লগইন করুন
দ্বিতীয় প্রকার যিকর আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপক বাক্যাবলী। এই যিকরের মূল বাক্য (সুব‘হা-নাল্লাহ)। এছাড়াও হাদীসে এই প্রকার যিকরের জন্য বিভিন্ন বাক্য শিক্ষা দান করা হয়েছে। আল্লাহর পবিত্রতা জ্ঞাপক যিকরের মাসনূন পাঁচটি বাক্য নিম্নরূপ:
যিকর নং ৪ : (سُبْحَانَ اللَّهِ)
উচ্চারণঃ ‘সুব‘হা-নাল্লা-হ’,
অর্থঃ আল্লাহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি।
যিকর নং ৫ : (سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ)
উচ্চারণঃ সুব‘হা-নাল্লা-হি ওয়া বি‘হামদিহী।
অর্থঃ “আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা (বা প্রশংসাময় পবিত্রতা) ঘোষণা করছি।”
যিকর নং ৬ : (سُبْحَانَ اللَّه الْعَظِيم)
উচ্চারণঃ সুবা‘হা-নাল্লা-হিল আযীম।
অর্থঃ “মহামহিম আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।”
যিকর নং ৭ : (سُبْحَانَ اللَّه الْعَظِيم وَبِحَمْدِهِ)
উচ্চারণঃ সুবাহা-নাল্লা-হিল আযীম ওয়া বি‘হামদিহী।
অর্থঃ “মহামহিম আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা ঘোষণা করছি।”
যিকর নং ৮ : (سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلائِكَةِ وَالرُّوحِ)
উচ্চারণঃ সুব্বু’হুন ক্বুদ্দুসুন রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়াররূ‘হ।
অর্থঃ “মহাপবিত্র, মহামহিম, ফিরিশতাগণের এবং পবিত্রাত্মার প্রভু।”
আল্লাহর প্রশংসা জ্ঞাপক যিকরের মাসনূন বাক্য মূলত একটিঃ
যিকর নং ৯ : (الْحَمْدُ لِلَّهِ)
উচ্চারণঃ আল ‘হামদু লিল্লাহ।
অর্থঃ “প্রশংসা আল্লাহর জন্য।”
আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব জ্ঞাপক যিকরের মূল মাসনূন বাক্য একটি :
যিকর নং ১০ : (اللهُ أكبر)
উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার।
অর্থঃ “আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ।”
উপরের ৪ প্রকার যিকরের মূল বাক্য চারটি : ১, ৪, ৯ ও ১০ নং যিকর। ইতঃপূর্বে আমরা দেখেছি যে, হাদীস শরীফে “আল্লাহর যিকর বলতে এগুলিকেই বুঝানো হয়েছে। আমরা পরবর্তী আলোচনায় দেখতে পাব যে, এই চারিটি অর্থ এবং এই বাক্যগুলিই অধিকাংশ মাসনূন যিকরের মূল। পৃথকভাবে বা একত্রে এগুলির সাথে অন্যান্য বাক্য সংযক্তু হয়েছে।
(ক) মানব জীবনে এ সকল যিকরের কল্যাণ ও প্রভাব :
আমরা একটু চিন্তা করলেই অফুরন্ত সাওয়াবের পাশাপাশি এ সকল যিকরের বিশেষ প্রভাব আমাদের জাগতিক জীবনে অনুভব করতে পারি।
প্রতিটি মানুষের জীবনে আল্লাহর অসংখ্য সাধারণ ও বিশেষ নিয়ামত রয়েছে, যা তার জীবনকে ধন্য করেছে। এর পাশাপাশি প্রত্যেকের জীবনেই কিছু কষ্ট, বেদনা ও সমস্যা আছে। যেগুলি আল্লাহর অগণিত নিয়ামতের তুলনায় অতি নগণ্য। কিন্তু সাধারণত মানবীয় দুর্বলতার কারণে আমরা এসকল কষ্ট ও বেদনার অনুভূতি দ্বারা বেশি প্রভাবিত হই। শত নিয়ামতের বিপরীতে দুই চারিটি কষ্ট আমাদের পুরো মনকে ব্যথিত করে তোলে। ব্যর্থতা, কষ্ট, বেদনা, ক্রোধ ইত্যাদি অনুভূতি আমরা লালন করি। এসকল অনুভূতির স্থায়িত্ব আমাদের মনকে কলুষিত ও অপবিত্র করে, মানসিক শক্তি ও প্রেরণাকে ব্যহত করে, আমাদের কর্মস্পৃহা নষ্ট করে, আমাদের জীবনকে গ্লানিময় করে এবং সর্বোপরি আল্লাহর রহমত ও অফুরন্ত নিয়ামত লাভের পথ থেকে আমাদের দূরে নিয়ে যায়।
আল্লাহর বান্দা আল্লাহকে যেভাবে মনে করবে, সেভাবেই তাঁকে তার পাশে পাবে। জীবনের প্রতি না-বোধক অনুভূতি আল্লাহর রহমত থেকে বান্দাকে নিরাশ করে, যা কঠিনতম পাপ ও অবিশ্বাস। অপরদিকে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আল্লাহ নিয়ামত বাড়িয়ে দেন।
