সুফীও সুফিবাদের প্রভাবিত ব্যক্তিগণ অলী-আওলীয়া ও তরীকার মাশায়েখদের কবর পাকা করা, কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ, তাতে বাতি জ্বালানো, কবর ও মাযার যিয়ারত করার উপর বিশেষ গুরত্ব প্রদান করে থাকে। এমন কি সুফীরা বেশ কিছু মাজারের চার পাশে তাওয়াফও করে থাকে মিশরে সায়্যেদ বদভীর কবরের চতুর্দিকে সুফীরা কাবা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় তাওয়াফ করে থাকে। ভারতের আজমীরে তথাকথিত খাজা মইনুদ্দ্বীন চিশতীর কবরেও এহেন তাওয়াফ করে থাকে চিশতীয়া তরীকার অনুসারীরা। অথচ সকল মুসলিমের কাছে অতি সুস্পষ্ট যে তাওয়াফ এমন একটি এবাদত, যা কাবা ঘরের চতুর পার্শ্বে এবং একমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হবে। সুতরাং কোন কবরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করা বড় শির্ক, যা ইসলাম থেকে বের করে দেয়। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَلْيَطَّوَّفُوا بِالْبَيْتِ الْعَتِيقِ
এবং তারা যেন এই সুসংরক্ষিত (পবিত্র) গৃহের তওয়াফ করে। (সূরা হাজ্জঃ ২৯) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কবর নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে উম্মাতকে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেনঃ
اللَّهُمَّ لَا تَجْعَلْ قَبْرِي وَثَنًا يُعْبَدُ اشْتَدَّ غَضَبُ اللَّهِ عَلَى قَوْمٍ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
হে আল্লাহ্! আমার কবরকে পূজার স্থানে পরিণত করো না, যাতে এর ইবাদত করা হয়। আল্লাহ্ অভিশাপ করেছেন ঐ জাতিকে যারা তাদের নবীদের কবর সমূহকে কেন্দ্র করে মসজিদ তৈরী করেছে।’’ (মুসনাদে আহমাদ) আবু হুরায়রা (রাঃ) এর সূত্রে বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ
لَعَنَ اللَّهُ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ
ইহুদী খৃষ্টানদের প্রতি আল্লাহর লানত। কারণ তারা তাদের নবীদের কবরগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করেছে।’’
আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবুল হায়্যায আল আসাদীকে বলেন, আমি কি তোমাকে এমন আদেশ দিয়ে প্রেরণ করব না, যা দিয়ে নবী (ﷺ) আমাকে প্রেরণ করেছিলেন?
أَنْ لَا تَدَعَ تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَهُ وَلَا قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَهُ
কোন মূর্তি পেলেই তা ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলবে। আর কোন কবর উঁচু পেলেই তা ভেঙ্গে মাটি বরাবর করে দিবে।’’ (মুসলিম)
এমনিভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষেধ করেছেন, কবর পাকা করতে, চুনকাম করতে, তার উপর বসতে, কবরে লিখতে। আর তিনি অভিশাপ করেছেন ঐ সমস্ত ব্যক্তিদেরকে যারা কবরকে মসজিদ বানায় এবং সেখানে বাতি জ্বালায়। (মুসলিম) সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন (রাঃ)এর যুগে ইসলামী শহর সমূহে কোন কবর পাকা করা বা কবরের উপর গম্বুজ নির্মাণ করা হয় নি। না নবী (ﷺ) এর কবরে না অন্য কারও কবরে। এরপরও কি আমাদের সমাজের বিপথগামী লোকদের হুশ হবে না?