লগইন করুন
শিশুদের তা‘লীম-তরবিয়ত শিক্ষা-দীক্ষা দান, আত্মিক ও মানসিক অনুপ্রেরণা দান এবং সার্বিক কল্যাণ কামনা একমাত্র বাবা-মা, অভিভাবক ও পরিবারই সর্বাধিক-ভাবে করে থাকে। তার পাশাপাশি শিক্ষকরা তাদের সহযোগী হিসেবে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখতে পারে। তারাই বাবা-মা ও পরিবারের ন্যায় শিশুদের তা‘লীম-তরবিয়ত এবং আত্মিক-মানসিক বিকাশ ঘটাতে পারে। কারণ, বর্তমান সমাজ সাধারণত তাদের হাতে শিশু সন্তানদের ন্যস্ত করে দেন। শিক্ষকরাই তা‘লীম-তরবিয়তের মাধ্যমে তাদের আত্মিক ও মানসিক বিকাশ সাধন করে থাকেন।
এজন্য শিক্ষকদের সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং শিক্ষা পদ্ধতি, নিয়ম-নীতি ইত্যাদি বিষয়ের জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তার প্রভাব শিশুদের ওপর পড়ে থাকে। বাবা-মা ও পরিবারের তা‘লীম-তরবিয়ত আর চেষ্টা প্রচেষ্টার নিয়ম পদ্ধতি যদি শিক্ষকের তা‘লীম-তরবিয়ত, নিয়ম-পদ্ধতির সাথে মিলে যায় বা বিপরীত ধর্মী না হয়, তাহলে খুব সহজেই তাদের তা‘লীম-তরবিয়ত ও চেষ্টা প্রচেষ্টা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে সুফল বয়ে নিয়ে আসবে।
কিন্তু বর্তমান উন্নয়নশীল বিশ্বে শিক্ষকদের ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তা‘লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষা-পদ্ধতিগত দুর্বলতা, অসম্পূর্ণতা, ভুলভ্রান্তি ইত্যাদি এবং পশ্চিমা পরিকল্পনার অন্ধ অনুকরণের ফলে শিশুদের তা‘লীম-তারবিয়াতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। নানা ধরণের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে আমাদের সন্তান ও শিশুদের আত্মিক ও মানসিক বিকাশ আশানুরূপ হচ্ছে না।
এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই শিক্ষক এবং সাধারণ শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষক বিষয়ক সমস্যায় দুর্বলতা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং শিক্ষা বিষয়ক নিয়ম-নীতি, সিস্টেম পদ্ধতি ইত্যাদি জাতির বিবেকবান ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে সকলের সমন্বয়ে যথাযথ একটি সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। যাতে আমাদের শিশু সন্তানদেরকে সঠিকভাবে তা‘লীম-তরবিয়ত ও শিক্ষা-দীক্ষা প্রদান করা সম্ভব হয়।
একজন শিক্ষক অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা ও পরিবারের ন্যায় ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা শিশু সন্তানের সার্বিক কল্যাণ কামনা করে সঠিক তা‘লীম-তরবিয়তের মাধ্যমে তাকে সফলতায় পৌঁছিয়ে দিতে পারে। কিন্তু একজন শিক্ষক একটি শিশুকে ততক্ষণ পর্যন্ত সফলতায় পৌঁছানোর ভূমিকা পালন করতে পারবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিজের ব্যক্তিগত জীবন সামাজিক জীবনসহ সার্বিক বিষয় পরিতৃপ্ত ও সচেতন না হবে, তেমনিভাবে তা‘লীম-তরবিয়ত, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ, সিলেবাস, কারিকুলাম, নিয়ম-পদ্ধতি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকবে।
এজন্য জাতির বিবেকবান ব্যক্তিবর্গ, চিন্তাবিদ, গবেষক, পরিশোধক এবং শিক্ষাবিদদেরকে অবশ্যই শিক্ষকদের সার্বিক মান-উন্নয়নসহ সাধারণ ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দূরীভূত করার জন্য একান্ত সহযোগিতা করতে হবে।