লগইন করুন
ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন,
وَالْمِعْرَاجُ حَقٌّ وَقَدْ أُسْرِيَ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعُرِجَ بِشَخْصِهِ فِي الْيَقَظَةِ إِلَى السَّمَاءِ ثُمَّ إِلَى حَيْثُ شَاءَ اللَّهُ مِنَ الْعُلَا وَأَكْرَمَهُ اللَّهُ بِمَا شَاءَ وَأَوْحَى إِلَيْهِ مَا أَوْحَى مَا كَذَبَ الْفُؤَادُ مَا رَأَى فَصَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الْآخِرَةِ وَالْأُولَى
আর মিরাজ সত্য, নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতের বেলা আকসায় ভ্রমণ করানো হয়েছে। অতঃপর তাকে জাগ্রত অবস্থায় স্ব-শরীরে উর্ধ্ব আকাশে উত্থিত করা হয়েছে। সেখান থেকে আল্লাহর ইচ্ছা অনুসারে আরো উর্ধ্বে নেয়া হয়েছে। সেখানে আল্লাহ স্বীয় ইচ্ছা অনুসারে তাকে সম্মান প্রদর্শন করেছেন এবং তাকে যা প্রত্যাদেশ করার ছিল তা করেছেন। তিনি যা দেখেছেন তার অন্তর তা মিথ্যা বলেনি। আল্লাহ তার উপর আখেরাতে এবং দুনিয়ার জগতে সালাত (দরুদ) ও সালাম নাযিল করুন।
....................................................
ব্যাখ্যা: المعراج শব্দটি مفعال এর ওজনে ব্যবহৃত হয়েছে। উপরে উঠার যন্ত্রকে المعراج বলা হয়। এটি সিড়ির মতই। কিন্তু তা কেএ, তা জানা সম্ভব নয়। এর হুকুম অন্যান্য গায়েবী বিষয়ের হুকুম একই রকম। আমরা এগুলোর উপর ঈমান আনয়ন করি। কিন্তু এগুলোর কাইফিয়্যাত জানার চেষ্টা করি না। ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্ব-শরীরে জাগ্রত অবস্থায় রাতের বেলায় বাইতুল মাকদিস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছে। আলেমগণ এ ইসরা বা রাতের ভ্রমণ সম্পর্কে মতভেদ করেছেন।
কেউ কেউ বলেছেন, ইসরা হয়েছিল ‘রূহ’এর মাধ্যমে। ঐ রাতে তার শরীর থেকে রূহ বিচ্ছিন্ন হয়নি। ইবনে ইসহাক আয়েশা ও মুআবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। ইমাম হাসান বসরী রহিমাহুল্লাহ থেকেও অনুরূপ কথা বর্ণিত হয়েছে। তবে ইসরা ও মিরাজ হয়েছিল স্বপ্নযোগে অথবা শরীর ব্যতীত শুধু ‘রূহ’এর মাধ্যমে, -এ দু’কথার মধ্যকার পার্থক্য জানা আবশ্যক। উভয় কথার মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। আয়েশা ও মুআবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা এ কথা বলেননি যে, ইসরা ও মিরাজ হয়েছিল স্বপ্নযোগে। তারা কেবল বলেছেন, ‘রূহ’ এর মাধ্যমে মিরাজ হয়েছে। ঐ রাতে তার পবিত্র দেহ থেকে রূহ বিচ্ছিন্ন হয়নি। সুতরাং যারা স্বপ্নযোগে মিরাজ হওয়ার কথা বলেছে তাদের কথার মধ্যে এবং আয়েশা ও মুআবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমার কথার মধ্যে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। ঘুমন্ত ব্যক্তি স্বপ্নে যা দেখে, তা কখনো ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য জানা বিষয়ের উদাহরণ স্বরূপ পেশ হয়। যেমন কেউ দেখল যে, সে আকাশে উড়ছে, মক্কায় যাচ্ছে। অথচ তার রূহ উপরে উঠেনি এবং মক্কা যায়নি। স্বপ্ন সম্রাট কেবল তার জন্য একটি উদাহরণ পেশ করেছে। সুতরাং আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা এটি উদ্দেশ্য করেননি যে, মিরাজ হয়েছিল; বরং তার এ কথা বলা উদ্দেশ্য ছিল, মিরাজ হয়েছিল ‘রূহ’ সহকারে। রূহ প্রথমে দেহ থেকে আলাদা হয়েছিল, অতঃপর দেহের মধ্যে ফিরে এসেছে। আয়েশা ও মুআবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা এটিকে একমাত্র নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বৈশিষ্ট্য হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। তিনি ছাড়া অন্যদের রূহ মৃত্যুর পূর্বে আসমানে পরিপূর্ণরূপে আরোহন করার মর্যাদা অর্জন করতে পারবে না।
