেকে মুক্ত হয়ে চলুন।
- হজের যাত্রা জীবনে একবারই মনে করুন। সুতরাং এ যাত্রাকে নিজের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তনে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
- সুখ্যাতি, ব্যবসা, ভ্রমণ বা শুধু মাহরাম হওয়ার উদ্দেশ্যে হজ করবেন না।
- আন্তরিকভাবে অতীতের সকল পাপের জন্য আল্লাহর কাছে তাওবা করুন ও ক্ষমা চান এবং ভবিষ্যতে পাপ কাজ না করার দৃঢ় সংকল্প নিন।
- দেনমাহরসহ আপনার অন্যান্য সকল পাওনা ও ক্ষতিপুরণ পরিশোধ করুন।
- আপনার হজের জন্য অর্থ সংগ্রহ করুন এবং নিশ্চিত করুন তা হালাল পথে উপার্জিত হয়েছে। অবৈধ বা সুদ মিশ্রিত টাকা হজ কবুল হওয়ার অন্তরায়।
- ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে এমন গুরুত্বপূর্ণ অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করুন।
- বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতজনদের কাছে মিথ্যা বলা, খারাপ আচরণ, হক নষ্ট করা ও তাদের কষ্ট দেওয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিন।
- এটিই আপনার জীবনের সর্বশেষ যাত্রা হতে পারে, সুতরাং আপনার পরিবারের জন্য একটি উইল বা অসীয়তনামা করে রেখে যান।
- হজ ও উমরাহ সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য ও সহীহ বই থেকে জানুন এবং হজের কিছু দো‘আ মুখস্থ করুন।
- আগে হজ করেছেন এমন ব্যক্তির কাছ থেকে হজ সম্পর্কে জানুন।
- নিজেকে শারীরিকভাবে সুস্থ রাখুন। (পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে গিয়ে আদায় করুন, বেশি বেশি হাটাহাটি করুন, ব্যায়াম করুন ও নিয়মিত চিকিৎসা নিন)
- মানসিকভাবে প্রস্তুত হোন। (ধৈর্যশীল হতে শিখুন, নিজেকে মানিয়ে নিতে, রাগকে দমন করতে ও ত্যাগ শিকার করতে শিখুন)
- আপনার মাঝে পরিবর্তন আনুন -আপনার মুখ, চোখ, হাত, পা ও কান নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করুন। নিজকে সংযত করুন।
- ধার্মিক, সহায়ক ও বিশ্বস্ত এরকম ২/১ জনকে সঙ্গী হিসেবে হজ যাত্রার জন্য খুঁজে নিন এবং তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখুন।
- সম্ভব হলে দরকারী কিছু ইংরেজী, আরবী ও হিন্দি শব্দের অর্থ শিখে নিন।
- আপনার হজের যাত্রার পরিকল্পনা করুন, প্রথমে মক্কা না মদীনা গেলে উত্তম হয় -তা ভেবে দেখুন।
- দাঁড়ি রেখে দেওয়ার ব্যাপারে ভাবুন; কারণ তা রাখা ওয়াজিব, কাটা হরাম, দাঁড়ি না রাখলে কবিরা গুনাহ হয় এবং ধুমপান, জর্দা ও গুল-এর মতো হারাম অভ্যাসগুলো পরিহার করুন।
- সদা আল্লাহর যিকিরের মাধ্যমে আন্তরকে আন্দোলিত রাখার অভ্যাস করুন।
- হজ সফরে আবেগ তাড়িত হয়ে কোনো কিছু না করার বিষয়ে সজাগ থাকুন।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো হজে যাওয়ার পূর্বে আপনার মনে তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহভীতি ও ধর্মনিষ্ঠা আনতে হবে। আপনার তাকওয়াকে জাগ্রত করুন।