শারহু মাসাইলিল জাহিলিয়্যাহ ৪১. আল্লাহকে অপূর্ণাঙ্গ ও ত্রুটিপূর্ণ গুণে গুণান্বিত করা শাইখ ড. ছলিহ ইবনে ফাওযান আল ফাওযান
আল্লাহকে অপূর্ণাঙ্গ ও ত্রুটিপূর্ণ গুণে গুণান্বিত করা

আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অপূর্ণাঙ্গতার সম্বন্ধ করা। যেমন, সন্তান গ্রহণ, প্রয়োজন অনুভব ও উপভোগ করা। অথচ এসব গুণাবলীর কতিপয় হতে পাদ্রীকেও পবিত্র মনে করা হয়।

...........................................

ব্যাখ্যা: পূর্ণাঙ্গতার বিপরীত হলো অপূর্ণাঙ্গতা। আল্লাহ তা‘আলার প্রতি অপূর্ণাঙ্গতার সম্বন্ধ করা বলতে তার প্রভূত্বের উপর যুলুম করা। যেমন, তার প্রতি সন্তানের সম্বোধন করা। কেননা, পিতার সন্তান প্রয়োজন হয়। আর সন্তান পিতার সাদৃশ্য হয়। ইয়াহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র। আর খ্রিষ্টানরা বলে, ঈসা মাসিহ আল্লাহর পুত্র। অপরদিকে, আরবের মুশরিকরা বলে, ফেরেশতামন্ডলী আল্লাহর কন্যা। অথচ খ্রিষ্টানরা তাদের পাদ্রীদেরকে স্ত্রী-সন্তানাদী থেকে পবিত্র মনে করে। তাদের দাবী অনুযায়ী এটা অপূর্ণাঙ্গতা হিসাবে গণ্য। এ সত্ত্বেও তারা আল্লাহ তা‘আলাকে পবিত্র মনে করে না, অথচ তাদের পন্ডিতদেরকে তারা পবিত্র বলে ঘোষণা দেয়, এটা কেমন!

অনুরূপভাবে আরব জাতি কন্যা সন্তানকে অপছনদ করতো অথচ আল্লাহ তা‘আলার দিকে কন্যা সন্তানকে তারা সম্পৃক্ত করতো। তারা নিজে যা অপছন্দ করতো তা আল্লাহর দিকে আরোপ করে সেটাকেই দোষ-ত্রুটি ও অপূর্ণাঙ্গতা বলে আখ্যা দিতো।

(وَيَجْعَلُونَ لِلَّهِ الْبَنَاتِ سُبْحَانَهُ وَلَهُمْ مَا يَشْتَهُونَ) [النحل : 57]

আর তারা আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান নির্দিষ্ট করে। তিনি পবিত্র এবং নিজেদের জন্য তা (নির্দিষ্ট করে) যা তারা পছন্দ করে (সূরা আন নাহাল ১৬: ৫৭)।

এ সম্পর্কিত একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়, একজন মুসলিম আলেম রোমের (পারস্যের) এক রাজার উদ্দেশ্যে বার্তা নিয়ে রওনা হলেন। অতঃপর তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, রাজা মহোদয়! আপনার স্ত্রী-সন্তানাদী কেমন আছে? এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত সকলেই এ মর্মে রাগান্বিত হলো যে, এ আলেম কিভাবে তাদের রাজাকে স্ত্রী-সন্তানাদী দ্বারা গুণান্বিত করছে? অতঃপর আলেম তাদেরকে বললেন, আপনাদের রাজাকে আপনারা স্ত্রী-সন্তানাদী থেকে কলুষ মুক্ত মনে করেন, অথচ আল্লাহ তা‘আলার দিকে তাদেরকে সম্পৃক্ত করেন?! আল্লাহ তা‘আলাকে আপনারা পবিত্র মনে করেন না। আলেম এ ব্যাপারে তাদেরকে বুঝালেন, তর্ক-বিতর্ক করলেন ও অত্যাধিক লজ্জা দিলেন।