প্রশ্নোত্তরে হজ্জ ও উমরা অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম ২১৩ টি
প্রশ্নোত্তরে হজ্জ ও উমরা অধ্যাপক মোঃ নূরুল ইসলাম ২১৩ টি
তারিখ স্থান করনীয় ইবাদত
৮ই যিলহজ্জের পূর্বের কাজ মীকাত (১) মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধবেন।
মক্কা (২) কাবা ঘরে উমরার তাওয়াফ করবেন।
(৩) সাঈ করবেন।
(৪) চুল কেটে হালাল হয়ে যাবেন।
হজ্জের ধারাবাহিক কাজ
৮ই যিলহজ্জ তারউইয়্যার দিন মিনা নিজ বাসস্থান থেকে ইহরাম বেঁধে হজ্জের নিয়ত করে সূর্যোদয়ের পর মিনায় রওয়ানা হবেন। সেখানে যুহর, আসর, মাগরিব, এশা ও ফজরের সালাত আদায় করবেন।
৯ই যিলহজ্জ (আরাফার দিন) আরাফা ময়দান

(১) সূর্যোদয়ের পর আরাফাতে রওয়ানা হবেন।

(২) যুহরের প্রথম ওয়াক্তে যুহর ও আসর পড়বেন একত্রে পরপর দুই দুই রাকআত করে।

(৩) সূর্যাস্তের পর মুযদালিফায় রওয়ানা করবেন। মাগরিব-এশা সেখানেই পড়বেন।

(৪) সেখানে রাত্রি যাপন করে প্রথম ওয়াক্তে অন্ধকার থাকতেই ফজর পড়বেন।

(৫) আকাশ ফর্সা হওয়া পর্যন্ত কেবলামুখী হয়ে হাত তুলে দীর্ঘ সময় দোয়া ও মোনাজাতে মশগুল থাকবেন।

(৬) বড় জামারায় নিক্ষেপের জন্য ৭টি কংকর এখান থেকে কুড়াতে পারেন।

১০ ই যিলহজ্জ (ঈদের দিন) মিনা (১) বড় জামরায় ৭টি কংকর নিক্ষেপ করবেন।
(২) কুরবানী করবেন।
(৩) চুল কাটাবেন। অতঃপর ইহরামের কাপড় বদলিয়ে সাধারণ পোষাক পরে ফেলবেন।
মক্কা (৪) তাওয়াফে ইফাদা করবেন। এদিন না পারলে এটি ১১ বা ১২ তারিখেও করতে পারবেন এবং তৎসঙ্গে সাঈও করবেন।
১১ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক)
১ম দিন
মিনা

(১) দুপুরের পর সিরিয়াল ঠিক রেখে প্রথমে ছোট, মধ্যম ও এর পরে বড় জামরায় প্রত্যেকটিতে ৭টি করে কংকর নিক্ষেপ করবেন।

(২) মিনায় রাত্রি যাপন করবেন।

১২ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক)

২য় দিন

মিনা

১) পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী ৩টি জামরায় ৭+৭+৭=২১টি কংকর নিক্ষেপ করবেন। দুপুরের আগে কংকর নিক্ষেপ করবেন না।

(২) সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করবেন। তা না পারলে আজ দিবাগত রাতও মিনায় কাটাবেন।

১৩ ই যিলহজ্জ (আইয়ামে তাশরীক)

৩য় দিন

মিনা (১) যারা গত রাত মিনায় কাটিয়েছেন তারা আজ দুপুরের পর পূর্ব দিনের নিয়মেই ৭টি করে মোট ২১ টি কংকর মারবেন। অতঃপর মিনা ত্যাগ করবেন।
অতঃপর মক্কা দেশে ফেরার পূর্বে বিদায়ী তাওয়াফ করবেন।

১টি। সেটি হলো কাবাঘর তাওয়াফ করা। আর উমরার শর্ত হলো ইহরাম বাঁধা। তবে কেউ কেউ বলেছেন উমরার রুকন তিনটি। যথাঃ
(১) ইহরাম বাঁধা।
(২) তাওয়াফ করা
(৩) সাঈ করা।
উল্লেখ্য যে, এ রুকনগুলোই উমরার ফরয।

৩টি, সেগুলো হলঃ
(১) ইহরামের কাপড় পরে উমরার নিয়ত করার কাজটি মীকাত পার হওয়ার আগেই করা।
(২) ‘সাফা ও মারওয়া’ এ দু’টি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাঈ করা। কিছু আলেম একে রুকন অর্থাৎ ফরয বলেছেন।
(৩) চুল কাটা (মাথার চুল মুণ্ডানো বা ছোট করা)।

হজ্জ ও উমরা পালনকারীকে আল্লাহ তা‘আলা কি কি প্রতিদান দেবেন?

