লগইন করুন
বার ইমামের অনুসারী (ইমামিয়া) শিয়াদের প্রবীন ও নবীন সকল আলেমের দৃষ্টিভঙ্গি সুন্নী মাযহাবের চার ইমামের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ।
অবশ্য যারা মাযহাবের ইমামদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ও উত্তম ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ রাসূলের সাহাবী ও তাঁর স্ত্রীদের সাথে শত্রুতা পোষণ করতে পারে তাদের কাছ থেকে এটা বিরল কিছু নয়।
ইমামিয়াদের কিতাবাদি সুন্নী মাযহাবের চার ইমামের বিষোদগারে ভরপুর। যেমন শিয়া আলেম কুলাইনী তার সনদে আবু জাফর আল-বাকের[1] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি (বাকের) কিবলামুখী হয়ে বলেন, মানুষকে আদেশ দেওয়া হয়েছে এ পাথরগুলোর (বাইতুল্লাহর) সন্নিকটে এসে সেগুলোকে তাওয়াফ করতে। তারপর আমাদের কাছে এসে আমাদের মিত্রতার ঘোষণা দিতে। আদেশটা যে আয়াতে দেওয়া হয়েছে তা হল- وَإِنِّي لَغَفَّارٞ لِّمَن تَابَ وَءَامَنَ وَعَمِلَ صَٰلِحٗا ثُمَّ ٱهۡتَدَىٰ [طه: ٨٢] “নিশ্চয় আমি ঐ ব্যক্তির প্রতি ক্ষমাশীল যে তাওবা করল, ঈমান আনল এবং নেক আমল করল, অতঃপর দিশা পেল।” [সূরা ত্বহা ৮২] অতঃপর বাকের হাত দিয়ে নিজের বুকের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন অর্থাৎ আমাদের মিত্রতার দিশা পেল। এরপর বাকের বললেন, হে সুদাইর[2]! যারা মানুষকে আল্লাহ্র দীনে প্রবেশে বাধা দেয় আমি কি তোমাকে সেসব লোকদের দেখিয়ে দিব না? সেসময় আবু হানীফা ও সুফিয়ান সাওরী মসজিদে গোল মজলিসে বসা ছিলেন। তখন তিনি (বাকের) তাদের দিকে তাকিয়ে বলেন, এরা মানুষকে আল্লাহ্র দীনে প্রবেশে বাধা দেয়, এদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো দলীল-প্রমাণ নেই। যদি এ খারাপ লোকগুলো তাদের বাড়ীঘরে বসে থাকত, তাহলে আল্লাহ্ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জানার জন্য লোকেদেরকে আমাদের কাছে আসতে হত। তখন আমরা লোকদেরকে আল্লাহ্ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে জানাতে পারতাম।”[3]
আওয়া-লী[4] নামে শিয়াদের অন্য এক আলেম বলেন, “পরিচ্ছেদ: তাদের (সুন্নীদের) চার ইমাম ও সকল বিদআতী আলেম এবং তাদের উদ্ভাবিত বিদআতের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। বিশেষতঃ আবু হানীফা, যার মাঝে সামান্যতম আল্লাহ্র ভয়ও নাই, সে নিকৃষ্টতম বিদ‘আতের উদ্ভাবক।”[5]
কাজী ইয়ায তারতীব গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, ইমামিয়াদের অনুসারী এক ব্যক্তি ইমাম মালেককে জিজ্ঞেস করে “আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর সবচেয়ে উত্তম লোক কে?” মালেক রাহিমাহুল্লাহ বললেন, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু। সে বলল, তারপর কে? তিনি বললেন, অন্যায়ভাবে নিহত খলিফা উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু। তখন এই রাফেযী লোকটি মালেক রাহিমাহুল্লাহকে লক্ষ্য করে বলল, “আল্লাহ্র শপথ আমি কখনো তোমার সাথে বসব না।”[6]
