বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। সমস্ত প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের জন্য, দরূদ এবং সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবীর প্রতি, তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি এবং সকল ছাহাবীর প্রতি। রোগী দেখতে যাওয়া মুসলিমদের পারস্পরিক অধিকার। আর যে রোগী দেখতে যাবে, তার জন্য উচিৎ হবে রোগীকে তওবা, যরূরী অছিয়ত এবং সর্বদা আল্লাহ্র যিক্র করার কথা স্বরণ করিয়ে দেওয়া। কেননা রোগী এ সময় এ জাতীয় বিষয়ের খুব বেশী মুখাপেক্ষী থাকে। অনুরূপভাবে রোগী যদি মৃত্যুমুখে পতিত হয় এবং তার কাছে উপস্থিত ব্যক্তি যদি নিশ্চিত হয় যে, তার মৃত্যু এসে গেছে, তাহলে তার উচিৎ তাকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পড়ার কথা স্বরণ করিয়ে দেওয়া, যেমনটি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন।[1]
সে শুনতে পায় এমন শব্দে তার নিকট আল্লাহ্র যিকর করবে। ফলে সে স্মরণ করবে এবং আল্লাহ্র যিকর করবে। বিদ্বানগণ বলেন, মুমূর্ষু ব্যক্তিকে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়ার জন্য আদেশ করা উচিৎ নয়। কেননা তার মনটা ছোট হয়ে যাওয়া এবং তার এই কঠিন অবস্থার কারণে সে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ বলতে অস্বীকার করে বসতে পারে। আর অস্বীকার করে বসলেই তার শেষ ভাল হবে না। সেজন্য তার শয্যাপাশে লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়ে তাকে এই কালিমা স্বরণ করাবে। [অর্থাৎ তাকে বলবেনা যে, হে অমুক! লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ পড়]।
এমনকি বিদ্বানগণ বলেছেন, যদি তাকে স্বরণ করিয়ে দেওয়ার পর সে স্বরণ করে এবং ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ পড়ে, তাহলে তখন চুপ হয়ে যাবে এবং তার সাথে আর কোনো কথা বলবে না- যাতে দুনিয়াতে তার সর্বশেষ কথাটি হয় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’। কিন্তু মুমূর্ষু ব্যক্তি যদি তারপর আবার অন্য কোন কথা বলে ফেলে, তাহলে আবার তাকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’ স্বরণ করাবে- যাতে তার শেষ কালেমাটি হয় ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’।
আর মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন তেলাওয়াতকে অনেক বিদ্বান সুন্নাত বলেছেন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন পড়’।[2] তবে কেউ কেউ হাদীছটি যঈফ বলেছেন। সুতরাং যার দৃষ্টিতে হাদীছটি ছহীহ, তার নিকট সুরা ইয়াসীন পড়া সুন্নাত। পক্ষান্তরে যার দৃষ্টিতে হাদীছটি যঈফ, তার নিকট সূরাটি পড়া সুন্নাত নয়।[3]
[2]. আবু দাঊদ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৩১২১; ইবনু মাজাহ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/১৪৪৮; আহমাদ, ৫/২৬, ২৭।