হজ্জ ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি স্তম্ভ। এ হজ্জ ও উমরা পালনে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়া ও পরপারের জন্য অনেক প্রতিদান রয়েছে। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু হাদীস উল্লেখ করা হলোঃ
(ক) হজ্জ পালন উত্তম ইবাদাত

১-عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ -صلى الله عليه وسلم- أَيُّ الأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ إِيمَانٌ بِاللهِ وَرَسُولِهৃ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ جِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللهِ قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ حَجٌّ مَبْرُورٌ.

(১) আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা সর্বোত্তম আমল কোনটি? জবাবে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলোঃ তারপর কোন আমল? তিনি উত্তর দিলেন, “আল্লাহর পথে জিহাদ করা। আবার জিজ্ঞাস করা হলোঃ এরপর কোন আমল? জবাবে তিনি বললেন, “মাবরূর হজ্জ” (কবূল হজ্জ)* (বুখারী ২৬, ১৫১৯ ও মুসলিম ৮৩)

(খ) হাজীগণ আল্লাহর মেহমান

عَنِ ابْنِ عُمَرَ عَنِ النَّبِيِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ الْغَازِي فِي سَبِيلِ اللهِ وَالْحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ وَفْدُ اللهِ دَعَاهُمْ فَأَجَابُوهُ وَسَأَلُوهُ فَأَعْطَاهُمْ

(২) ইবনে উমর রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহর পথে জিহাদকারী এবং হজ্জ ও উমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। আল্লাহ তাদের আহ্বান করেছেন, তারা সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছে। তারা আল্লাহর কাছে যা চাইছে আল্লাহ তাই তাদের দিয়ে দিচ্ছেন। (ইবনে মাজাহ ২৮৯৩)

৩-إِنْ دَعَوْهُ أَجَابَهُمْ وَإِنِ اسْتَغْفَرُوهُ غَفَرَ لَهُمْ

(৩) অন্য হাদীসে আছে, হজ্জ ও উমরা পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। তারা দোয়া করলে তা কবূল হয়ে যায় এবং গুনাহ মাফ চাইলে তা মাফ করে দেয়। (ইবনে মাজাহ ২৮৯২)
(৪) তিন ব্যক্তি আল্লাহর মেহমানঃ ক) হাজী খ) উমরা পালনকারী গ) আল্লাহর পথে জিহাদকারী। (নাসাঈ)

(গ) হজ্জ জিহাদতুল্য ইবাদাত

৫-عن الحسن بن علي رضي الله عنهما قال جَاءَ رجلا إلى النبي -صلى الله عليه وسلم- فقال : إني جبان، وإني ضعيف، فقال : هلم إلى جهاد لا شوكة فيه : الحج - الطبراني

(৫) হাসান ইবনু আলী রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে আরজ করল আমি একজন ভীতু ও দুর্বল ব্যক্তি। তখন তিনি তাকে বললেন, তুমি এমন একটি জিহাদে চলো যা কণ্টকাকীর্ণ নয় (অর্থাৎ হজ্জ পালন করতে চলো।) (তাবারানী)

৬-عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ -صلى الله عليه وسلم-قَالَ جِهَادُ الْكَبِيرِ وَالصَّغِيرِ وَالضَّعِيفِ وَالْمَرْأَةِ الْحَجُّ وَالْعُمْرَةُ

(৬) আবূ হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “বয়স্ক, শিশু, দুর্বল ও নারীর জিহাদ হলো হজ্জ এবং উমরা পালন করা”। (নাসাঈ ২৬২৬)

৭-وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ : يَا رَسُوْلَ اللهِ، تري الجهادَ أَفْضَلُ الْعَمَلِ، أَفَلاَ نُجَاهِدُ، لَكُنَّ أَفْضَلُ الْجِهَادِ : حَجِّ مَبْرُوْرِ- (رواه البخاري ومسلم)

(৭) আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি তো জিহাদকে সর্বোত্তম আমল মনে করেন। আমরা (নারীরা) কি জিহাদ করতে পারব না? উত্তরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তোমাদের জন্য সর্বোত্তম জিহাদ হলো মাবরূর হজ্জ (কবূল হজ্জ)।” (বুখারী ও মুসলিম)
(৮) অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

