‘কাতীবাহ’ অঞ্চলের বিখ্যাত ‘ক্বামূছ’(حِصْن الْقَمُوص) দুর্গের অধিপতি মদীনা হ’তে ইতিপূর্বে বিতাড়িত বনু নাযীর গোত্রের নেতা আবুল হুক্বাইক্ব-এর দুই ছেলে সন্ধির বিষয়ে আলোচনার জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর নিকটে আসেন। আলোচনায় স্থির হয় যে, দুর্গের মধ্যে যারা আছে, তাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়া হবে। তাদের সোনা-রূপাসহ অন্যান্য সকল সম্পদ মুসলিম বাহিনীর অধিকারভুক্ত হবে। ইহূদীরা সপরিবারে দুর্গ ত্যাগ করে চলে যাবে। সুনানে আবুদাঊদের বর্ণনায় এসেছে যে, নিজ নিজ বাহনের উপরে যতটুকু মালামাল নেওয়া সম্ভব ততটুক নেওয়ার অনুমতি তাদেরকে দেওয়া হয়। কেউ কিছু লুকালে সে ব্যাপারে কোন দায়িত্ব বা কোন চুক্তি থাকবে না। কিন্তু আবুল হুক্বাইক্বের ছেলেরা সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ করে অনেক মাল লুকিয়ে ফেলে। জিজ্ঞেস করা হ’ল أَيْنَ مَسْكُ حُيَىِّ بْنِ أَخْطَبَ؟ ‘হুয়াই বিন আখত্বাব-এর মশকটি কোথায়? ইতিপূর্বে মদীনা থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার সময় হুয়াই বিন আখত্বাব চামড়ার মশক ভরে যে সোনা-দানা ও অলংকারাদি নিয়ে এসেছিল, সেই মশকটার কথা এখানে বলা হয়েছে। এতদ্ব্যতীত কেনানা বিন আবুল হুক্বাইক্বের নিকটে বনু নাযীরের যে মূল্যবান সম্পদরাজি গচ্ছিত ছিল, সেগুলি সে জনশূন্য একটি স্থানে মাটির নীচে পুঁতে রেখেছিল। জিজ্ঞেস করা হ’লে তারা বলল যে, যুদ্ধ ও অন্যান্য কাজে খরচ হয়ে গেছে। অতঃপর সেগুলি পাওয়া গেল। তখন সন্ধি ভঙ্গের অপরাধে ইবনু আবিল হুক্বাইক্বকে হত্যা করা হ’ল এবং তার পরিবার ও অন্যান্যদের বন্দী করা হ’ল। অতঃপর তাদের সবাইকে খায়বর থেকে বিতাড়িত করতে চাইলে তারা অর্ধেক ফসল দানের বিনিময়ে সন্ধিচুক্তি করে...।[1]
প্রসিদ্ধ আছে যে, কেনানা বিন আবুল হুক্বাইক্বকে জিজ্ঞেস করা হ’লে সে উক্ত বিষয়ে অজ্ঞতা প্রকাশ করে। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কেনানাকে বললেন, أَرَأَيْتُ إنْ وَجَدْنَاهُ عِنْدَكَ، أَأَقْتُلُكَ؟ قَالَ: نَعَمْ ‘উক্ত সম্পদ যদি আমরা তোমার নিকট থেকে বের করতে পারি, তাহ’লে তোমাকে হত্যা করব কি? সে বলল, হ্যাঁ। ইতিমধ্যে কেনানাহর জনৈক চাচাতো ভাই স্থানটির সন্ধান দেয় এবং গচ্ছিত মালের কিছু অংশ পাওয়া যায়। অতঃপর বাকী মালামাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সে আগের মতই অজ্ঞতার ভান করে। তখন তাকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত যুবায়ের (রাঃ)-এর হাতে সমর্পণ করে বলেন, عَذِّبْهُ حَتَّى تَسْتَأْصِلَ مَا عِنْدَهُ ‘একে শাস্তি দিতে থাক, যতক্ষণ না তার নিকটে যা আছে, তা সব বের করে নিতে পার’। হযরত যুবায়ের (রাঃ) তার বুকে চকমকি পাথর দিয়ে আঘাত করতে থাকেন (يَقْدَحُ بِزَنْدٍ فِي صَدْرِهِ)। তাতে সে মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে যায় (حَتَّى أَشْرَفَ عَلَى نَفْسِهِ)। অতঃপর তাকে মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহর হাতে অর্পণ করা হ’ল। তিনি তাকে তার ভাই মাহমূদ বিন মাসলামাহকে হত্যার বদলা স্বরূপ হত্যা করেন’ (ইবনু হিশাম ২/৩৩৭; আর-রাহীক্ব ৩৭৪ পৃঃ)। বর্ণনাটির সনদ মু‘যাল বা যঈফ (আর-রাহীক্ব, তা‘লীক্ব ১৬৬ পৃঃ)।