লগইন করুন
অন্তরের একটি সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আল্লাহর সু-ধারণা পোষণ করা ও সর্বদা আল্লাহর রহমতের আশায় হৃদয়কে ভরপুর রাখা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ
(إن) حسن الظن (بالله) من حسن العبادة
“আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করা আল্লাহর সর্বোত্তম ইবাদতের অন্যতম।”[1]
যত কঠিন বিপদ বা সমস্যাই আসুক না কেন, মুমিনের হৃদয়ে অবিচল আস্থা থাকে যে, তার করুণাময় দয়াময় প্রতিপালক তাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন এবং তার জন্য যা কল্যাণকর তারই ব্যবস্থা করবেন। আল্লাহর রহমতের প্রতি অবিচল আস্থার সামান্যতম ঘাটতি ঈমানেরই ঘাটতি। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া, হতাশা বা অবসাদে আক্রান্ত হওয়া অবিশ্বাসেরই নামান্তর। কুরআন কারীমে ইরশাদ করা হয়েছে: “একমাত্র কাফির সম্প্রদায় ছাড়া কেউই আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হয় না।”[2]
ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশা ও দুশ্চিন্তা শয়তানের বিদ্যালয়ের অন্যতম পাঠ্য। মহান করুণাময় আল্লাহ ইরশাদ করেছেন: “শয়তান তোমাদেরকে দারিদ্রের ভয় প্রদর্শন করে এবং তোমাদেরকে অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়, আর আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও বরকত-রহমতের অঙ্গীকার করেন।”
আমরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারব যে, আমাদের অধিকাংশ দুশ্চিন্তাই ভবিষ্যতকে নিয়ে অমূলক দুশ্চিন্তা। রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অধিকাংশ সময়েই আমরা খারাপ পরিণতির কথা চিন্তা করে হতাশা ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হই। ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সমাজিক যে কোনো প্রকৃত বা সাম্ভাব্য সমস্যাকে নিয়ে আমাদের চিন্তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই খারাপ দিকটা নিয়েই আবর্তিত হয়। অথচ সকল অবস্থায় ভাল চিন্তা করা, আল্লাহর রহমতে সকল বিপদ কেটে যাবেই এইরূপ সুদৃঢ় আশা পোষণ করা মুমিনের ঈমানের দাবী এবং আল্লাহর অন্যতম ইবাদত ও সাওয়াবের কাজ। যে বান্দা রহমতের আশা করতে পারেন না তিনি তো আল্লাহর প্রতি সুধারণা পোষণ করতে পারলেন না। আর আল্লাহ তো বান্দার ধারণা ও আস্থা অনুসারেই তার প্রতি ব্যবহার করবেন।
সাম্ভাব্য বিপদের ক্ষেত্রে তো নয়ই, প্রকৃত বিপদের ক্ষেত্রেও মু’মিন কখনোই হতাশ হন না। কারণ মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন: “নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে। নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে।”[3]
এভাবে আল্লাহ একটি কষ্টের জন্য দুইটি স্বস্তির ওয়াদা করেছেন। এজন্য মুমিন কষ্ট, বিপদ বা অসুবিধার মধ্যে নিপতিত হলে এই ভেবে খুশি হন যে, এই কষ্ট মূলত আগত স্বস্তিরই পূর্বাভাস মাত্র। মহান আল্লাহ আমাদের অন্তুরগুলি তাঁর রহমতের আশায় ভরে দিন এবং সকল হতাশা ও নৈরাশ্য থেকে মুক্ত রাখুন।
[2] সূরা ইউসুফঃ ৮৭।
[3] সূরা ইনশিরাহঃ ৫-৬।