৮-عَلَيْهِنَّ جِهَادٌ لاَ قِتَالَ فِيهِ الْحَجُّ وَالْعُمْرَةُ

“হা, নারীদের উপর জিহাদ ফরয। তবে এ জিহাদে কোন মারামারি ও সংঘাত নেই। আর সেটা হলোঃ হজ্জ ও উমরা পালন করা। (আহমাদ ২৪৭৯৪)

(ঘ) হজ্জ গুনাহমুক্ত করে দেয়

৯-عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ঃ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ -صلى الله عليه وسلم-يَقُولُ : مَنْ حَجَّ للهِ فَلَمْ يَرْفُثْ وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهচ

(৯) আবূ হুরাইরাহ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ যে ব্যক্তি শুধু আল্লাহকে খুশী করার জন্য হজ্জ করল এবং হজ্জকালে যৌন সম্ভোগ ও কোন প্রকার পাপাচারে লিপ্ত হল না সে যেন মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ট হবার দিনের মতই নিষ্পাপ হয়ে বাড়ী ফিরল। (বুখারী ১৫২১)

১০-أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الإِسْلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ وَأَنَّ الْهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهَا وَأَنَّ الْحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ

(১০) আমর ইবনুল আসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, তুমি কি জান না ইসলাম গ্রহণ করলে পূর্বের সব গুনাহ মাফ হয়ে যায়। তদ্রূপ হিজরতকারীর আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয় এবং হজ্জ পালনকারীও পূর্বের গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে যায়। (মুসলিম ১২১)

১১-عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ -صلى الله عليه وسلم-تَابِعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّهُمَا يَنْفِيَانِ الْفَقْرَ وَالذُّنُوبَ كَمَا يَنْفِي الْكِيرُ خَبَثَ الْحَدِيدِ وَالذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَلَيْسَ لِلْحَجَّةِ الْمَبْرُورَةِ ثَوَابٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ

(১১) আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা হজ্জ ও উমরা পালন কর। কেননা হজ্জ ও উমরা উভয়টি দারীদ্রতা ও পাপরাশিকে দূরীভূত করে যেমনিভাবে রেত স্বর্ণ, রৌপ্য ও লোহার মরিচা দূর করে দেয়। আর মাবরূর হজ্জের বদলা হল জান্নাত।” (তিরমিযী ৮১০)

(ঙ) হজ্জের বিনিময় হবে বেহেশত

১২عن جابر ঃ : أن رسول الله -صلى الله عليه وسلم-قال : هذا البيت دعامة الإسلام، فمن خرج يؤم هذا البيت من حاج أو معتمر، كان مضمونا على الله إن قبض أن يدخله الجنة وإن رده رده بأجر وغنيمة

(১২) জাবের রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “এ (কাবা) ঘর ইসলামের স-ম্ভস্বরূপ। সুতরাং যে ব্যক্তি হজ্জ কিংবা উমরা পালনের জন্য এ ঘরের উদ্দেশ্যে বের হবে সে আল্লাহ তা‘আলার যিম্মাদারীতে থাকবে। এ পথে তার মৃত্যু হলে আল্লাহ তাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন। আর বাড়ীতে ফিরে আসার তাওফীক দিলে তাকে প্রতিদান ও গণীমত দিয়ে প্রত্যার্বতন করাবেন।

১৩-عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ঃ أَنَّ رَسُولَ اللهِ -صلى الله عليه وسلم-قَالَ الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُورُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ

(১৩) আবূ হুরাইরা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক উমরা থেকে অপর উমরা পালন করার মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে হয়ে যাওয়া পাপরাশি এমনিতেই মাফ হয়ে যায়। আর মাবরূর হজ্জের বিনিময় নিশ্চিত জান্নাত। (বুখারী ১৭৭৩)

(চ) হজ্জে খরচ করার ফযীলত

১৪- عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ -صلى الله عليه وسلم- النَّفَقَةُ فِي الْحَجِّ كَالنَّفَقَةِ فِي سَبِيلِ اللهِ بِسَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ

(১৪) বুরাইদা রাদিআল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, হজ্জে খরচ করা আল্লাহর পথে (জিহাদে) খরচ করার সমতূল্য সাওয়াব। হজ্জে খরচকৃত সম্পদকে সাতশত গুণ বাড়িয়ে এর প্রতিদান দেয়া হবে। (আহমাদ ২২৪৯১)