তদ্রুপ ইমামদের প্রতি তাদের শত্রুতার আরো নমুনা দেখা যায় তাদের জনৈক কবির কবিতাতে। সে তার কবিতার কিছু পংক্তি নিম্নরূপ:
“যদি তুমি নিজের জন্য সন্তোষজনক কোনো মাযহাব পেতে চাও যা তোমাকে হাশরের দিন জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে,
তাহলে শাফেয়ী, মালেক, আহমাদ, নুমান অথবা কাব আহবারের[7] মাযহাব পরিত্যাগ কর,
এবং এমন লোকদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোল যাদের হাদীস আমাদের নানা জিব্রাইলের মাধ্যমে বারী তায়ালার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেন।”[8]
শিয়া ইমাম ‘হিল্লি’র ‘মুখতালিফুস শিয়া’ নামক গ্রন্থের ভূমিকাতে চার ইমামের প্রতি তাদের ন্যাক্কারজনক দৃষ্টিভঙ্গির আরেকটি নমুনা ফুটে উঠেছে:
“লোকেরা বলল, তুমি কোন কারণে তোমার জুতা সাথে নিয়ে এলে? এটাতো বুদ্ধিমান তো দূরে থাক কোনো মানুষের কাজ হতে পারে না। সে বলল, আমি আশংকা করেছি কোনো হানাফী আমার জুতাটা চুরি করে নিয়ে যাবে, যেভাবে আবু হানীফা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জুতা চুরি করেছিল।
হানাফীরা চিৎকার দিয়ে উঠল। একি বলছে! কক্ষনো নয়! রাসূলের যুগে কি আবু হানীফা ছিল? তার তো জন্ম হয়েছে রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওফাতের একশ বছর পর।
তখন সে বলল, ও- না। ভুল হয়েছে সে লোকটা ছিল শাফেয়ী।
তখন শাফেয়ী মাযহাবের লোকেরা চিৎকার দিয়ে উঠল। তারা বলল, শাফেয়ীর জন্ম হয়েছে আবু হানীফার মৃত্যুর দিন। তিনি চার বছর মায়ের পেটে ছিলেন; আবু হানীফার সম্মানার্থে বের হননি। যখন আবু হানীফা মারা গেল তখন তিনি বের হলেন। তার জন্ম হয় রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুর দুইশ বছরের মাথায়।
সে বলল, ও আচ্ছা। তাইলে বোধহয় লোকটা ছিল মালেক।
তখন মালেকী মাযহাবের লোকেরাও হানাফী মাযহাবের লোকদের মত উত্তর দিল।
তখন সে বলল, তাহলে বোধহয় লোকটা ছিল আহমাদ ইবন হাম্বল।
তখন হাম্বলী মাযহাবের লোকেরা শাফেয়ী মাযহাবের লোকদের মত উত্তর দিল।
সেই আল্লামা এবার বাদশাহর দিকে ফিরে বলল: আপনি জেনেছেন যে, চার মাযহাবের প্রধান ব্যক্তিত্বদের কেউ রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুগে ছিল না, এমনকি সাহাবীদের যুগেও ছিল না। এটা তাদের (সুন্নীদের) একটা বিদ‘আত যে তারা তাদের মুজতাহিদ আলেমদের মধ্য থেকে শুধু এই চারজনকে বেছে নিয়েছে। এই চারজনের একজন যে ফতোয়া দিয়ে গেছে এর বিপরীত কোনো ফতোয়া তাদের চেয়ে অনেকগুণ ভাল কোনো মুজতাহিদের জন্য দেওয়াও বিধেয় নয়।
তখন বাদশাহ বলল, তাদের একজনও রাসূলের যুগে বা সাহাবীদের যুগে ছিলেন না?