[3]. হাদীছটিকে ইমাম আলবানী ‘যঈফ’ বলেছেন (আলবানী, সুনানে আবূ দাঊদ, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৩১২১)। তিনি ‘ইরওয়াউল গালীল’-এ বলেছেন, হাদীছটিতে তিনটি ত্রুটি রয়েছে: ১. (হাদীছটির একজন বর্ণনাকরী) আবূ উছমান ‘মাজহূল’ বা অপরিচিত, ২. তার পিতাও ‘মাজহূল এবং ৩. হাদীছটিতে ‘ইযত্বিরাব’ রয়েছে (৩/১৫১, হা/৬৮৮)। সেজন্য শায়খ ইবনে বায (রহেমাহুল্লাহ)কে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, হাদীছটিতে যেহেতু একজন ‘মাজহূল’ বা অপরিচিত বর্ণনাকারী রয়েছে, সেহেতু মুমূর্ষু ব্যক্তির নিকট সূরা ইয়াসীন তেলাওয়াত করা উত্তম নয়। অবশ্য তার নিকট পবিত্র ক্বুরআন পড়া ভাল। কিন্তু সূরা ইয়াসীনকে নির্দিষ্ট করে নেওয়ার কোন যুক্তি নেই (মাজমূউ ফাতাওয়া ইবনে বায, ১৩/৯৫)।–অনুবাদক।
এটি বৈধ মৃত্যু সংবাদ ঘোষণার অন্তর্ভুক্ত। কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজাশীর মৃত্যুর দিনে তাঁর মৃত্যুর খবর দিয়েছিলেন।[1] তাছাড়া যে মহিলা মসজিদ ঝাড়ু দিত, ছাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর মৃত্যুর সংবাদ না দিয়ে দাফন করে ফেললে তিনি বলেন, ‘তোমরা যদি আমাকে খবরটি দিতে’।[2]
সুতরাং জানাযায় বেশী মানুষ শরীক হওয়ার উদ্দেশ্যে কারো মৃত্যু সংবাদ দিলে কোন সমস্যা নেই। কেননা এ মর্মে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তবে মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পরে মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা শরী‘আত সম্মত নয়; বরং তা নিষিদ্ধ মৃত্যুসংবাদ ঘোষণার অন্তর্ভুক্ত।
[2]. বুখারী, ‘ছালাত’ অধ্যায়, হা/৪৫৮; মুসলিম, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/৯৫৬।
মৃতকে গোসল দেওয়ার পদ্ধতিঃ মৃত ব্যক্তিকে এমন এক ঘেরা জায়গায় নিতে হবে, যেখানে কেউ তাকে দেখতে পাবে না। যারা তাকে গোসল করানোর কাজে সরাসরি অংশগ্রহণ করবে এবং যারা তাদেরকে সহযোগিতা করবে, তারা ছাড়া আর কেউ তার কাছে যাবে না। অতঃপর যে গোসল করাচ্ছে সে সহ অন্য কেউ যাতে তার লজ্জাস্থান দেখতে না পায়, সেজন্য তার লজ্জাস্থানে একটি নেকড়া দিয়ে দেহের কাপড়-চোপড় খুলে ফেলতে হবে। তারপর তাকে পরিষ্কার-পরিছন্ন করতে হবে। অতঃপর ছালাতের অযূর ন্যায় তাকে অযূ করাবে। তবে বিদ্বানগণ বলেন, তার নাক-মুখে পানি প্রবেশ করাবে না। বরং একটা নেকড়া ভিজিয়ে তা দিয়ে মৃতের দাঁত সমূহ এবং নাকের ভেতরে ঘষে পরিষ্কার করে দিবে। এরপর মৃতের মাথা ধুয়ে দিবে। অতঃপর তার সমস্ত শরীর ধুয়ে দিবে। তবে শরীর ধোয়ার সময় মৃত ব্যক্তির ডান অঙ্গ থেকে শুরু করবে। পানিতে বরই পাতা দেওয়া উচিৎ। কেননা তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সাহায্য করে। বরই পাতার ফেনা দিয়ে মৃতের মাথা, দাড়ি ধুয়ে দিবে। অনুরূপভাবে শেষ বার ধোয়ার সময় পানিতে একটু কর্পূর মিশানো উচিৎ। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মেয়েকে গোসলদানকারী মহিলাগণকে বলেছিলেন, ‘শেষবার ধোয়ার সময় পানিতে একটু কর্পূর মিশাবে’।[1] অতঃপর মৃতের গায়ের পানি মুছে তাকে কাফনের কাপড় পরাবে।
মৃতকে গোসল দেওয়া ফরযে কেফায়াহ। কেউ তা সম্পন্ন করলে অন্যদের উপর থেকে ফরযিয়াত উঠে যাবে। আমার মতে, যারা মৃত ব্যক্তিকে শর‘ঈ পদ্ধতিতে গোসল দিতে জানে, তারাই মৃতদের গোসলের দায়িত্ব নিবে। দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের সরাসরি গোসল করানোর কাজে অংশ নেওয়া যরূরী নয়। কেননা হতে পারে যে, শিক্ষার্থীরা এর চেয়ে আরো বেশী যরূরী কাজে ব্যস্ত রয়েছে। সেজন্য এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ গোসল দিলেই যথেষ্ট হবে। তবে দ্বীনি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মৃতকে কাফন-দাফন করার পদ্ধতি ভালভাবে জেনে রাখা উচিৎ।
