১। সাহাবী জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নাশরাহ বা প্রতিরোধমূলক যাদু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বললেন,
هى من عمل الشيطان. (رواه أحمد و أبوداود)
‘‘এটা হচ্ছে শয়তানের কাজ’’ (আহমাদ, আবু দাউদ)
আবু দাউদ বলেন, ইমাম আহমাদ (রহ:)-কে নাশরাহ [প্রতিরোধমূলক যাদু] সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘ইবনে মাসউদ (রাঃ) এর [নাশরাহর] সব কিছুই অপছন্দ করতেন।’’
সহীহ বুখারীতে কাতাদাহ (রাঃ) হ'তে বর্ণিত আছে, আমি ইবনুল মুসাইয়্যিবকে বললাম, ‘‘একজন মানুষের অসুখ হয়েছে অথবা তাকে তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, এমতাবস্থায় তার এ সমস্যার সমধান করা কিংবা প্রতিরোধমূলক যাদু [নাশরাহ] এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা যাবে কি? তিনি বললেন, ‘এতে কোন দোষ নেই।’ কারণ তারা এর [নাশরাহ] দ্বারা সংশোধন ও কল্যাণ সাধন করতে চায়। যা দ্বারা মানুষের কল্যাণ ও উপকার সাধিত হয় তা নিষিদ্ধ নয়।’’
হাসান (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে তিনি বলেন,
لا يحل السحر إلا الساحر ‘‘একমাত্র যাদুকর ছাড়া অন্য কেউ যাদুকে হালাল মনে করে না।’’
ইবনুল কাইয়্যিম বলেন, النشرة حل السحر عن المسحور
‘নাশারাহ’ হচ্ছে যাদুকৃত ব্যক্তি বা বস্ত্তর উপর থেকে যাদুর প্রভাব দূর করা।
নাশরাহ দু’ধরনের :
প্রথমটি হচ্ছে, যাদুকৃত ব্যক্তি বা বস্ত্তর উপর হতে যাদুর ক্রিয়া নষ্ট করার জন্য অনুরূপ যাদু দ্বারা চিকিৎসা করা। আর এটাই হচ্ছে শয়তানের কাজ। হাসান বসরী (রহ:) এর বক্তব্য দ্বারা এ কথাই বুঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নাশের [যাদুর চিকিৎসক] ও মুনতাশার [যাদুকৃত রোগী] উভয়ই শয়তানের পছন্দনীয় কাজের মাধ্যমে শয়তানের নিকটবর্তী হয়। যার ফলে শয়তান যাদুকৃত রোগীর উপর থেকে তার প্রভাব মিটিয়ে দেয়।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ঝাড়-ফুঁক, বিভিন্ন ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ,ঔষধ-পত্র প্রয়োগ ও শরীয়ত সম্মত দোয়া ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা এ ধরনের চিকিৎসা জায়েয।
এ অধ্যায় থেকে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানা যায়ঃ
১। নাশরাহ (প্রতিরোধমূলক যাদু) এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
২। নিষিদ্ধ বস্ত্ত ও অনুমতি প্রাপ্ত বস্ত্তর মধ্যে পার্থক্য করণ, যাতে সন্দেহ মুক্ত হওয়া যায়।