কবর যিয়ারত ও কবরবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন সম্মান ও মর্যাদার দ্বারা ওসীলা করা ইসলামহাউজ.কম
সম্মান ও মর্যাদার দ্বারা ওসীলা করা - ২

আর সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমার মনে পড়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে আবু তালিবের বক্তব্য, তিনি বলেছিলেন,

«وَأَبْيَضَ يُسْتَسْقَى الغَمَامُ بِوَجْهِهِ ... ثِمَالُ اليَتَامَى عِصْمَةٌ لِلْأَرَامِلِ»

“আর তিনি শুভ্র, তাঁর চেহারার বিনিময়ে বৃষ্টি লাভ হয়, তিনি ইয়াতিমদের ভারবহনকারী এবং বিধবাদের আশ্রয়স্থল”।

সুতরাং এটা ছিল বৃষ্টি ও অনুরূপ কাজে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বারা তাদের ওসীলা গ্রহণ; কিন্তু এটা কেবল তার জীবদ্দশাতেই ছিল, তার মৃত্যুর পরে তারা আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর দ্বারা সে রকম ওসীলা করেছিলেন, যে রকম ওসীলা ও বৃষ্টি প্রার্থনা তারা ইতোপূর্বে রাসূলের দ্বারা করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তারা তার কাছে আর কোনো প্রার্থনা করেন নি। তার অনুপস্থিতিতেও নয়, তার কবরের নিকটও নয় এবং অন্য কোনো কবরেও করেন নি।

অনুরূপভাবে মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার সময়ে ইয়াযিদ ইবন আসওয়াদ আল জুরাশীর মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য দো‘আ করতেন। আর তিনি বলতেন, “হে আল্লাহ, আমরা আমাদের উত্তম ব্যক্তি দ্বারা আপনার নিকট শাফায়াত চাচ্ছি। হে ইয়াযীদ আল্লাহর দিকে তোমার হাত উত্তোলন কর। ফলে তিনি তার হাত উত্তোলন করলেন এবং দো‘আ করলেন। আর তারাও তার সাথে দো‘আ করল, ফলে বৃষ্টি হলো।”

এ কারণে আলেমগণ বলেন, ভাল ও কল্যাণময় ব্যক্তির মাধ্যমে বৃষ্টির প্রার্থনা করা মুস্তাহাব। অতঃপর যখন সেখানে আহলে বাইতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাওয়া যায় তখন তা হবে অধিক উত্তম; কিন্তু কোনো আলেমই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তির মৃত্যুর পর বা তার অনুপস্থিতে ওসীলা করা ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা শরী‘আতসম্মত বলে উল্লেখ করেন নি। আর তারা কোনো বৃষ্টি প্রার্থনা, কিংবা বিপদাপদে সাহায্য চাওয়া বা অন্যান্য কোনো দো‘আর ক্ষেত্রেই এ ধরনের ওসীলা করা মুস্তাহাব বলেন নি। অথচ ‘দু‘আ হচ্ছে ইবাদতের সার।

আর ইবাদতের ভিত্তি হলো সুন্নাহ ও অনুসরণ। প্রবৃত্তি ও নব আবিস্কার নয়। একমাত্র যা শরী‘আহসম্মত তা দ্বারাই ইবাদত করা যাবে। প্রবৃত্তি ও নব আবিস্কার দ্বারা ইবাদত করা যাবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُ﴾ [الشورا: ٢١]

“নাকি তাদের এমন কতগুলো শরীক রয়েছে, যারা এদের জন্য দীন থেকে শরী‘আত প্রবর্তন করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেন নি?” [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ২১]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿ٱدۡعُواْ رَبَّكُمۡ تَضَرُّعٗا وَخُفۡيَةًۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِينَ ٥٥﴾ [الاعراف: ٥٥]

“তোমরা বিনিতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৫]

আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«سيكون بعدي قوم من هذه الأمة يعتدون في الدعاء والطهور»

“অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে এক সম্প্রদায় হবে যারা দো‘আ ও পবিত্রতার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করবে।[1]

>
[1] আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৬; বায়হাকি (১/১৯৭)।