জানাযার ছালাতের পদ্ধতি: মৃতকে মুছল্লীদের সামনে রাখতে হবে। মৃত পুরুষ হলে ইমাম মাথা বরাবর দাঁড়াবেন আর মহিলা হলে দাঁড়াবেন মাঝ বরাবর। অতঃপর প্রথম তাকবীর দিয়ে সূরা ফাতিহা পড়বেন, দ্বিতীয় তাকবীর দিয়ে দরূদ শরীফ পড়বেন এবং তৃতীয় তাকবীর দিয়ে মৃতের জন্য দো‘আ করবেন।
«اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيرِنَا وَكَبِيرِنَا وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا، اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الإِسْلاَمِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِيمَانِ, اللَّهُمَّ لاَ تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلاَ تَفْتِنَّا بَعْدَهُ»
এই সাধারণ দো‘আটি পড়বেন। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত মৃতের জন্য বিশেষ দো‘আ পড়বেন। তা সম্ভব না হলে অন্য যে কোন দো‘আর মাধ্যমে তার জন্য দো‘আ করবেন। মোদ্দাকথাঃ মৃত ব্যক্তির জন্য খাছ কিছু দো‘আ করবেন। কেননা সে দো‘আর খুব বেশী মুখাপেক্ষী। অতঃপর চতুর্থ তাকবীর দিয়ে সামান্য একটু অপেক্ষা করে সালাম ফিরাবেন। কোন কোন বিদ্বান বলেন, চতুর্থ তাকবীরের পরে
﴿رَبَّنَا آتِنَا فِى الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِى الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ﴾ [سورة البقرة: 136]
দো‘আটি পড়বেন। আর পঞ্চম তাকবীর দিলে কোন সমস্যা নেই; বরং সেটিও সুন্নাত সম্মত।[1] সেজন্য মাঝে মাঝে পঞ্চম তাকবীর দেওয়া উচিৎ, যাতে এই সুন্নাতটি বিলুপ্ত না হয়ে যায়। তবে যদি তিনি পঞ্চম তাকবীর দেওয়ার নিয়্যত করেন, তাহলে দো‘আ চতুর্থ ও পঞ্চম তাকবীরে ভাগ করে পড়বেন। আল্লাহই ভাল জানেন।
মৃতের দাফন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা সুন্নাত পরিপন্থী এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আদেশ বিরোধী। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা তাড়াতাড়ি মৃত ব্যক্তির দাফনকার্য সম্পন্ন করো। কেননা সে যদি পূণ্যবান হয়, তাহলে তার জন্য উত্তম পরিণতি রয়েছে, তাকে তোমরা কল্যাণের দিকে নিয়ে যাচ্ছ। আর যদি সে এর ব্যতিক্রম হয়, তাহলে তার জন্য খারাপ রয়েছে, যাকে তোমরা তোমাদের কাঁধ থেকে (তাড়াতড়ি) নামিয়ে দিচ্ছ’।[1]
সামান্য পরিমাণ বিলম্ব করা যেতে পারে। যেমনঃ কারো জন্য ১/২ ঘন্টা অপেক্ষা করা। মনে রাখতে হবে, দীর্ঘ সময় বিলম্ব করা মৃতের উপর অবিচার করার শামিল। কেননা নেকাত্মাকে যখন তার পরিবার গোরস্থানের উদ্দেশ্যে নিয়ে বের হয়, তখন সে বলে, আমাকে দ্রুত নিয়ে যাও, আমাকে দ্রত নিয়ে যাও।[2] বুঝা গেল, সে দ্রুততা কামনা করে। কেননা তাকে কল্যাণ ও অশেষ ছওয়াবের ওয়াদা করা হয়েছে।
[2]. বুখারী, ‘জানাযা’ অধ্যায়, হা/১৩৮০।