কেউ কেউ বলেছেন, মিরাজ হয়েছে দু’বার। একবার জাগ্রত অবস্থায় এবং আরেকবার স্বপ্নের মাধ্যমে। এ মতের সমর্থকগণ সম্ভবত শরীকের হাদীছ, নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: ثم استيقظت ‘‘অতঃপর আমি জাগ্রত হলাম’’ এবং এ সম্পর্কে অন্যান্য হাদীছের মধ্যে সমন্বয় করতে চেয়েছেন। আবার কেউ কেউ জাগ্রত অবস্থাতেই দু’বার মিরাজ হওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। একবার নবুওয়াতের পূর্বে আরেকবার নবুওয়াতের পরে।
কেউ কেউ বলেছেন, মিরাজ হয়েছিল তিনবার। নবুওয়াতের পূর্বে একবার এবং নবুওয়াতের পরে দু’বার। এ শ্রেণীর লোকদের কথা থেকে বুঝা যাচ্ছে, মিরাজ সম্পর্কিত হাদীছের কোনো শব্দ যখন তাদের কাছে অস্পষ্ট হয়েছে তারা উভয় বর্ণনার মধ্যে সমন্বয় করতে গিয়ে একটি মিরাজ বাড়িয়ে দিয়েছেন। এটি হলো দুর্বল মুহাদ্দিছদের কাজ। অন্যথায় মুহাদ্দিছদের ইমামগণের মতে নবুওয়াতের পরে হিজরতের পূর্বে নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কী জীবনে মিরাজ কেবল একবারই হয়েছিল। কেউ কেউ বলেছেন, হিজরতের একবছর দু’মাস আগে মিরাজ হয়েছিল। ইমাম ইবনে আব্দুল বার এ কথা উল্লেখ করেছেন।
ইমাম শামসুদ্দীন ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমি ঐসব লোকদের জন্য আশ্চর্যবোধ করি, যারা বহুবার মিরাজ হওয়ার কথা বলে থাকেন। তারা কিভাবে ধারণা করতে পারে যে, প্রত্যেকবারই ৫০ ওয়াক্ত ছ্বলাত ফরয করা হয়েছে। অতঃপর প্রত্যেকবার মুসা আলাইহিস সালাম এবং তার প্রভুর মাঝে যাতায়াত করার মাধ্যমে ৫ ওয়াক্তে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকবারই তিনি বলেছেন, আমি আমার ফরয ঠিক রাখলাম; কিন্তু আমার বান্দাদের উপর কমিয়ে দিলাম। অতঃপর দ্বিতীয়বার ৫০ ওয়াক্তে ফিরিয়ে নিলেন। অতঃপর কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্তে পরিণত করলেন।
হাদীছের হাফেযগণ বলেন, বর্ণনাকারী শারীক, ইসরা ও মিরাজের হাদীছের বেশ কিছু শব্দে ভুল করেছেন। ইমাম মুসলিম রহিমাহুল্লাহ শারীক থেকে সনদসহ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। অতঃপর ইমাম মুসলিম বলেন, শারীক হাদীছ বর্ণনা করতে গিয়ে পরের শব্দ আগে এনেছেন এবং আগের শব্দ পরে উল্লেখ করেছেন ও শব্দ কমবেশী করেছেন। তিনি হাদীছকে পূর্ণরূপে উল্লেখ করেননি। কিন্তু তিনি খুব সুন্দর কাজ করেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহর কথা এখানেই শেষ।
ইসরা বা রাতের ভ্রমণের ব্যাপারে সঠিক কথা হলো, তাকে রাতের বেলা জাগ্রত অবস্থায় মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল। জিবরীলের সঙ্গে বোরাকের[1] উপর আরোহন করে তিনি বাইতুল মাকদিসে গিয়ে নামলেন। বাইতুল মাকদিসে নেমে তিনি নাবীদের ইমাম হয়ে ছ্বলাত পড়ালেন। এ সময় মসজিদের দরজার হাতলের সাথে বোরাক বেধেছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি বেতেল হামে অবতরণ করেছেন এবং সেখানে ছ্বলাত পড়েছেন। এ বর্ণনা নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত নয়।
