উত্তরঃ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের দিক থেকে ফেরেশতাগণ কয়েকভাবে বিভক্ত। (১) ফেরেশতাদের কেউ রাসূলদের নিকট অহী নিয়ে আসার দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি হলেন রূহুল আমীন জিবরীল (আঃ)।
(২) কেউ বৃষ্টি বর্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি হলেন মীকাঈল (আঃ)।
(৩) কেউ শিঙ্গায় ফুঁ দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত। যেমন ইসরাফীল (আঃ)।
(৪) কেউ আবার রূহ কবয করার দায়িত্বে নিয়োজিত। তিনি হলেন মালাকুল মাওত ও তাঁর সাথীগণ।
(৫) কোন কোন ফেরেশতা বান্দার আমলসমূহ লিখার দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তাঁরা হলেন কিরামুন কাতিবুন।
(৬) তাদের কেউ বান্দাকে তার সম্মুখ ও পশ্চাৎ দিক থেকে হেফাজতের দায়িত্বে নিয়োজিত। তারা হলেন পরপর আগমণকারী ফেরেশতাগণ।
(৭) তাদের কেউ জান্নাত ও তার নেয়ামতের দায়িত্বে নিয়োজিত। যেমন রিযওয়ান ফেরেশতা ও তাঁর সাথীগণ।
(৮) তাদের কেউ জাহান্নাম ও তার আযাবের প্রহরী হিসাবে নিয়োজিত। তিনি হলেন মালেক এবং দোযখের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতাগণ। তাদের নের্তৃস্থানীয়দের সংখ্যা উনিশজন।
(৯) তাদের কেউ কেউ কবরের আযাবের দায়িত্বে নিয়োজিত। তারা হলেন মুনকার ও নাকীর।
(১০) তাদের কেউ আল্লাহর আরশ বহনের দায়িত্বে নিয়োজিত।
(১১) তাদের কাউকে ‘কারুবীয়ূন’ বলা হয়। তাঁরা আল্লাহর আরশের চারপাশে সদা তাসবীহ পাঠের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।
(১২) তাদের কেউ মার্তৃগর্ভে রূহ ফুৎকার, মার্তৃগর্ভে মানব দেহ গঠন এবং তাতে যা লিখতে বলা হয় তা লিখার দায়িত্বে নিয়োজিত।
(১৩) তাদের কেউ কেউ বাইতুল মা’মুরে প্রবেশ করেন। তাতে প্রতিদিন সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রবেশ করে। যারা একবার প্রবেশের সুযোগ পেয়েছে, কিয়ামতের পূর্বে দ্বিতীয়বার আর তারা তাতে প্রবেশের সুযোগ পাবে না।
(১৪) কিছু ফেরেশতা এমন আছেন, যারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করে এবং যিকিরের মজলিস খুঁজে বেড়ায়।
(১৫) অগণিত ফেরেশতা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তাঁরা কখনও ক্লান্তি বোধ করে না।
(১৬) আরো এমন ফেরেশতা আছেন, যারা রুকূ ও সিজদায় পড়ে আছে। তারা কখনও মাথা উত্তোলন করে না।
উল্লেখিত ফেরেশতাগণ ছাড়াও আরো অসংখ্য ফেরেশতা আছে। আল্লাহ্ তাআ’লা বলেনঃ
وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلاَّ هُوَ وَمَا هِيَ إلاَّ ذِكْرَى لِلْبَشَرِ
‘‘আপনার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন। এটা তো (জাহান্নামের বর্ণনা) মানুষের জন্য উপদেশ ছাড়া অন্য কিছু নয়’’। (সূরা মুদ্দাচ্ছিরঃ ৩১) ফেরেশতাদের প্রকারভেদ এবং তাদের কাজ সম্পর্কে কুরআন ও সুন্নাতে আরো অগণিত দলীল রয়েছে।