সাওমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহভীতি তথা তাকওয়াহ অর্জন। পবিত্র কুরআনের ভাষায়:

﴿يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ كُتِبَ عَلَيۡكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِكُمۡ لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]

“হে ঈমিনদারগণ! তোমাদের ওপর সাওম ফরয করা হয়েছে। যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা পরহেযগারী অর্জন করতে পার”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৮৩]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ، فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ»

“যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই”।[1]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«قَالَ اللَّهُ: كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ لَهُ، إِلَّا الصِّيَامَ، فَإِنَّهُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ، وَالصِّيَامُ جُنَّةٌ، وَإِذَا كَانَ يَوْمُ صَوْمِ أَحَدِكُمْ فَلاَ يَرْفُثْ وَلاَ يَصْخَبْ، فَإِنْ سَابَّهُ أَحَدٌ أَوْ قَاتَلَهُ، فَلْيَقُلْ إِنِّي امْرُؤٌ صَائِمٌ " «وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، لَخُلُوفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ رِيحِ المِسْكِ» " لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ يَفْرَحُهُمَا: إِذَا أَفْطَرَ فَرِحَ، وَإِذَا لَقِيَ رَبَّهُ فَرِحَ بِصَوْمِهِ "

“আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, সাওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তাঁর নিজের জন্য; কিন্তু সাওম আমার জন্য, তাই আমি এর প্রতিদান দেবো। সাওম ঢালস্বরূপ। তোমাদের কেউ যেন সাওম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। কেউ যদি তাঁকে গালি দেয় অথবা তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন সাওম পালনকারী। যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ, তাঁর শপথ! সাওম পালনকারীর মুখের (না খাওয়াজনিত) ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মিসকের ঘ্রাণের চেয়েও উত্তম। সাওম পালনকারীর জন্য রয়েছে দু’টি খুশী যা তাঁকে খুশী করে। যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে তাঁর রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সাওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে”।[2]অন্য মাসের মতো রমযান মাসেও কোনো মুমিন সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, চাঁদাবাজি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, যুলুম, অত্যাচার ইত্যাদি করতে পারে না। ঈদে স্ত্রী-পুত্রের জন্য দামী-দামী পোষাক কেনার জন্য আমাদের দেশের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘুষ ও চাঁদাবাজি করা ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে গেছে। তাই আসুন আর সুদ-ঘুষ নয়, দুর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় এ রমযানেই গ্রহণ করি।

>
[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৩।

[2] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৯০৪।