তখন তারা জবাব দিল সমস্বরে, না।
তখন ঐ শিয়া আলিম বললো, আমরা আমীরুল মুমেনীন আলী আলাইহিস সালামের অনুসারী। যিনি ছিলেন রাসূলের সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাণ, তার ভাই, তার চাচার ছেলে এবং তার প্রতিনিধি।
সে যাই হোক, বাদশাহ যে তালাক দিয়েছেন তা বাতিল (পতিত হবে না)। যেহেতু এর মধ্যে তালাক কার্যকর হওয়ার শর্ত পাওয়া যায়নি। তালাক সঠিক হওয়ার শর্তের মধ্যে একটি শর্ত হল দুজন ন্যায়পরায়ন লোকের উপস্থিতিতে তালাক দেওয়া। বাদশাহ্ কি এমন দুইজন লোকের উপস্থিতিতে তালাক দিয়েছেন? বাদশাহ্ বলল: না। এরপর অন্যান্য আলেমদের সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু করে এবং সবাইকে তার কথা মানতে বাধ্য করে।”[9]
শিয়া আলেম নেয়ামতুল্লাহ্ জাযায়েরী কোত্থেকে আরেকটি অদ্ভুত কাহিনী বর্ণনা করে:
সে বলে, আলী (আলাইহিস সালাম) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: “একবার মুসা ইবন ইমরান এক লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি দু’হাত আকাশের দিকে তুলে দো‘আ করছিল। মুসা ‘আলাইহিস সালাম তো তার প্রয়োজনে চলে গেলেন। তারপর সাতদিন এ লোকটির সাথে মুসা ‘আলাইহিস সালামের আর দেখা হয় নাই। সাতদিন পরে যখন মুসা ‘আলাইহিস সালাম ঐ স্থান দিয়ে আবার যাচ্ছিলেন তখনো দেখলেন যে লোকটি দুহাত তুলে দো‘আয় রত আছে, কান্নাকাটি করছে, তার যা প্রয়োজন তার জন্য দো‘আ করছে। তখন আল্লাহ্ তায়ালা মুসার কাছে অহী পাঠালেন, হে মুসা! এই লোকটি যদি দো‘আ করতে করতে তার জিহ্বা ছিঁড়ে পড়ে যায় তবুও আমি দো‘আ কবুল করব না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে ঐ দরজা দিয়ে না আসে যে দরজা দিয়ে আমি তাকে আসার নির্দেশ দিয়েছি।”
এই বর্ণনার উপর টীকা লিখতে গিয়ে নেয়ামতুল্লাহ্ বলেন, “এই বর্ণনাটি আপনার কাছে অনেকগুলো বিষয় পরিস্কার করে দেয়। যেমন: যারা আমাদের বিরোধী (উদ্দেশ্য, সুন্নীরা) তাদের সব ইবাদত বাতিল। কারণ তারা সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করেনি যে দরজা দিয়ে তাদেরকে প্রবেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও তারা রোযা রাখে, নামাজ পড়ে, হজ্জ করে, যাকাত দেয়, অন্যান্য ইবাদত পালন করে এবং পরিমানে অন্যদের (শিয়াদের) চেয়ে বেশী করে। যেহেতু আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, “তোমরা ঘরের দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করো।”[সূরা বাকারা ১৮৯] এবং মুসলিমদের নিকট সহীহভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী পৌঁছেছে যে, ‘আমি জ্ঞানের শহর, আর আলী হল সে শহরের ফটক’[10] তারা (সুন্নীরা) চার মাযহাবকে তাদের মাঝে ও তাদের রব্বের মাঝে মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং যাবতীয় বিধি-বিধান এসব মাযহাবের কাছ থেকে গ্রহণ করেছে।”[11]
শিয়া আলেম আলী আল-আমেলী আলবায়াযী তার ‘আসসিরাতুল মুসতাকিম ইলা মুসতাহিক্কিত তাকদীম’ গ্রন্থে একটা অধ্যায়ের শিরোনাম দেন এভাবে: “অধ্যায়: চার ইমামের প্রত্যেকের অসংখ্য মাসয়ালার সিদ্ধান্ত ভুল। এই অধ্যায়ে অনেকগুলো পরিচ্ছেদ রয়েছে।