অতঃপর সেই রাতে বাইতুল মাকদিস থেকে তাকে প্রথমত দুনিয়ার আসমানে উঠানো হয়েছিল। প্রথম আসমানের দরজায় গিয়ে জিবরীল আলাইহিস সালাম নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য দরজা খুলতে বললেন। তাদের জন্য দরজা খোলা হলো। সেখানে তিনি মানব জাতির পিতা আদম আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলেন। তিনি আদম আলাইহিস সালামকে সালাম দিলেন। আদম আলাইহিস সালাম তাকে স্বাগত জানালেন এবং সালামের জবাব দিলেন।
অতঃপর তাকে দ্বিতীয় আসমানে উঠানো হলো। এখানে এসে দরজা খুলতে বলা হলো। দ্বিতীয় আসমানে তিনি ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া এবং ঈসা ইবনে মারইয়ামকে দেখতে পেলেন। তাদের সাথে সাক্ষাৎ করার সময় সালাম দিলেন। তারা তার সালামের জবাব দিলেন এবং তাকে স্বাগত জানালেন ও তার নবুওয়াতের স্বীকৃতি প্রদান করলেন।
অতঃপর তৃতীয় আসমানে উঠে ইউসুফ আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলেন। ইউসুফ আলাইহিস সালামকে সালাম দিলে তিনি সালামের জবাব দিলেন এবং তাকে স্বাগত জানালেন ও তার নবুওয়াতের স্বীকৃত প্রদান করলেন।
অতঃপর তিনি চতুর্থ আসমানে গেলেন। সেখানে ইদরীস আলাইহিস সালামের সাথে দেখা করলেন। তিনি ইদরীস আলাইহিস সালামকে সালাম জানালেন। ইদরীস আলাইহিস সালাম সালামের জবাব দিলেন, তাকে স্বাগত জানালেন এবং তার নবুওয়াতের স্বীকৃত প্রদান করলেন।
অতঃপর পঞ্চম আসমানে গিয়ে হারুন বিন ইমরান আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলেন। তাকে সালাম দেয়া হলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জবাব দিলেন, তাকে স্বাগত জানালেন এবং তার নবুওয়াতের স্বীকৃতি প্রদান করলেন।
অতঃপর ষষ্ঠ আসমানে গিয়ে মুসা আলাইহিস সালামের সাথে সাক্ষাৎ করলে মুসা সালামের জবাব দিলেন, তাকে স্বাগত জানালেন এবং তার নবুওয়াতের স্বীকৃতি প্রদান করলেন। তিনি যখন মুসাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন, তখন মুসা আলাইহিস সালাম কাঁদতে লাগলেন। মুসাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, আমার কাঁদার কারণ হলো এ ছেলেকে আমার পরে নাবী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার উম্মত থেকে আমার উম্মতের চেয়ে বেশী সংখ্যক লোক জান্নাতে পাঠানো হবে।
অতঃপর তাকে সপ্তম আসমানে উঠানো হলো। সপ্তম আসমানে তিনি ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে দেখতে পেলেন। ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে সালাম দিলে তিনি তার সালামের জবাব দিলেন, তাকে স্বাগত জানালেন এবং তার নবুওয়াতের স্বীকৃতি প্রদান করলেন। অতঃপর তাকে সিদরাতুল মুনতাহায়[2] নেয়া হলো। সেখানে তার জন্য বাইতুল মামুরও উন্মুক্ত করা হলো।
অতঃপর তাকে মহাপরাক্রমশালী ও পবিত্র নামসমূহের অধিকারী আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া হলো। তিনি তার অতি নিকটবর্তী হলেন। তখন তার মাঝে ও তার প্রভুর মাঝে দুই ধনুক অথবা তার চেয়েও কম ব্যবধান ছিল। তখন আল্লাহ্ তার বান্দার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করবার ছিল তা প্রত্যাদেশ করলেন। এরপর নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছ্বলাত ফরয করা হলো। ফিরে আসার সময় মুসা আলাইহিস সালামের কাছ দিয়ে অতিক্রম করলেন। মুসা আলাইহিস সালাম জিজ্ঞাসা করলেন, আপনাকে কিসের আদেশ করা হয়েছে? নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, পঞ্চাশ ওয়াক্ত ছ্বলাত ফরয করা হয়েছে।
মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, আপনার উম্মত এত ছ্বলাত পড়তে পারবে না। আপনার রবের কাছে ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের জন্য ছ্বলাত কমাতে বলুন। নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিবরীলের দিকে তাকালেন। মনে হচ্ছিল, তিনি যেন এ ব্যাপারে জিবরীলের কাছে পরামর্শ চাচ্ছেন। জিবরীল আলাইহিস সালাম হ্যাঁ সূচক ইঙ্গিত দিলেন এবং বললেন, আপনি চাইলে যেতে পারেন। জিবরীল তাকে নিয়ে উপরে উঠলেন এবং মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তা‘আলার নিকট গেলেন। তিনি সেখানেই ছিলেন।[3] এটি ইমাম বুখারীর শব্দ। বুখারীর কিছু কিছু সনদে এসেছে, আল্লাহ তা‘আলা তখন দশ রাক‘আত কমিয়ে দিলেন।অতঃপর নেমে এসে পুনরায় মুসার নিকট দিয়ে অতিক্রম করলেন এবং মুসাকে জানালেন। তিনি বললেন, আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং ছবলাতের সংখ্যা কমানোর আবেদন করুন। রসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে আল্লাহ তা‘আলা এবং মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের মধ্যে যাতায়াত করেই যাচ্ছিলেন। পরিশেষে পাঁচ ওয়াক্ত করা হলো। এর পরেও মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ফিরে গিয়ে আরো কমানোর আবেদন করতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, আমি আমার রবের কাছে পুনরায় যেতে লজ্জাবোধ করছি। আমি এতে সন্তুষ্ট আছি এবং মেনে নিয়েছি। অতঃপর তিনি যখন ফিরে আসছিলেন, তখন আলাহর পক্ষ হতে ঘোষণা করা হলো, আমার ফরয ঠিক রাখলাম। কিন্তু বান্দাদের উপর থেকে সংখ্যা কমিয়ে দিলাম।[4]
[2]. সিদরাতুল মুনতাহা হলো সীমামেত্মর কূলবৃক্ষ। এটি আল্লাহ তা‘আলার অন্যতম বড় একটি নিদর্শন। এটিকে আল্লাহ তা‘আলা উর্ধ্বজগতে সৃষ্টি করেছেন। এর সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এর ফলগুলো হিজর গোত্রের কলসীর মত, পাতাগুলো হাতির কানের মত বৃহৎ, সোনালী রঙ্গের প্রজাপতি সদৃশ সুন্দর সৃষ্টিরা সেখানে বসছে ও উড়ছে। এর প্রকৃত সৌন্দর্য মনোরম পরিবেশ কোনো সৃষ্টির পক্ষেই বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সৃষ্টির জ্ঞান সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়েছে। এর পরের জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর নিকটেই। নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিরাজের রাতে এ পর্যন্তই গিয়েছিলেন এবং সেখানকার সৌন্দর্যের কিছু দিক হাদীছে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর কাছে দুআ করি তিনি যেন আমাদেরকে জান্নাতুল ফেরদাউস এবং সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করার তাওফীক দেন।
[3]. মিরাজের হাদীছ বর্ণনায় শারীকের এই শব্দটি মুহাদ্দিছগণ সমর্থন করেননি।
[4]. ইসরা ও মিরাজের এ হাদীছটি সহীহ। এর শব্দগুলো বিভিন্ন হাদীছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখানে নিকটবর্তী হওয়ার যে কথা বলা হয়েছে, তা শারীক বিন আব্দুল্লাহর রেওয়াত। ইসরা ও মিরাজের হাদীছ বর্ণনা করতে গিয়ে শারীক যেসব শব্দ উল্লেখ করেছেন, তার কিছু কিছু শব্দে শারীক ভুল করেছেন বলে হাদীছের হাফেযগণ মন্তব্য করেছেন। যেমন উপরে ইমাম ইবনে আবীল ইয্ রহিমাহুল্লাহ উল্লেখ করেছেন।