বিদ্বানগণের অগ্রাধিকারযোগ্য অভিমত হচ্ছে, যার জানাযা পড়া হয়নি, কেবল তার ক্ষেত্র ব্যতীত অন্য কারো গায়েবানা জানাযা শরী‘আত সম্মত নয়। যেমনঃ কেউ যদি কাফের রাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করে এবং তার জানাযা পড়া না হয়, তাহলে তার গায়েবানা জানাযা পড়া আবশ্যক। কিন্তু যদি তার জানাযার ছালাত সম্পন্ন হয়, তাহলে সঠিক কথা হল, তার গায়েবানা জানাযা শরী‘আতসম্মত নয়। কেননা বাদশাহ নাজাশী ছাড়া অন্য কারো গায়েবানা জানাযার কথা হাদীছে আসেনি।[1] আর নাজাশীর জানাযার ছালাত তাঁর দেশে সম্পন্ন হয়েছিল না। সে কারণে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদ্বীনাতে তাঁর গায়েবানা জানাযা আদায় করেছিলেন। অনেক বড় বড় ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায় মৃত্যুবরণ করেন, কিন্তু তিনি তাদের গায়েবানা জানাযা পড়েছেন মর্মে কিছুই বর্ণিত হয় নি।
কোন কোন বিদ্বান বলেন, যার মাল দ্বারা বা ইল্ম দ্বারা দ্বীনের উপকার সাধিত হয়, এমন ব্যক্তির গায়েবানা জানাযা পড়া যেতে পারে। পক্ষান্তরে যার অবস্থা এমনটি হবে না, তার গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে না। আবার কেউ কেউ বলেন, সবার গায়েবানা জানাযা পড়া যাবে। কিন্তু এটি অতীব দুর্বল অভিমত।
যদি কারো জানাযার ছালাত মসজিদে পড়া হয়, তাহলে মসজিদের ইমাম বেশী উত্তম। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কেউ কারো কর্তৃত্বের স্থলে ইমামতি করবে না’।[1] কিন্তু মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও যদি তার জানাযা হয়, তাহলে মৃতের অছিয়ত প্রাপ্ত ব্যক্তিই জানাযা পড়ানোর ক্ষেত্রে উত্তম। তবে যদি তার অছিয়ত প্রাপ্ত কেউ না থাকে, তাহলে তার নিকটতম ব্যক্তি উত্তম হিসাবে বিবেচিত হবে।
প্রথমে পুরুষদেরকে, তারপর মহিলাদেরকে রাখতে হবে। অনুরূপভাবে বালককে মহিলার আগে রাখতে হবে। যদি একই জানাযায় একজন পুরুষ, একজন অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বালক, একজন প্রাপ্ত বয়ষ্কা মহিলা এবং একজন অপ্রাপ্ত বয়ষ্কা বালিকা থাকে, তাহলে তাদেরকে সাজাতে হবে এভাবেঃ ইমামের কাছাকাছি পুরুষটিকে, তারপর অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বালকটিকে, তারপর মহিলাটিকে এবং তারপর অপ্রাপ্ত বয়ষ্কা বালিকাটিকে রাখতে হবে।
কিন্তু যদি তারা সবাই একই লিঙের হয়, যেমনঃ যদি সবাই পুরুষ হয়, তাহলে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী ব্যক্তিকে ইমামের নিকটবর্তী স্থানে রাখতে হবে। কেননা উহুদ যুদ্ধের শহীদগণের কয়েকজনকে যখন একই ক্ববরে দাফন করা হচ্ছিল, তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কুরআন জানা ছাহাবীকে আগে ক্ববরে রাখার নির্দেশ করেছিলেন।[1] এই হাদীছ প্রমাণ করে যে, আলেম ব্যক্তিকে ইমামের কাছাকাছি রাখতে হবে।
মানুষ বড় হোক অথবা ছোট হোক ইমাম পুরুষের মাথা বরাবর এবং মহিলার মাঝামাঝি স্থানে দাঁড়াবেন। অতএব, মৃত ছোট বালক হলেও ইমাম তার মাথার কাছে দাঁড়াবেন। অনুরূপভাবে ছোট বালিকা হলেও তার মাঝ বরাবর দাঁড়াবেন।
এতে কোন সমস্যা নেই। কেননা মৃত পুরুষ হলে মুছল্লীরা দো‘আয় পুং লিঙ্গের শব্দ ব্যবহার করবে, আর মহিলা হলে স্ত্রী লিঙ্গের শব্দ ব্যবহার করবে। তবে মুছল্লীরা নির্দিষ্ট দো‘আ না পড়লেও কোন সমস্যা নেই। উল্লেখ্য যে, যারা মৃতের লিঙ্গ সম্পর্কে অবহিত হবে না, তারা সাধারণভাবে মুর্দার জানাযা পড়ার নিয়্যত করবে এবং ঐ জানাযাই তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। আল্লাহই ভাল জানেন।