১। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন,
وَاحْفَظُوا أَيْمَانَكُمْ (المائدة: ৮৯)
‘‘তোমাদের শপথসমূহকে তোমরা হেফাজত করো’’। (মায়েদা : ৮৯)
২। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একথা বলতে শুনেছি,
الحلف منفقة للسلعة، ممحقة للكسب. (أخرجاه)
‘‘[অধিক] শপথ, সম্পদ বিনষ্ট কারী এবং উর্পন ধ্বংশ কারী।’’ (বুখারি ও মুসলিম)
৩। সালমান রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
ثلاثة لا يكلمهم الله ولا يزكيهم ولهم عذاب أليم: اشيمط زان، وعائل مستكبر، ورجل جعل الله بضاعته. لايشترى إلا بيمينه، ولا يبيع إلا بيمينه. (رواه الطبرانى بسند صحيح)
‘‘তিন শ্রেণীর লোকদের সাথে আল্লাহ তাআলা [কেয়ামতের দিন] কথা বলবেন না, তাদেরকে [গুনাহ মাফের মাধ্যমে] পবিত্র করবেন না, বরং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। তারা হচ্ছে, বৃদ্ধ জিনাকারী, অহংকারী গরীব, আর যে ব্যক্তি তার ব্যবসায়ী পণ্যকে খোদা বানিয়েছে অর্থাৎ কসম করা ব্যতী সে পণ্য ক্রয়ও করে না, কসম করা ব্যতীত পণ্য বিক্রয়ও করেনা।’’ (তাবরানী)
৩। ইমরান বিন হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন,
خير أمتى قرنى، ثم الذين يلونهم، ثم الذين يلونهم قال عمران: فلا ادرى أذكر بعد مرتين او ثلاثا؟ ثم أن بعد كم قوم يشهدون ولا يستشهدون ويخونون ولا يؤمنون، وينذرون ولا يوفون، ويظهر منهم السمن.
‘‘আমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম হচ্ছে আমার যুগ, তারপর উত্তম হচ্ছে তাদের পরবর্তীতে যারা আসবে তারা। তারপর উত্তম হচ্ছে তাদের পরবর্তীতে যারা আসবে তারা’’। ইমরান বলেন, ‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর পরে দু’যুগের কথা বলেছেন নাকি তিন যুগের কথা বলেছেন তা আমি বলতে পারছিনা। অতঃপর তিনি [রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, ‘তোমাদের পরে এমন কওম আসবে যারা সাক্ষ্য দিবে, কিন্তু তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ যোগ্য হবে না। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আমানত রক্ষা করবে না। তারা মান্নত করবে, কিন্তু তা পূর্ণ করবে না। আর তাদের শরীরে চর্বি দেখা দিবে।’’ (বুখারি)
৪। ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্নিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এরশাদ করেছেন,
خير الناس قرنى ثم الذين يلونهم ثم يجيئ قوم تسبق شهادة أحدهم يمينه ويمينه شهادة.
‘‘সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে আমার যুগের মানুষ। এরপর উত্তম হলো এর পরবর্তীতে আগমনকারী লোকেরা। তারপর উত্তম হলো যারা তাদের পরবর্তীতে আসবে তারা। অতঃপর এমন এক জাতির আগমন ঘটবে যাদের কারো সাক্ষ্য কসমের আগেই হয়ে যাবে, আবার কসম সাক্ষ্যের আগেই হয়ে যাবে।’’ [অর্থাৎ কসম ও সাক্ষের মধ্যে কোন মিল থাকবে না। কসম ও সাক্ষ্য উভয়টাই মিথ্যা হবে।]
ইবরাহীম নখয়ী বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন মিথ্যা সাক্ষ্যের জন্য আমাদের অভিভাবকগণ শাস্তি দিতেন।
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়
১। ঈমান রক্ষা করার জন্য উপদেশ দান।
২। মিথ্যা কসম বানিজ্যিক পণ্যের ক্ষতি টেনে আনে, কামাই রোজগারের বরকত নষ্ট করে।
৩। যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম ছাড়া ক্রয় বিক্রয় করেনা তার প্রতি কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ।
৪। স্বল্প কারণেও গুনাহ বিরাট আকার ধারণ করতে পারে, এ ব্যাপারে হুশিয়ারী উচ্চারণ।
৫। বিনা প্রয়োজনে কসম কারীদের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন।
৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক তিন অথবা চার যুগ বা কালের লোকদের প্রশংসা জ্ঞাপন এবং এর পরবর্তীতে যা ঘটবে তার উল্লেখ।
৭। মিথ্যা সাক্ষ্য ও ওয়াদার জন্য সালাফে সালেহীন কর্তৃক ছোটদেরকে শাস্তি প্রদান।