এক মহিলার স্বামী আমার কাছে এসে বলল যে তার স্ত্রী তাকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে এবং তার সাথে থাকতে চায় না অথচ সে তাকে খুব ভালোবাসে। আর বিষয়টি হঠাৎ এমন হয়েছে। আমি সেই মহিলাকে কুরআনের কিছু আয়াত শুনালাম যার ফলে সে বেহুশ হয়ে পড়ল। আর সাথে সাথে তার সাথে কথোপকথন শুরু হল । আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম তুমি মুসলমান?
জ্বিন উত্তর দিলঃ হ্যাঁ আমি মুসলমান।
আমি বললামঃ তাহলে তুমি এই মহিলাকে ধরেছ কেন?
জ্বিন উত্তর দিল যে, আমাকে যাদুর মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়েছে। অমুক মহিলা এই মহিলাকে যাদু করেছে। আর যাদু করে এক আতরের শিশিতে রেখে দিয়েছিল যা এই মহিলার কাছে রয়েছে। আমি এই মহিলার পিছে লেগেছিলাম অনেক দিন থেকে। এরই মধ্যে তার ঘরে এক চোর আসল আর সে ভীত হয়ে গেল। অতঃপর আমি তাকে আয়ত্বে নিয়ে নিলাম। এখানে একটি বিষয় স্পষ্ট করছি, যাদুকর জ্বিন প্রেরণ করে সেই ব্যক্তির কাছে যাকে যাদু করতে চায়। জ্বিন সেই ব্যক্তির পিছু করতে থাকে, আর যখন সে সুযোগ পেয়ে যায় সে ব্যক্তির ভিতরে প্রবেশ করে। চারটি এমন সুযোগ যে সুযোগে জ্বিন মানুষের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। (১) খুব বেশি ভীত হলে। (২) অতিমাত্রায় রাগাম্বিত হলে। (৩) অতিমাত্রায় উদাসীন অবস্থায়। (৪) মানুষ যখন প্রবৃত্তির দাসে পরিণত হয়।
মানুষ যদি এই চার অবস্থার একটিতে থাকে শয়তান তার ভেতর প্রবেশ করে। হ্যাঁ! তবে যদি সে তখন ওযু অবস্থায় থাকে বা দু'আ যিকির করে থাকে কোন জ্বিন তার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। (বলা হয় যেমন অনেক জ্বিন আমাকে বলেছে তা সত্যও হতে পারে।) যদি জ্বিন প্রবেশ করার সময় আল্লাহ তায়ালার যিকির (দু’আ পড়া) সেই ব্যক্তি করে তবে জ্বিন জ্বলে যায়। এজন্য জ্বিনের প্রবেশকালীন সময়টি খুব কঠিন মুহূর্ত এ জিনের সমস্ত জীবনের মধ্যে।
জ্বিন বলল যে, এই মহিলা খুবই ভাল। আমি বললাম যে তুমি এই মহিলাকে ছেড়ে চলে যাও। জ্বিন বলল শর্ত হল যে, তার স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিলে আমি চলে যাব। আমি বললাম তোমার শর্ত গ্রহণীয় নয়। তুমি এখনি এই মহিলা থেকে বের হয়ে যাও নতুবা আমি তোমাকে শায়েস্তা করব। জিন বললঃ ঠিক আছে আমি এখন বের হয়ে যাব।
আলহামদুলিল্লাহ জ্বিন বের হয়ে চলে গেল। এরপর আমি তার স্বামীকে বললাম যে, তোমার স্ত্রীকে কেউ যাদু করেনি। জিন অনেক বেশী মিথ্যা বলে থাকে যাতে মানুষের মধ্যে শক্রতা ও বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় কর আর জ্বিনের কথা বিশ্বাস করো না।