উত্তরঃ কুরআন মজীদে বান্দার আমলনামা প্রদান সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
وَكُلَّ إِنْسَانٍ أَلْزَمْنَاهُ طَائِرَهُ فِي عُنُقِهِ وَنُخْرِجُ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كِتَابًا يَلْقَاهُ مَنْشُورًا * اقْرَأْ كِتَابَكَ كَفَى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيبًا
‘‘প্রত্যেক মানুষের কৃতকর্ম আমি তার গলায় লাগিয়ে দিয়েছি এবং কিয়ামতের দিন আমি তার জন্য বের করব এক কিতাব, যা সে পাবে উন্মুক্ত। আমি বলবঃ তুমি তোমার আমলনামা পাঠ কর। আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট’’। (সূরা বনী ইসরাঈলঃ ১৩-১৪) আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেনঃ
وَإِذَا الصُّحُفُ نُشِرَتْ
‘‘যখন আমলনামাসমূহ প্রকাশ করা হবে’’। (সূরা তাকভীরঃ ১০) আল্লাহ্ তা’আলা আরও বলেনঃ
وَوُضِعَ الْكِتَابُ فَتَرَى الْمُجْرِمِينَ مُشْفِقِينَ مِمَّا فِيهِ وَيَقُولُونَ يَا وَيْلَتَنَا مَالِ هَذَا الْكِتَابِ لاَ يُغَادِرُ صَغِيرَةً وَلاَ كَبِيرَةً إِلاَّ أَحْصَاهَا وَوَجَدُوا مَا عَمِلُوا حَاضِرًا وَلاَ يَظْلِمُ رَبُّكَ أَحَدًا
‘‘আর সেদিন আমলনামা উপস্থিত করা হবে। তাতে যা আছে, তার কারণে আপনি অপরাধীদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখবেন। তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এ কেমন আমলনামা! এ যে ছোট বড় কোন কিছুই বাদ দেয় নি; সবই এতে রয়েছে। তারা তাদের কৃতকর্মকে সামনে উপস্থিত পাবে। আপনার পালনকর্তা কারো প্রতি যুলুম করবেন না’’। (সূরা কাহ্ফঃ ৪৯) আল্লাহ তাআ’লা আরও বলেনঃ
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمْ اقْرَءُوا كِتَابِيَه * إِنِّي ظَنَنتُ أَنِّي مُلاَقٍ حِسَابِيَه * فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَاضِيَةٍ * فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ * قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ * كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الأَيَّامِ الْخَالِيَةِ * وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَالَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيّه * وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيَه * يَالَيْتَهَا كَانَتْ الْقَاضِيَةَ * مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيَه * هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيّه * خُذُوهُ فَغُلُّوهُ * ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ * ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ * إِنَّهُ كَانَ لاَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ * وَلاَ يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ * فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ * وَلاَ طَعَامٌ إِلاَّ مِنْ غِسْلِينٍ * لاَ يَأْكُلُهُ إِلاَّ الْخَاطِئُونَ
‘‘অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে সে বলবেঃ এসো! তোমরাও আমার আমলনামা পড়ে দেখ। আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। অতঃপর সে সুখী জীবন যাপন করবে সুউচ্চ জান্নাতে। তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে তার প্রতিদান স্বরূপ তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। আর যার আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে হায় আমায় যদি আমলনামা না দেয়া হতো! আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায় আমার মৃত্যুই যদি শেষ পরিণতি হত! আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসলনা। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ একে ধর। অতঃপর গলায় বেড়ি পরিয়ে দাও। অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। অতঃপর তাকে এমন শিকল দিয়ে বাঁধ যার দৈর্ঘ হবে সত্তর গজ। নিশ্চয়ই সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না এবং মিসকীনকে খাদ্য দিতে উৎসাহিত করত না। অতএব আজকের দিনে এখানে তার কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকবে না এবং কোন খাদ্য নেই ক্ষতমিশ্রিত পুঁজ ব্যতীত। গুনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না’’। (সূরা আল-হাক্কাহঃ ১৯- ৩৭) সূরা ইনশিকাকে আল্লাহ্ তাআলা আরও বলেনঃ
فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ
‘‘অনন্তর যাকে তার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে’’। (সূরা ইনশিকাকঃ ৭) আল্লাহ্ তাআ’লা বলেনঃ
وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ وَرَاءَ ظَهْرِهِ
‘‘এবং যাকে তার আমলনামা পিঠের পিছন দিক থেকে দেয়া হবে’’। (সূরা ইনশিকাকঃ ১০) এখান থেকে বুঝা গেল যে, যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, তাকে সামনের দিক থেকে আমলনামা প্রদান করা হবে। আর যাকে বাম হাতে আমলনামা দেয়া হবে, তাকে পিছনের দিক থেকে আমলনামা দেয়া হবে। আমরা আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।