(ছ) অন্যান্য প্রতিদান
(১৫) আয়েশাˆ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরাফাতের দিন এত অধিক সংখ্যক লোককে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন যা অন্য কোন দিন দেন না। এরপর তিনি (হাজীদের) নিকটবর্তী হয়ে ফেরেশতাদের সাথে গর্ব করে বলেন, এরা কি চায়? (অর্থাৎ হাজীরা যা চাচ্ছে তা তাদেরকে দিয়ে দেয়া হল।) (মুসলিম)
(১৬) সর্বোত্তম দোয়া হল আরাফার দিনের দোয়া। (তিরমিযী)
(১৭) রমযান মাসের উমরা পালন করা আমার সাথে (অর্থাৎ নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে) হজ্জ করার সমতূল্য। (বুখারী)
(১৮) হাজ্‌রে আস্‌ওয়াদ ও রুক্‌নে ইয়ামানী স্পর্শ করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। যে ব্যক্তি কাবা ঘর সাতবার তাওয়াফ করে দু’রাকাত সালাত আদায় করে সে যেন একটি গোলাম আযাদ করল। বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে গিয়ে যে ব্যক্তি একটি পা মাটিতে রাখল, আবার এটি উঠাল এর প্রত্যেকটির জন্য তাকে ১০টি সাওয়াব, ১০টি গুনাহ মাফ এবং তার ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেয়া হয়। (আহমাদ)
(১৯) মসজিদুল হারামে একবার সালাত আদায় করা অন্য মসজিদে (মাসজিদে নববী ব্যতীত) এক লক্ষ বার সালাত আদায়ের চেয়েও বেশী সাওয়াব। (আহমাদ)

হানাফী ও মালেকী মাযহাবে উমরা করা সুন্নাত। আর শাফী ও হাম্বলী মাযহাবে উমরা করা ফরয। অর্থাৎ যার উপর হজ্জ ফরয তার উপর উমরাও ফরয।

উমরা বৎসরের যেকোন মাস, যে কোন দিন ও যে কোন রাতে করা যায়। তবে ইমাম আবু হানীফার মতে আরাফাতের দিন, কুরবানীর দিন এবং আইয়ামে তাশরীকের তিন দিন উমরা করা মাকরূহ।

৩টি, যথাঃ
(১) ইহরাম বাঁধা (অর্থাৎ ইহরামের কাপড় পরে হজ্জের নিয়ত করা।)
(২) ৯ই যিলহজ্জে আরাফাতে অবস্থান করা।
(৩) তাওয়াফ : তাওয়াফে ইফাদা অর্থাৎ তাওয়াফে যিয়ারাহ করা।
উল্লেখ্য যে, হজ্জের রুকনগুলোই মূলতঃ হজ্জের ফরয। এর কোন একটি রুকন ছুটে গেলে হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে।

৯টি, সেগুলো হলঃ
(১) সাঈ করা। (অনেকের মতে এটা হজ্জের রুকন।)
(২) ইহরাম বাঁধার কাজটি মীকাত পার হওয়ার পূর্বেই সম্পন্ন করা।
(৩) আরাফাতে অবস্থান সূর্যাস্ত পর্যন্ত দীর্ঘায়িত করা।
(৪) মুযদালিফায় রাত্রি যাপন।
(৫) মুযদালিফার পর কমপক্ষে দুই রাত্রি মিনায় যাপন করা।
(৬) কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
(৭) হাদী (পশু) জবাই করা (তামাত্তু ও কেরান হাজীদের জন্য।)
(৮) চুল কাটা।
(৯) বিদায়ী তাওয়াফ।

যে কোন কারণেই হোক উপরে বর্ণিত কোন একটি ওয়াজিব ছুটে গেলে দম (অর্থাৎ পশু জবাই) দেয়া ওয়াজিব হয়ে যায়।

হজ্জের সুন্নত অনেক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
(১) ইহরামের পূর্বে গোসল করা
(২) পুরুষদের সাদা রঙের ইহরামের কাপড় পরিধান করা।
(৩) তালবিয়াহ পাঠ করা
(৪) ৮ই যিলহজ্জ দিবাগত রাত মিনায় অবস্থান করা
(৫) ছোট ও মধ্যম জামারায় কংকর নিক্ষেপের পর দু‘আ করা
(৬) কেরান ও ইফরাদ হাজীদের তাওয়াফে কুদূম করা।
তবে কোন কারণে সুন্নত ছুটে গেলে দম দিতে হয় না।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ২১৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 6 · · · 19 20 21 22 পরের পাতা »