লগইন করুন
হাজীগণ হাজ্জের যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার পরে মিনা থেকে রওনা হয়ে নিজ ঘরে ফিরার ইচ্ছা করলে বায়তুল্লাহর সাত চক্কর (বিদায়ী তাওয়াফ) না করে বিদায় হবে না। কারণ, নাবী (সা.) হাজ্জের শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করেছেন এবং তিনি বলেছেন:
لِتَأْخُذُوا عَنِّيْ مَنَاسِكَكُم
তোমরা আমার নিকট হতে তোমাদের হাজ্জ ও উমরার বিধি-বিধান গ্রহণ কর।[1]
আর এ তাওয়াফ মক্কা থেকে বিদায়ের পূর্বে সর্বশেষ কাজ হওয়া আবশ্যক। কারণ, আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হাদীসে আছে, তিনি বলেন, লোকেরা হাজ্জের শেষে যে যেখান থেকে ইচছা রওনা হয়ে যেত। তখন নাবী (সা.) বলেন:
لَا يَنْفِرَنَّ أَحَدٌ حَتَّى يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِ بِالْبَيْتِ
তোমাদের কোন ব্যক্তি যেন বায়তুল্লাহর শেষ সাক্ষাৎ (তাওয়াফ) না করা পর্যন্ত হাজ্জ শেষে বিদায় না হয়।[2]
সুতরাং বিদায়ী তাওয়াফের পরে মক্কায় অবস্থান করা জায়েয নয়। অনুরূপ বিদায়ী তাওয়াফের পরে সফরের প্রস্ত্ততি ছাড়া যেমন, মাল-সামান যানবাহনে উঠানো বা সাথী-সঙ্গীর অপেক্ষা করা কিংবা গাড়ীর অপেক্ষা করা- অন্য কোন কাজে ব্যস্ত হওয়াও জায়েয নয়। তাই যদি কেউ সফরের প্রস্ত্ততি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে মক্কায় বিলম্ব করে তাহলে তার পুনঃরায় তাওয়াফ করা আবশ্যক হয়ে পড়বে, যাতে করে তার শেষ কাজ কা’বা ঘরের তাওয়াফ হতে পারে।
আর বিদায় তাওয়াফ হায়য এবং নিফাস অবস্থায় থাকা মহিলাদের প্রতি ওয়াজিব নয়। এর দলীল আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত হাদীস, তিনি বলেন:
أُمِرَ النَّاسُ أَنْ يَكُونَ آخِرُ عَهْدِهِمْ بِالْبَيْتِ إِلَّا أَنَّهُ خُفِّفَ عَنْ الْحَائِضِ
লোকদেরকে (নাবী (সা.)-এর পক্ষ হতে) নির্দেশ দেয়া হল যে, তাদের শেষ সাক্ষাৎ যেন বায়তুল্লাহর সাথে হয়। তবে হায়য অবস্থায় থাকা মহিলাকে ছাড় দেয়া হয়েছে।[3]
আরো আয়িশা (রা.) বর্ণিত, তিনি বলেন, হুয়াইয়ের মেয়ে সাফিয়া (রা.)-এর তাওয়াফে ইফাযাহ সম্পূর্ণ করার পর হায়য (মাসিক ঋতু) শুরু হয়ে যায়। আয়িশা (রা.) বলেন: তখন আমি তার হায়যের বিষয়টি রসূল (সা.)-এর নিকট আলোচনা করি। তিনি (সা.) বলেন, তাহলে কি সে আমাদেরকে বিদায়ে বিলম্ব করতে বাধ্য করবে? তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! সে তো কা’বা ঘরের তাওয়াফে ইফাযাহ করে নেয়ার পর তার হায়য (মাসিক ঋতু) এসেছে। তখন নাবী (সা.) বললেন, তাহলে সে মক্কা হতে প্রস্থান করতে পারবে।[4] আর নিফাস (সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পরের রক্তক্ষরণ) অবস্থায় থাকা মহিলার বিধান ঋুতুবতী মহিলার অনুরূপ। কারণ, যেমন হায়য অবস্থায় তাওয়াফ শুদ্ধ হয় না ঠিক তেমনি নিফাস অবস্থায়ও তাওয়াফ জায়েয নয়।
>[2]. সহীহ মুসলিম ১৩২৭।
[3]. সহীহ বুখারী ১৭৫৫ ও সহীহ মুসলিম ১৩২৮।
[4]. সহীহ বুখারী ১৭৩৩, সহীহ মুসলিম ১২১১।