কবরের শাস্তি ও শান্তি সম্পর্কে কতিপয় মাসআলা বারযাখী জীবন বারযাখী জীবন সম্পর্কে কতগুলো মাসআলা ইসলামহাউজ.কম
সপ্তম মাসআলা

মৃত ব্যক্তিগণ জীবিত ব্যক্তিদের যিয়ারত এবং তাদেরকে সালাম দেওয়া সম্পর্কে জানতে পারে কি না?

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. এ মাসআলা নিয়ে তার কিতাব আর রূহের প্রথম দিকে আলোচনা করে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, মৃত ব্যক্তি নিজে তার যিয়ারতকারীকে চিনে এবং সালামের উত্তর দেয়, তিনি এর প্রমাণও নিয়ে এসেছেন।[1]

প্রমাণপঞ্জি: ইবন আব্দুল বার এবং ইবন আবুদ পৃথিবী ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “কোনো মুসলিম পৃথিবীয় তার কোনো পরিচিত মৃত ব্যক্তির কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম কালে তার ওপর সালাম দিলে আল্লাহ তার রূহকে ফিরিয়ে দেন যেন সে সালামের উত্তর দিতে পারে।”[2]

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতের জন্য বিধান করে তাদেরকে শিখিয়ে গিয়েছেন যে, তারা যখন কবর যিয়ারত করবে তখন বলবে:

«سلام عليكم أهل الديار من المؤمنين والمؤمنات وإنا إن شاء الله بكم لاحقون، يرحم الله المستقدمين منا ومنكم والمستأخرين، نسأل الله لنا ولكم العافية».

“হে কবরবাসী মুমিন ও মুসলিমগণ! তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, আর অতি সত্বর আমরা তোমাদের সাথে মিলিত হব ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মধ্যে অগ্রে ও পরে অগমনকারীদেরকে রহমত করুন, আল্লাহর নিকট আমাদের এবং তোমাদের সুস্থতা কামনা করছি।”[3]

এ সালাম, সম্বোধন এবং আহ্বান উপস্থিত ব্যক্তির জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে যে ব্যক্তি শুনতে পায়, যাকে সম্বোধন করা হয় সে তা বুঝে এর উত্তর দেয় যদিও সালামদাতা সালামের উত্তর শুনতে পায় না। অন্যথা এ সম্বোধন ও সালাম হতো কোনো শূন্য ও জড় পদার্থ্যের জন্য, আর তা অসম্ভব ব্যাপার। তাছাড়া যদি তারা তাদের ওপর সালামকারীদের অনুভব না করতে পারে তাহলে যিয়ারতকারী বলা ঠিক হবে না। কেননা যাকে যিয়ারত করা হয় সে যদি তার যিয়ারতকারীকে জানতে না পারে তবে এ কথা বলা ঠিক হবে না যে, সে তাকে যিয়ারত করেছে।আল্লামা ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, সালাফগণ এর ওপর ঐক্যমত এবং তাদের থেকে আছার বা বাণী এসেছে যে, মৃত ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তির যিয়ারতকে জানতে পেরে খুশী হয়। মৃতদের না শুনার ব্যাপারে জ্বলন্ত নির্দশন- আল্লামা আল আলুসীর লেখা ও এর ভূমিকায় আল্লামা নাসিরুদ্দীন আল আলবানী।

[1] আর রূহ, পৃষ্ঠা নং ৫৩।

[2] হাফেয ইরাকী ইহয়াউল উলূম ৪/৫২২ এ হাদীসের তাখরীজ করে উপকার করেছেন, ইবন আব্দুল বার তামহীদে ও আল ইস্তেদরাকে সহীহ সনদে নিয়ে এসেছেন ইবন আব্বাসের হাদীস এবং আরও যারা একে সহীহ বলেছেন তন্মধ্যে হাফেয আব্দুল হক আল আশবিলী। শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়া বলেছেন, ফাতাওয়া ২৪/৩৩১ ইবন মোবারক বলেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তা সাব্যস্ত রয়েছে।

[3] সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৭৪।