লগইন করুন
সর্বাধিক মারাত্মক যুলুম ও অজ্ঞতা হলো, মানুষের কাছে মান-সম্মান ও মর্যাদা তালাশ করা অথচ তোমার অন্তর আল্লাহকে সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করা থেকে বিমূখ (অর্থাৎ আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরোয়া করে না)। সৃষ্টিকুলকে সম্মান ও তাকে মর্যাদা দেওয়া যেন মনে হয় তুমি আল্লাহকে সম্মান ও মর্যাদা দিচ্ছ না ও তার আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরোয়া করছ না। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,
﴿ما لَكُمۡ لَا تَرۡجُونَ لِلَّهِ وَقَارٗا١٣﴾ [نوح: ١٣]
“তোমাদের কী হল, তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্বের পরোয়া করছ না?” [সূরা নূহ, আয়াত: ১৩]
এখানে উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যক্তি আল্লাহকে, তাঁর বাণীকে ও তিনি যে ইলম ও হিকমত দান করেছেন সেগুলোকে সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করে না, সে কীভাবে মানুষের থেকে সম্মান ও মর্যাদা প্রত্যাশা করে? আল-কুরআন, ইলম ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণীতে রয়েছে সত্যের সম্পর্ক, সতর্কতা, অন্যায় থেকে বাধাদান ও বিরত থাকার ধমক, তোমার জন্য বিজ্ঞজনের দৃঢ় সতর্কতা, অতন্দ্র প্রহর ও বাধাদান। সুতরাং এতে যা কিছু এসেছে তা তোমার জন্য উপদেশ, এবং যা কিছু তোমাকে বাধা দেয় তা তোমার জন্য নসিহত। এতদসত্ত্বেও তুমি অন্যেক কাছে মান-সম্মান ও মর্যাদা তালাশ করো! তুমি তো এমন মুসীবতে পতিত ব্যক্তির মতো যাকে উপদেশ বা সতর্কতা করলে কিছুই তার কোন কাজে আসে না অথচ সে অন্যকে উপদেশ ও ধমক দেয় যে তার মুসিবত দেখে শিক্ষা লাভ করো। সুতরাং তার এ উপদেশ (উপমা) উক্ত ব্যক্তির মধ্যে কোন প্রভাব ফেলে নি, অথচ তার অবস্থা অবলোকনকারীকে সে তিরস্কার করতে চায়।
সত্যিকারে কোন কিছু চাওয়া ব্যক্তি তার ব্যক্তিসত্ত্বা থেকে কিছু হারালে তখন তিনি অন্তরে ও হৃদয়ে তা পরিপূর্ণ করে নেয়, দুনিয়ার কিছু ক্ষতি হলে আখিরাতে তা বাড়িয়ে দেয়, দুনিয়ার কোন ভোগ-বিলাস থেকে নিষেধ করা হলে তার বিনিময়ে তাকে আখিরাতের আনন্দ উপভোগ বৃদ্ধি করে দেয়, সে উদ্বিগ্নতা, দুঃখ-বেদনা ও বিষণ্নতায় পতিত হলে আখিরাতে এর পরিবর্তে আনন্দ ও সুখ প্রাপ্ত হয়।
অতএব, দুনিয়াতে দৈহিক, আর্থিক, ভোগ-বিলাস, ক্ষমতা-প্রভাব-প্রতিপত্তি ও নেতৃত্বে যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এর বিনিময় যদি আখিরাতে কল্যাণ অধিক বয়ে আনে তা ব্যক্তির জন্য রহমতস্বরূপ ও কল্যাণকর অথবা এগুলো তার প্রকাশ্য বা অপ্রকাশ্য গুনাহর শাস্তিস্বরূপ অথবা প্রকাশ্য ও গোপনীয় ওয়াজিব কাজ বর্জন করার শাস্তিস্বরূপ। কেননা দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হওয়া এ চারটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহর কাছেই তাওফীক কামনা করছি।