ফাত্ওয়া নং - 22938
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
রমযান মাসে দিনের বেলায় যে যৌনমিলন করে সে মুকিম তথা অবস্থানকারী রোযাদার হলে তার উপর বড়-কাফফারাহ (আল কাফফারাতুল মুগাল্লাযাহ) ওয়াজিব হয়, আর তা হল একজন দাস মুক্ত করা, যদি তা না পায় তাহলে দুইমাস পরপর একাধারে সিয়াম পালন করা, আর যদি তাও না পারে তবে ৬০ জন মিসকীনকে খাওয়ানো।
একজন নারীর ব্যাপারেও তা ওয়াজিব হয় যদি সে রাজী থাকে। আর যদি সে এ ব্যাপারে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাধ্য হয়, তাহলে তার উপর কিছু ওয়াজিব হয় না।
আর তারা যদি উভয়েই মুসাফির হয়, তবে তাদের কোনো গুনাহ হয় না, তাদের উপর কোনো কাফফারাহও ওয়াজিব হয় না এবং দিনের বাকি অংশ তাদের পানাহার এবং যৌনমিলন থেকে বিরত থাকতে হবে না, বরং তাদের উভয়কেই ঐদিনের সাওম কাযা করতে হবে। তাদের উভয়ের জন্য এক্ষেত্রে (মুসাফির অবস্থায়) সাওম পালন করা বাধ্যতামূলক নয়।
একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো প্রয়োজনে সাওম ভঙ্গ করেছে, যেমন-শারী‘আত সম্মতভাবে যার জানমাল নিরাপদ এমন কাউকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, এমন ব্যক্তি যদি সেই দিন যৌনমিলন করে, যেই দিনে প্রয়োজন বশত: সাওম ভঙ্গ করেছিল তবে তার উপর কিছু ওয়াজিব হয় না, কারণ, এক্ষেত্রে সে কোনো ওয়াজিব সাওম ভঙ্গ করে নি।
মুকিম তথা অবস্থানকারী রোযাদার যদি যৌনমিলন করে যার উপর সাওম বাধ্যতামূলক, তার উপর পাঁচটি জিনিস বর্তায়:
১। পাপ
২। সেই দিনের সাওম ফাসিদ (বিনষ্ট) হওয়া
৩। সেই দিনের বাকি অংশ পানাহার ও যৌনমিলন থেকে বিরত থাকা।
৪। সেই দিনের কাযা ওয়াজিব হওয়া।
৫। (বড়) কাফফারাহ আদায় ওয়াজিব হওয়া।
আর কাফফারাহ আদায় করার দলীল হল সেই হাদীসটি যা আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রমযানের দিনের বেলায় তাঁর স্ত্রীর সাথে যৌন মিলন করেছিলেন। আর এই ব্যক্তি একাধারে দুইমাস সাওম পালন করতে বা ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াতে অক্ষম ছিলেন, এক্ষেত্রে তাঁর কাফফারাহ ওয়াজিব হয় নি, কারণ, আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা দেন না [আল-বাকারাহ : ১৮৬] আর অপারগতার ক্ষেত্রে কোনো ওয়াজিব নেই।
আর মুকিম (অবস্থানকারী) কোনো রোযাদার যদি রমযান মাসের দিনের বেলায় স্ত্রীর সাথে যৌনমিলন করে- বীর্য নির্গত করুক বা নাই করুক- তার উপর বড় কাফফারাহ ওয়াজিব হয়।
তবে যৌনমিলন ছাড়া বীর্য নির্গত করার ব্যাপারে মতভেদ আছে। এক্ষেত্রে তাকে কাফফারাহ আদায় করতে হবে না বরং তার গুনাহ হবে, তাকে (দিনের বাকি অংশ) যৌনমিলন ও পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কাযা করতে হবে।
আল-ফাত্ওয়া আল-জামি‘আহ লিল-মার’আহ আল-মুসলিমাহ (খন্ড-১, পৃঃ ৩৪৮)