প্রথম পরিচ্ছেদ: যে সকল মাসয়ালায় তারা সকলে একমত হয়েছে।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: যে সকল মাসয়ালায় তারা মতপার্থক্য করেছে।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ: যে সকল মানহানিকর মতামতকে তাদের বলে উল্লেখ করা হয়।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ: বোখারী সম্পর্কে।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ: ইমাম বোখারী ও মুসলিম যে সকল হাদীসকে অস্বীকার করেছেন।’
(তারপর উক্ত লেখক বলেন), এ পর্যায়ে আমরা বলব: প্রথমত এই চার ইমাম সাহাবী নন, বরং তারা তাবেয়ী। আহলুস সুন্নাহরা তাদের নবীকে বাদ দিয়ে এসব ব্যক্তিবর্গের প্রতি মাযহাবের নিসবত করে সন্তুষ্ট। এসব ব্যক্তিরা যারা একে অপরকে ভ্রান্ত বলে আখ্যায়িত করে, এমনকি একে অপরকে লা‘নত পর্যন্ত করে থাকে তাদের প্রতি মাযহাবের নিসবত না করে নবীর প্রতি মাযহাবের নিসবত করা আবশ্যকীয় ব্যাপার ছিল। আর এটা করলে নবীকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হত, তার সম্মান রক্ষা করা হত। কারণ সুন্নীরাই তো বলে যে, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য ধর্মকে পরিপূর্ণ করে দিলাম’[মায়েদা:৩] এই আয়াতের মাধ্যমে তাদের নবীর জীবদ্দশায় তাদের ধর্ম পূর্ণতা পেয়েছে।
এই চার ইমামের মতপার্থক্য যদি দলীলের বিভিন্নতার কারণে হয়ে থাকে তবে তারা যাদেরকে নির্ভরযোগ্য মনে করে সেসব আলেমরাই তাদেরকে ফাসেক ও পথভ্রষ্ট বলে সাক্ষ্য দিয়েছে। আর যদি বলা হয় কোনো প্রকার উপলক্ষ্য ছাড়াই তারা এ ধরনের মত পার্থক্যে লিপ্ত হয়েছে তাহলে তাদেরকে কিভাবে অনুসরণ করা হবে যারা তাদের রব্বের বিধানকে ত্রুটিপূর্ণ মনে করে? আর যদি বলা হয় যুগের প্রয়োজনের তাগিদে তারা এ ধরনের মত পার্থক্য করেছেন তাহলে তো তারা তাদের নবীকে বেইজ্জত করল, যেহেতু তাদের নবীর যামানায় যা ছিল না তা তারা প্রবর্তন করেছে। আর যদি বলা হয় যে, তারা মনে করে যে, শরীয়তের বিধি-বিধান তাদের নবীর চেয়ে তারা ভাল জানে, তাই তাদের নবী যা করতে পারেনি তারা তা করতে পারছে, তাহলে তো বলতে হবে তাদের মতিভ্রম ঘটেছে। শুধু তারা নয় তাদের অগ্রজরাও পথভ্রষ্ট ছিল।….[12]
শিয়া আলেম মুহাম্মদ রেযা রেযায়ী বলেন, “যদি ইসলামের দাবীদার ও সুন্নাহর দাবীদাররা আহলে বাইত ‘আলাইহিস সালামকে ভালোবাসত তাহলে তারা তাদের অনুসরণ করত এবং আবু হানীফা, শাফেয়ী, মালেক ও আহমাদ ইবন হাম্বলের ন্যায় পথভ্রষ্ট লোকদের কাছ থেকে তাদের ধর্মীয় বিধি-বিধান গ্রহণ করত না। যাদের একজনও আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেনি এবং তার কাছ থেকে একটা হাদীসও বর্ণনা করেনি। আর আহলে বাইত ‘আলাইহিমুস সালামকে ভালোবাসা মানে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রতিদান দেওয়া। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘(হে রাসূল) আপনি বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না। শুধু চাই আমার নিকটাত্মীয়দের প্রতি সৌহার্দ্য।’ [সূরা শুরা:২৩] আর আহলে বাইতকে ভালোবাসার লক্ষণ হল- কথা ও কাজে তাদেরকে অনুসরণ করা। কারণ আল্লাহ্ তাআলা বলেন, “যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস তাহলে আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ্ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করে দিবেন।” [সূরা আলে ইমরান: ৩১] এবং তাদের নানার হাদীস তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করা। যেহেতু ঘরের লোক ঘর সম্পর্কে বেশী জানে। চার মাযহাবের ইমামরা তাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে। তা না হলে তাদের এ মেকি ভালোবাসার আর কি আলামত আছে?”[13]
[2] এই রেওয়ায়েতের বর্ণনাকারী।
[3] উসুলুল কাফী (১/২৯২-২৯৩)।
[4] তার নাম ইউসুফ ইবন আহমাদ ইবন ইব্রাহীম আদদারানী আলআওয়া-লী আলবাহরাইনী। তিনি বাহরাইনের ইমামিয়া শিয়াদের আলেম।سلاسل الحديد في تقييد ابن أبي الحديد নামে তার একখানি গ্রন্থ রয়েছে। তিনি ১১৮৬ হিজরীতে কারবালায় মারা যান এবং সেখানেই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। [মু‘জামুল মুয়াল্লিফীন ১৩/২৬৮-৯]
[5] দেখুন: আস সা-রিমুল হাদীদ ফি উনুকি সাহিবি সালাসিলিল হাদীদ, লেখক: আবুল ফাউয মুহাম্মদ আসসুওয়াইদি। পাণ্ডুলিপি (ق৬৪৮/أ) এবং আওয়ালির সালাসিলুল হাদীদ।
[6] তারতিবুল মাদারিক ফি আসমা-ই মান রাওয়া আনিল ইমাম মালেক মিন শুয়ুখিহি (১/১৭৪-১৭৫)।
[7] তিনি হচ্ছেন- কা’ব আল-আহবার ইবন মানে’। তার উপনাম হচ্ছে- আবু ইসহাক। তিনি ইয়াহূদী ছিলেন, পরে ইসলাম গ্রহণ করে মদীনায় আসেন। পরবর্তীতে শামে চলে যান এবং হিম্স এলাকায় বসবাস করেন। তিনি উমর, আয়েশা ও সুহাইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম থেকে হাদীস বর্ণনা করেন। ৩২হিজরীতে তিনি মারা যান। [ইবনুল জাওযির সিফাতুস সাফওয়া (৪/২০৩-২০৫)]
[8] দেখুন: মাজলিসির ‘বিহার’ গ্রন্থে (১০৮/১১৭), বায়াযীর ‘আসসিরাতুল মুসতাকিম’ গ্রন্থে (৩/২০৭), অনুরূপভাবে দেখুন: শায়খুল ইসলামের ‘মিনহাজুস সুন্নাহ্ আননাবাওয়্যিয়াহ্’ (৪/১০৩)। সেখানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের পক্ষ থেকে এ কবিতাগুলোর জবাব দেওয়া হয়েছে।
[9] দেখুন: হিল্লির ‘মুখতালিফুস শিয়া’, পৃষ্ঠা ১১০। ক্বুমের ‘মুআস্সাসাতুন নাশরিল ইসলামী’ থেকে প্রকাশিত, তৃতীয় সংস্করণ ১৪১৭ হিঃ।
[10] এ রেয়াওয়েতটি হাকেম তার ‘মুসতাদরাক’ গ্রন্থে: (৪৬৩৭, ৪৬৩৮, ৪৬৩৯), তাবারানী তার ‘কাবীর’ গ্রন্থে: (১১০৬১), খতীব তার ‘তারিখু বাগদাদে’: (৪/৩৪৮) ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এছাড়া তিরমিযি তার ‘সুনান’ গ্রন্থে: ৫/৩৩৭, নং ৩৭২৩ আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। আলবানী তার ‘আল জামেউস সাগীর’ গ্রন্থে এ বর্ণনাটিকে বানোয়াট বলে রায় দিয়েছেন (নং ৩২৪৭)।
[11] দেখুন: ‘কাসাসুল আম্বিয়া’ লেখক: নেয়ামতুল্লাহ্ জাযায়েরী, তাহকীক: আলহাজ্জ মুহসিন (পৃ ৩৪৪), দারুল বালাগাহ্ প্রকাশনী, বৈরুত। তৃতীয় সংস্করণ (১৪১৭ হিঃ)।
[12] আলী আলবায়াযীর ‘আসসিরাতুল মুস্তাকিম ইলা মুসতাহিক্কিত তাকদীম’ (৩/১৮১), প্রকাশক: নাশরুল মাকতাবা আলমুরতাজাউয়্যিয়্যাহ লি এহইয়া ইল আসার আলজাফরিয়া, হায়দরী প্রেস।
[13] কিতাব: কাযাবু আলাশ শিয়া, লেখক: মুহাম্মদ রেযা রেযায়ী (পৃ ২৭৯)।