আমাদেরকে বিশ্বাস করতে হবে, সবকিছু সম্পর্কে আল্লাহ্র চিরন্তন জ্ঞান অনুযায়ী তিনি সেগুলি লাউহে মাহফূযে লিখে রেখেছেন এবং সেগুলিতে তাঁর ইচ্ছাও রয়েছে। আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তা হয়। যা ইচ্ছা করেন না, তা হয় না। আল্লাহ্র রাজ্যে এমনকি কোন কিছুর সামান্যতম নড়াচড়া বা স্থির থাকাও তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত হয় না। তিনি কোন কিছুকে যখন, যেভাবে এবং যে উদ্দেশ্যে করতে চান, তা ঠিক সে মতেই সংঘটিত হয়; তার তিল পরিমাণ ব্যত্যয় ঘটে না। তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান, তিনি ব্যতীত কোন হক্ব মাবূদ নেই।[1]
মহান আল্লাহ বলেন,
﴿إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَن يَقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ﴾ [سورة يس: 82]
‘তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন, ‘হও’ এবং তখনই তা হয়ে যায় (ইয়াসীন ৮২)। অন্যত্র তিনি বলেন,
﴿وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ لَجَعَلَ النَّاسَ أُمَّةً وَاحِدَةً﴾ [سورة هود: 118]
‘আর তোমার পালনকর্তা যদি ইচ্ছা করতেন, তবে অবশ্যই সব মানুষকে একই জাতিতে পরিণত করতে পারতেন (হূদ ১১৮)। তিনি আরো বলেন,
﴿وَلَوْ شَاءَ رَبُّكَ لَآمَنَ مَن فِي الْأَرْضِ كُلُّهُمْ جَمِيعًا﴾ [سورة يونس: 99]
‘আর তোমার প্রতিপালক যদি চাইতেন, তাহলে ভূ-পৃষ্ঠের সবাই ঈমান আনত (ইউনুস ৯৯)। এ জাতীয় আরো বহু আয়াত আছে, যেগুলি আল্লাহ্র পূর্ণ ইচ্ছা প্রমাণ করে।
আবু হুরায়রাহ (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, দো‘আ করার সময় তোমাদের কেউ যেন না বলে, হে আল্লাহ! আপনি চাইলে আমাকে ক্ষমা করুন, আপনি চাইলে আমাকে রহম করুন এবং আপনি চাইলে আমাকে রিযিক্ব দান করুন। বরং সে যেন পাকাপোক্তভাবে তলব করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা খুশী, তা-ই করেন, কেউ তাঁকে বাধ্য করে না।[2]
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহেমাহুল্লাহ) বলেন, ‘পৃথিবীতে আগত সকল নবী-রাসূল (আলাইহিমুস সালাম)-এর সর্বসম্মতি, আল্লাহ প্রেরিত প্রত্যেকটি আসমানী কিতাব, আল্লাহ প্রদত্ত সৃষ্টির স্বাভাবিক অবস্থা এবং যু্ক্তি ও প্রত্যক্ষ দর্শন প্রমাণ করে যে, আল্লাহ্র রাজ্যে তাঁর ইচ্ছা ব্যতীত কোন কিছুই ঘটে না। তিনি যা ইচ্ছা করেন, তা হয়। আর যা তিনি ইচ্ছা করেন না, তা হয় না।[3]
[2]. ছহীহ বুখারী, ৪/৩৯৯-৪০০, হা/৭৪৭৭, ‘তাওহীদ’ অধ্যায়, ‘আল্লাহ্র ইচ্ছা’ অনুচ্ছেদ।
[3]. শিফাউল আলীল ফী মাসায়িলিল ক্বাদার ওয়াল-হিকমাতি ওয়াত-তা‘লীল/৯৩।