জানাযার কিছু বিধান শায়খ আব্দুল আযীয ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন বায রাহিমাহুল্লাহ (ইসলামহাউজ) ১৮৫ টি
জানাযার কিছু বিধান শায়খ আব্দুল আযীয ইব্‌ন আব্দুল্লাহ ইব্‌ন বায রাহিমাহুল্লাহ (ইসলামহাউজ) ১৮৫ টি

উত্তর: মুমূর্ষূ ব্যক্তিকে কালিমা স্মরণ করিয়ে দেয়া এবং তাকে কালিমা পাঠ করার দীক্ষা দানকে আরবিতে ‘তালকিন’ বলা হয়। যখন কারো উপর মৃত্যুর আলামত জাহির হয়, তখন উপস্থিত ব্যক্তিদের উচিত তাকে لا إله إلا الله বলার জন্য উদ্বুদ্ধ করা এবং আল্লাহকে স্মরণ করতে বলা। উপস্থিত লোকদের সাথে এ কালিমা একবার পাঠ করাই তার জন্য যথেষ্ট, তবে পীড়াপীড়ি করে তাকে বিরক্ত করা নিষেধ।

প্রশ্ন-২. মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কিবলামুখী করার বিধান কি?

উত্তর: আলেমগণ মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কেবলামুখী করা মুস্তাহাব বলেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

 «الكعبة قبلتكم أحياء وأمواتا» (رواه أبوداود فى الوصايا بلفظ «البيت الحرام قبلتكم أحياء وأمواتا»(

“বায়তুল্লাহু তোমাদের জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায় কিবলা”। ইমাম আবু দাউদ ওসিয়ত অধ্যায়ে বর্ণনা করেন, “বায়তুল হারাম তোমাদের জীবিত ও মৃত উভয় অবস্থায় কিবলা”।  

প্রশ্ন-৩. দাফনের পর তালকিন করার বিধান কি ?

উত্তর: দাফনের পর তালকিন প্রসঙ্গে শরি‘আতে কোন প্রমাণ নেই, তাই এটা বিদাত। দাফনের পর তালকিন প্রসঙ্গে বর্ণিত হাদিসগুলো জাল ও আমলের অযোগ্য, তাই তালকিন শুধু মুমূর্ষাবস্থায় করা, মৃত্যুর পর নয়।

প্রশ্ন-৪. অমুসলিম মুমূর্ষু ব্যক্তিকে কালিমার তালকিন করা বৈধ?

উত্তর: হ্যাঁ, সম্ভব হলে অমুসলিম ব্যক্তিকেও কালিমার তালকিন করা বৈধ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জনৈক ইয়াহূদী খাদেম মমূর্ষাবস্থায় পতিত হলে, তিনি তাকে দেখতে যান ও তাকে কালিমার তালকিন করে বললেন, বলঃ

 « أشْهَدُ أَنْ لاَإِلَه إلاّ اللهَ وأَنَّ مُحَمّدَ رَسُوْلُ اللهِ »

“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল”। এ কথা শুনে বালকটি তার পিতা-মাতার দিকে তাকাল, তারা তাকে বললঃ “তুমি আবুল কাসেমের আনুগত্য কর”। এভাবে ইয়াহূদী বালকটি কালিমা পড়ে ইন্তেকাল করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ “সমস্ত প্রসংশা মহান আল্লাহ তালার জন্যে যিনি আমার মাধ্যমে এ বালকটিকে জাহান্নামের অগুন থেকে মুক্ত করলেন।

প্রশ্ন-৫. উল্লেখিত হাদিস কি অমুসলিম খাদেম গ্রহণের বৈধতা প্রমাণ করে?

উত্তর: না, কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ জীবনে ইয়াহূদী ও খৃস্টানদেরকে আরব উপদ্বীপ হতে বের করে দিতে বলেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদেরকে বের করে দিতে বলেছেন, খাদেম হিসাবে তাদেরকে ডেকে আনার কোন অর্থ নেই।

প্রশ্ন-১. সাহাবি ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিস দ্বারা মৃত ব্যক্তির গোসলের পানিতে বড়ই পাতা দেয়া ওয়াজিব প্রমাণিত হয়?

উত্তর- মৃতের গোসলের পানিতে বড়ই বা কুলপাতা দেয়া শরীয়ত সম্মত, তবে ওয়াজিব নয়। আলেমগণ হাদিসের নির্দেশকে মুস্তাহাব বলেছেন। কারণ কুলপাতা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য খুব কার্যকরী। কুলপাতা না পাওয়া গেলে সাবান বা এ জাতীয় কিছু ব্যবহার করাই যথেষ্ট।

প্রশ্ন ২- এহরাম আবস্থায় মৃত ব্যক্তির গোসলের হুকুম কি?

উত্তর: এহরাম অবস্থায় মৃত ব্যক্তিকেও অন্যান্যদের ন্যায় গোসল দিতে হবে, তবে তার গাঁয়ে সুগন্ধি মাখবে না এবং তার মুখ ও মাথা ঢাকবে না। তার কাফন পাগড়ি ও জামা ব্যতীত শুধু এহরামের কাপড়ে সীমাবদ্ধ থাকবে। সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন এহরাম অবস্থায় মৃত ব্যক্তি কিয়ামতের দিন তালবিয়া পড়তে পড়তে উঠবে। এহরাম অবস্থায় মৃত ব্যক্তির হজের অবশিষ্ট কাজ অন্য কাউকে সম্পূর্ণ করতে হবে না, তার মৃত্যু আরাফাতে অবস্থানের পর বা আগে যখনই হোক। কারণ এ ব্যাপারে রাসূলের কোন নির্দেশ নেই।

প্রশ্ন ৩- নারী ও পুরুষকে কাফন কাপড় পরানোর নিয়ম কি?

উত্তর- জামা ও পাগড়ী ব্যতীত পুরুষকে সাদা তিন কাপড়ে এবং নারীকে ইযার, কামিস, উড়না ও বড় দু’চাদরসহ মোট পাঁচ কাপড়ে কাফন দেয়া উত্তম। এ ছাড়া সতর ঢেকে যায় এমন এক কাপড়ে নারী কিংবা পুরুষকে কাফন দেয়াও বৈধ।

প্রশ্ন ৪- মৃত ব্যক্তির গোঁফ, নখ ইত্যাদি কাটার বিধান কি?

উত্তর- এ প্রসঙ্গে সুস্পষ্ট কোন দলিল নেই, তাই কাটা না-কাটা উভয় সমান। কতক আলেম নখ ও গোঁফ কাটার স্বপক্ষ্যে প্রমাণ পেশ করেছেন, কিন্তু গোপন অঙ্গের পশম পরিষ্কার করা ও খতনা করার কোন দলিল নেই, তাই এ দু’কাজ কোন অবস্থাতেই করা যাবে না।

প্রশ্ন ৫- মৃত ব্যক্তির গোসলে কুলপাতা মিশ্রিত পানি ব্যবহার করা কি সুন্নত?

উত্তর- যেহেতু কুলপাতা মিশ্রিত পানি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় খুব কার্যকরী, তাই অনেক ফেকাহবিদ এটাকে উত্তম বলেছেন, তবে বাধ্যতামূলক নয়।

দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১০ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৮৫ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে পাতা নাম্বারঃ 1 2 3 4 5 6 · · · 16 17 18 19 পরের পাতা »