রাহে বেলায়াত তৃতীয় অধ্যায় - দৈনন্দিন যিকর ওযীফা ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ.)
প্রথম পর্বঃ সকালের যিকর-ওযীফা - ৮. সালাতই সর্বশ্রেষ্ঠ যিকর - (খ) রুকুর যিকর

রাসূলুল্লাহ (সা.) রুকুতে বিভিন্ন যিকর করতেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) (তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে, সোমবার ফজরের সালাতের সময়) তাঁর ঘরের পর্দা সরান। তখন মানুষেরা আবু বকরের (রাঃ) পিছনে কাতারবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সালাতে রত ছিলেন। তিনি বলেন, হে মানুষেরা ... আমাকে রুকু ও সাজদার মধ্যে কুরআন পাঠ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কাজেই, তোমরা রুকুর মধ্যে প্রভুর তা’যীম-মহত্ব ঘোষণা করবে। আর সাজদার মধ্যে প্রাণপণে বেশি বেশি দু‘আ করবে; এ সময়ে তোমাদের দু‘আ কবুল হওয়ার সমাভ বনা খুবই বেশি।”[1]

মহান প্রভুর তা’যীম প্রকাশের জন্য অনেক প্রকার বাক্য তিনি শিক্ষা দিয়েছেন। তন্মধ্যে অন্যতমঃ


যিকর নং ৪৯ : রুকুর যিকর-১ (سُبْحَانَ رَبِّي الْعَظِيمِ)

উচ্চারণ: সুব‘হা-না রাবিবয়াল ‘আযীম।
অর্থ: মহাপবিত্র আমার মহান প্রভু।

মনের আবেগ নিয়ে এই ঘোষণা বার বার দিতে হবে। কমপক্ষে ৩ বার বলার নির্দেশ দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ (সা.)।


যিকর নং ৫০ : রুকুর যিকর-২

سبوح قدوس رب الملائكة والروح


উচ্চারণঃ সুব্বুহুন ক্বুদ্দূসুন রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররূ’হ।

অর্থঃ “মহাপবিত্র, মহামহিম, ফিরিশতা গণের এবং পবিত্রাত্মার প্রভু।”

(পূর্ববর্তী অধ্যায়ে উল্লেখিত ৮ নং যিকর)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) রুকু ও সাজদার মধ্যে এই তাসবীহ পাঠ করতেন।[2]


যিকর নং ৫১ : রুকুর যিকর-৩

اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَلَكَ أَسْلَمْتُ خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَمُخِّي وَعِظَامِي وَعَصَبِي


উচ্চারণঃ আল্ল-হুম্মা লাকা রাকা’অ্তু, ওয়া বিকা আ-মানতু, ওয়া লাকা আসলামতু খাশা’আ লাকা সাম’ই ওয়া বাসারী ওয়া মুখখী ওয়া ‘আযমী, ওয়া ‘আসাবী।

অর্থঃ “হে আল্লাহ, আপনারই জন্য রুকু করেছি, এবং আপনার উপরেই ঈমান এনেছি এবং আপনারই কাছে সমর্পিত হয়েছি। ভক্তিতে অবনত হয়েছে আপনার জন্য আমার কর্ণ, আমার চক্ষু, আমার মস্তিষ্ক, আমার অস্থি ও আমার স্নায়ুতন্ত্র।”আলী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) রুকুতে এইগুলি বলতেন।[3]

[1] সহীহ মুসলিম ১/৩৪৮, নং ৪৭৯।

[2] সহীহ মুসলিম ১/৩৫৩, নং ৪৮৭।

[3] সহীহ মুসলিম ১/৫৩৪-৫৩৫, নং ৭৭১।