লগইন করুন
বাংলাদেশে যে সব শির্ক লালন হচ্ছে, এটি তন্মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য শির্ক। কেননা চলার পথ পদ্ধতি, নিয়ম-নীতি, অন্য কথায় বিধান প্রণয়নের অধিকার ইসলামে মহান আল্লাহর জন্যই সংরক্ষিত। ইসলামের দৃষ্টিতে এ বিষয়ে অন্য কারো সামান্য নাক গলানোর অধিকার নেই। উদাত্ত কণ্ঠে এরশাদ হল:
﴿أَلَا لَهُ ٱلۡخَلۡقُ وَٱلۡأَمۡرُۗ ٥٤ ﴾ [الاعراف: ٥٤]
সাবধান! সৃষ্টি যার, নির্দেশ দানের একমাত্র অধিকারও তার।[1] সুতরাং শরীয়াত প্রণয়নে অবাঞ্ছিত হস্তক্ষেপ অথবা অন্য কাউকে এ বিষয়ে সামান্য অধিকার দান শির্কের অন্তর্ভুক্ত।
যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে সার্বিক বিধান প্রণেতা মেনে নেয়, তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
﴿أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُۚ﴾ [الشورى: ٢١]
“তারা কি আল্লাহর এমন কিছু অংশীদার তৈরী করে নিয়েছে, যারা তাদের জন্য সেই জীবন ব্যবস্থা প্রণয়ন করে, যার অনুমতি আল্লাহ দেননি?”[2]
আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষকে বিধান প্রণয়নের এই শির্ক চর্চা আমাদের মুসলিম জনপদকেও গ্রাস করে বসেছে। সংসদকে আল্লাহর বিধান বিরোধী বিধান প্রণয়নের অধিকার দানও এই শির্ক চর্চারই শামিল। আল্লাহ’র হারামকৃত সুদ এখানে বৈধ, মদ এখানে পরিপূর্ণভাবে অবৈধ নয়, বেশ্যালয়ের লাইসেন্স পাওয়াও আইনগত বাধা নেই, ইত্যাদি অসংখ্য কাজ- যা আল্লাহ হারাম করেছেন, তা আজ এখানে বৈধ করে রাখা হয়েছে।[3]তবে দুনিয়ার যে সকল বিষয়ে সরাসরি আল্লাহ বিধান দেন নি, সেগুলোতে যদি শরীয়ত বিরোধিতা না থাকে তবে তা প্রণয়ন করাতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু মানুষ আল্লাহর বিধানকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করে শরীয়ত বিরোধী মানুষের তৈরী বিধানকে নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছে, যা নিঃসন্দেহে শির্ক ও কুফরী।
>[2] . সূরা আশ-শুরা: ২১।
[3] . সূরা আত-তাওবার ৩১ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় এ বিষয়ের হাদীসসমূহ দেখুন, আল-কুরতুবী, আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ, আল-জামি’ লি আহাকামিয়া কুরআন, দারুল ইহইয়া লিত-তুরাছিল আরাবী, বৈরুত, ১৯৮৫, ৮খ, পৃ. ১১৯-১২০; আত-তাবারী, ইবন জারীর, জামি’উল বায়ান ফী তা’বীলি আয়িল কুরআন, দারুল-কুতুবিল ইসলামিয়্যা, বৈরুত, ১৯৯২, ৬খ, পৃ. ৩৫৩-৩৫৬।