কিছু আলেম মনে করেন, সালাতুদ-দুহা মাঝে মাঝে আদায় করা আবার মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয়া মুস্তাহাব। তারা নিম্নোক্ত হাদীস ও আসার দ্বারা দলীল পেশ করেন,
আবূ সাঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
«كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي الضُّحَى حَتَّى نَقُولَ: لَا يَدَعُهَا، وَيَدَعُهَا حَتَّى نَقُولَ: لَا يُصَلِّيهَا».
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাঝে মাঝে এমনভাবে নিয়মিত সালাতুদ-দুহা আদায় করতেন যে, আমরা মনে করতাম তিনি আর এ সালাত বাদ দিবেন না। আবার মাঝে মাঝে এমনভাবে ছেড়ে দিতেন যে, আমরা ভাবতাম তিনি আর এ সালাত আদায় করতেন না।”[1] কিন্তু এ হাদীসটি দ‘য়ীফ হওয়ার কারণে দলীল হিসেবে শক্তিশালী নয়।
ইকরামাহ রহ. বলেন,
كان ابن عباس يصليها يومًا ويدعها عشرة أيام، يعنى صلاة الضحى.
“ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু একদিন সালাতুদ-দুহা আদায় করলে দশ দিন ছেড়ে দিতেন।”[2]
আব্দুল্লাহ ইবন দীনার বলেন,
أنه كان لا يصلى الضحى، فإذا أتى مسجد قباء صلى وكان يأتيه كل سبت.
“আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু দুহার সালাত আদায় করতেন না। তবে তিনি যখন মসজিদে কুবায় আসতেন তখন এ সালাত আদায় করতেন। আর তিনি প্রতি শনিবার মসজিদে কুবায় আসতেন।”[3]
ইবরাহীম নাখঈ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
كانوا يكرهون أن يحافظوا عليها كالمكتوبة، ويصلون ويدعون، يعنى صلاة الضحى.
“সাহাবী ও তাবে‘ঈগণ ফরয সালাতের মতো গুরুত্বের সাথে দুহার সালাত আদায় করাকে মাকরূহ মনে করতেন। তারা মাঝে মাঝে এ সালাত আদায় করতেন, আবার মাঝে মাঝে ছেড়ে দিতেন।”[4]
সাঈদ ইবন জুবায়ের রহ. বলেন,
إنى لأدع صلاة الضحى وأنا أشتهيها، مخافة أن أراها حتمًا علىّ.
“মানুষ সালাতুদ-দুহাকে অত্যাবশ্যকীয় ভাবতে পারে বলে আমি এ সালাত ছেড়ে দিই, তবে আমার আদায় করতে ইচ্ছে করে।”[5] এ মতের অনুসারীরা বলেন, মাঝে মাঝে আদায় করা ও মাঝে মাঝে ছেড়ে দেওয়া উত্তম, যাতে মানুষ এ ধারণা না করে যে, এ সালাত ওয়াজিব বা নিয়মিত আদায়যোগ্য সুন্নাত। আর আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা নিয়মিত এ সালাত ঘরে আদায় করতেন বলে মানুষের এ ধারণা হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল। তথাপি এ সব হাদীস ও আসার জমহুম আলেমদের মতের বিরোধী নয়। কেননা জমহুর আলেমগণ এ সালাতকে মুস্তাহাব বলেছেন। আর মুস্তাহাবের হুকুমই হলো যে ব্যক্তি তা আদায় করবে তার সাওয়াব হবে, কেউ আদায় না করলে সাওয়াব হবে না বা গুনাহও হবে না এবং দোষারোপও করা যাবে না। অতএব, এ সালাতের ফযীলত সম্পর্কে যেসব হাদীস ও আসার এসেছে এসব থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ সালাত সুন্নত। এটাই জমহুর আলেমদের মত।
[2] শরহে সহীহুল বুখারী, ইবন নাত্তাল, ৩/১৬৯।
[3] শরহে সহীহুল বুখারী, ইবন নাত্তাল, ৩/১৬৯।
[4] শরহে সহীহুল বুখারী, ইবন নাত্তাল, ৩/১৬৯।
[5] শরহে সহীহুল বুখারী, ইবন নাত্তাল, ৩/১৬৯।