ওই সময় বনু আজলান গোত্রের সাবেত বিন আকরাম নামক এক সাহাবী লাফ দিয়ে ঝান্ডা উঁচিয়ে ধরে বললেন, ‘হে মুসলিম ভ্রাতাগণ! আমাদের মধ্য হতে কোন এক জনকে সেনাপতি নির্বাচিত করে নাও।’ সাহাবীগণ (রাঃ) বললেন, ‘আপনি এ দায়িত্ব পালন করুন।’
এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘এ দায়িত্ব পালন করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’ এ প্রেক্ষিতে সাহাবীগণ (রাঃ) খালিদ বিন ওয়ালীদকে সেনাপতি মনোনীত করেন। সেনাপতির দায়িত্ব ভার গ্রহণের পর ঝান্ডা হাতে নিয়ে তিনি অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাকেন। সহীহুল বুখারীতে খালিদ বিন ওয়ালীদ নিজেই বর্ণনা করেছেন যে, ‘মুতাহ যুদ্ধের দিন আমার হাতে ৯টি তলোয়ার ভেঙ্গেছিল এবং ইয়ামানের তৈরি মাত্র একটি ছোট তলোয়ার হাতে অবশিষ্ট ছিল।[1] অন্য এক বর্ণনায় তাঁর বিবরণটি এভাবে রয়েছে যে, ‘মুতাহ যুদ্ধের দিন আমার হাতে ৯ খানা তরবারী ভেঙ্গে যায় এবং মাত্র এক খানা ইয়েমেনী তরবারী অবশিষ্ট থাকে।[2]
এদিকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুদ্ধের ময়দান থেকে কোন খবর না পেয়ে অত্যন্ত চিন্তাযুক্ত ছিলেন। এমন সময় ওহীর মাধ্যমে তাঁকে খবর দেওয়া হয় যে,
(أَخَذَ الرَّايَةَ زَيْدٌ فَأُصِيْبَ، ثُمَّ أَخَذَ جَعْفَرُ فَأُصِيْبَ، ثُمَّ أَخَذَ ابْنُ رَوَاحَةَ فَأُصِيْبَ - حَتّٰى أَخَذَ الرَّايَةَ سَيْفٌ مِّنْ سُيُوْفِ اللهِ، حَتّٰى فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِمْ).
পতাকা হাতে যুদ্ধ করতে গিয়ে যায়দ (রাঃ) শহীদ হয়েছেন। অতঃপর জা’ফার (রাঃ) পতাকা হাতে নিয়ে যুদ্ধ করতে থাকেন এবং তিনিও শহীদ হয়ে যান। তাঁর শাহাদত বরণের পর আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহ পতাকা হাতে নিয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে শহীদ হয়ে যান।
এ সংবাদ অবগত হয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর চক্ষুযুগল অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।
অতঃপর আল্লাহ তা‘আলার তলোয়ারসমূহের মধ্য হতে এক তলোয়ার পতাকা হাতে নিয়ে অমিত বিক্রমে এমন ভাবে যুদ্ধ করতে থাকেন যে, আল্লাহ মুসলিমগণকে বিজয়ী করেন।[3]
[2] সহীহুল বুখারী শাম রাজ্যে মুতাহ যুদ্ধ সম্পর্কিত অধ্যায় ২য় খন্ড ৬১১ পৃঃ।
[3] সহীহুল বুখারী শাম রাজ্যে মুতাহ যুদ্ধ সম্পর্কিত অধ্যায় ২য় খন্ড ৬১১ পৃঃ।