লগইন করুন
ইমাম ত্বহাবী রহিমাহুল্লাহ বলেন, (لَا تَبْلُغُهُ الْأَوْهَامُ وَلَا تُدْرِكُهُ الْأَفْهَامُ) মানুষের কল্পনা ও ধারণাসমূহ তার ধারে কাছে পৌঁছতে পারে না এবং জ্ঞান-বোধশক্তি তাকে উপলব্ধি ও আয়ত্ত করতে পারে না।
................
ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِهِ عِلْمًا
‘‘তিনি তাদের সামনের পেছনের সব অবস্থা জানেন। কিন্তু তারা তাকে জ্ঞান দ্বারা আয়ত্ত করতে পারে না’’। (সূরা ত্বহা: ১১০)
ভাষাবিদ ইমাম জাওহারী তার সিহাতে বলেন, توهمت الشيء এর অর্থ হলো ظننته আমি ধারণা করলাম। আর فهمت الشيئ এর অর্থ হলো علمته অর্থাৎ আমি অবগত হলাম বা উপলব্ধি করলাম। এখানে শাইখ এ কথা সাব্যস্ত করেছেন যে, ধারণা ও কল্পনার মাধ্যমে আল্লাহকে উপলব্ধি করা এবং জ্ঞান-বুদ্ধির মাধ্যমে তাকে পুরোপুরি পরিবেষ্টন করা সম্ভব নয়। কেউ কেউ বলেছেন, যা হওয়া সম্ভব তার কল্পনা ও ধারণা করাকে الوهم বলা হয়। অর্থাৎ যার সম্পর্কে এ ধারণা পোষণ করা হয় যে, তার সিফাত ও গুণাগুণ এ রকম। আর বোধশক্তি ও বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা যা আয়ত্ত ও উপলব্ধি করা যায় তাকে الفهم বলা হয়। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কি রকম, তা জানা সম্ভব নয়। আমরা কেবল তার সিফাতের মাধ্যমে তার সম্পর্কে এ পরিচয় হাসিল করতে পারি যে, তিনি এক, অদ্বিতীয়, তিনি অমূখাপেক্ষী, তিনি কারো পিতা নন, কারো সন্তান নন এবং তার সমতুল্য কেউ নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন
اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ
‘‘তিনিই আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি চিরজীবন্ত ও সবকিছুর ধারক। তন্দ্রা ও নিদ্রা তাকে স্পর্শ করতে পারে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, সব তারই। এমন কে আছে যে তার অনুমতি ছাড়া তার নিকট সুপারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখের ও পশ্চাতের সবই তিনি অবগত আছেন। তার জ্ঞান থেকে কোন কিছুই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। কিন্তু তিনি যে জিনিসের জ্ঞান মানুষকে দিতে চান, সেটুকুর কথা ভিন্ন। তার কুরসী আসমান ও যমীন পরিব্যপ্ত হয়ে আছে। আর আসমান ও যমীনকে ধারণ করা তার জন্য মোটেই কঠিন নয়। আর তিনি সমুন্নত, মহান’’। (সূরা আল বাকারা: ২৫৫)। সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ هُوَ الرَّحْمَٰنُ الرَّحِيمُ هُوَ اللَّهُ الَّذِي لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ السَّلَامُ الْمُؤْمِنُ الْمُهَيْمِنُ الْعَزِيزُ الْجَبَّارُ الْمُتَكَبِّرُ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ لَهُ الْأَسْمَاءُ الْحُسْنَىٰ يُسَبِّحُ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
তিনিই আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই। তিনি عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ (অদৃশ্য ও প্রকাশ্য সব কিছু সম্পর্কে অবগত), তিনি رحْمَنُ (পরম করুনাময়) এবং رَحِيمُ (অসীম দয়ালু)। তিনিই আল্লাহ, যিনি ব্যতীত সত্য কোন মাবুদ নেই। তিনি مَلِك (মালিক), قُدُّوس (অতি পবিত্র) سَلَام (পরিপূর্ণ শান্তিদাতা) مؤْمِن (নিরাপত্তা দানকারী), مُهَيْمن (রক্ষক), عَزِيز (পরাক্রমশালী), جَبَّار (প্রতাপশালী) এবং مُتَكَبِّر (মহিমান্বিত)। তারা যাকে আল্লাহর শরীক সাব্যস্ত করে আল্লাহ তা‘আলা তা থেকে পবিত্র। তিনিই আল্লাহ, خَالِق (সৃষ্টিকারী), بَارِي (উদ্ভাবক) এবং مُصَوِّر (রূপদাতা), তার জন্য রয়েছে অনেক সুন্দরতম নাম। আর তিনিই عَزِيز (পরাক্রমশালী) ও حَكِيم (প্রজ্ঞাবান)।