মুখতাসার যাদুল মা‘আদ অনুচ্ছেদ সমুহের সূচী ও বিবরন ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)
নাবী (সাঃ) কয়েক পদ্ধতিতে বিতর সলাত পড়তেন
- রাতের সলাত তিনি আট রাকআত পড়তেন। প্রত্যেক দুই রাকআতের পর সালাম ফেরাতেন। অতঃপর একটানে পাঁচ রাকআত বিতর পড়তেন। শেষ রাকআতের আগে তিনি তাশাহুদের জন্য বসতেন না।
- তিনি কখনও একাধারে নয় রাকআত সলাত পড়তেন। শুধু অষ্টম রাকআতে বসতেন। বসে তিনি আল্লাহর যিকির করতেন, তাঁর প্রশংসা করতেন এবং দু’আ করতেন। অতঃপর সালাম না ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে যেতেন। তারপর নবম রাকআত পড়ে বসতেন, তাশাহুদ পাঠ করতেন এবং সালাম ফিরাতেন। সালাম ফিরানোর পর আরও দুই রাকআত সলাত পড়তেন।
- উপরোক্ত নয় রাকআতের নিয়মে তিনি সাত রাকআতও পড়তেন। অতঃপর বসে দুই রাকআত সলাত আদায় করতেন।
- তিনি দু’দু রাকআত করে সলাত পড়তেন। অতঃপর তিন রাকআত বিতর পড়তেন। এতে তাশাহুদ পাঠ বা বসার মাধ্যমে পার্থক্য করতেন না। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে এটিই বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন- নাবী (ﷺ) তিন রাকআত বিতর পড়তেন। মাঝখানে কোন বিরতি নেন নি। তবে এই বর্ণনার ব্যাপারে আপত্তি রয়েছে। কেননা সহীহ ইবনে হিববানে আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে মারফু হিসাবে বর্ণিত হয়েছে যে, নাবী (ﷺ) বলেছেন- তোমরা তিন রাকআত বিতর পড়বেনা। পাঁচ অথবা সাত রাকআত পড়। আর ولا تشبهوا بصلاة المغرب অর্থাৎ বিতরকে মাগরিবের মত করে আদায় করোনা। ইমাম দারকুতনী (রহঃ) বলেন- এই হাদীছের সকল বর্ণনাকারীই সিকাহ তথা নির্ভরযোগ্য। হারব বলেন- ইমাম আহমাদকে বিতর সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন- দুই রাকআত পড়ে সালাম ফিরাবে। সালাম না ফিরালেও আমার মতে কোন অসুবিধা নেই। তবে নাবী (ﷺ) থেকে সালাম ফিরানোর বর্ণনাই অধিক বিশুদ্ধ বলে প্রমাণিত। আবু তালেব থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, এক রাকআত বিতর পড়ার ব্যাপারেই অধিকাংশ এবং অধিক শক্তিশালী হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) বলেন- আমিও এই মতের পক্ষপাতী।
- বিতর সলাতের আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে যা ইমাম নাসাঈ (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন যে, তিনি নাবী (ﷺ) এর সাথে রামাযানের সলাত পড়েছেন। তিনি রুকুতে ঠিক সেই পরিমাণ সময় অবস্থান করেছেন, যে পরিমাণ সময় তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং তাতে এই দু’আ পড়েছেনঃ سُبْحَانَ رَبِّىَ الْعَظِيمِ। এই হাদীছে রয়েছে যে, তিনি চার রাকআত সলাত পড়ে শেষ করতেই বিলাল তাঁকে ফজরের সলাত পড়ার জন্য ডাকতে আসলেন।