এজন্য মুমিনকে নিজের মন কৃতজ্ঞতা দিয়ে আবাদ করতে হবে। সকল কষ্ট, বেদনা, ব্যর্থতা ও উৎকণ্ঠা থেকে মনকে সাফ করে আল্লাহর অশেষ নিয়ামতের কথা স্মরণ করে এগুলির জন্য কৃতজ্ঞতার অনুভূতি দিয়ে হৃদয়কে ভরতে হবে। আর অবিরত সকৃতজ্ঞ চিত্তে বলতে হবেঃ ‘আল-হামদু লিল্লাহ।’ এই যিকর যাকিরের মনকে ভারমুক্ত করবে, গ্লানিমুক্ত করবে, শক্তিশালী করবে এবং আল্লাহর রহমত, নিয়ামত ও বরকত তাঁর জীবন ভরে তুলবে।
অনুরূপভাবে ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ইত্যাদি যিকর যাকিরের হৃদয়কে আল্লাহর পবিত্রতা ও শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতিতে ভরে দেবে। পৃথিবীতে অন্য কারোর মহত্ত্ব, শক্তি বা বড়ত্ব তাঁকে প্রভাবিত করবে না। সকল ভয় ও হীনমন্যতার অনুভূতি থেকে এই হৃদয় পবিত্র হবে।
‘সুব‘হা-নাল্লাহ’ বাক্যটি আরবী ভাষার বাক্য-বিন্যাসের ফলে একটি বিশেষ ভাব প্রকাশ, যা অনেকটা জয়ধ্বনি বা জিন্দাবাদ ঘোষণার মতো। দেশ প্রেমিক যেমন বারবার নিজের দেশের জিন্দাবাদ বলে নিজের মনে দেশপ্রেমের আবেগ জাগিয়ে তোলে তেমনি আবেগে আল্লাহ প্রেমিক বান্দা বারবার তাঁর প্রভুর মহত্ত্ব ও পবিত্রতা ঘোষণা করে আল্লাহ প্রেমের আবেগে হৃদয়কে উদ্বেলিত করে।
বিভিন্ন হাদীসে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও এসকল বাক্যে বেশি বেশি যিকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং তার অপরিমেয় ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে এ বিষয়ে এত বেশি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, শুধুমাত্র এ বিষয়ক সহীহ হাদীস সংকলিত করলেই একটি বড় বই হয়ে যাবে। এ সকল অগণিত হাদীস থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) কত গুরুত্বের সাথে এ সকল যিকর সাহাবীগণকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আমি নিম্নে এসকল যিকরের ফযীলত বিষয়ক কিছু সহীহ হাদীস উল্লেখ করছি।
(খ) এ সকল যিকরের ফযীলত ও বেশি বেশি পালনের নির্দেশ
উপরের চার প্রকার যিকরের মূল চারটি বাক্য : ১, ৪, ৯ ও ১০ নং যিকরের একত্রে উল্লেখ করে এগুলির বেশি বেশি জপ করার নির্দেশনা ও উৎসাহ প্রদান করে ও তার অপরিমেয় সাওয়াব বর্ণনা করে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
أَحَبُّ الْكَلَامِ إِلَى اللهِ أَرْبَعٌ سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَاللهُ أَكْبَرُ لَا يَضُرُّكَ بِأَيِّهِنَّ بَدَأْتَ
“আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় বাক্য চারটি : ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’। তুমি ইচ্ছামতো এই বাক্য চারিটির যে কোনো বাক্য আগে পিছে বলতে পার। (বাক্যগুলির সাজানোর ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম বা ফযীলত নেই।)”[1]
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
لأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ
“আমি ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এবং ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে এত বেশি পছনদ করি যে, এগুলি বলা আমার কাছে পৃথিবীর বুকে সূর্যের নিচে যা কিছু আসে সবকিছু থেকে বেশি প্রিয়।”[2]
আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
إذا مررتم برياض الجنة فارتعوا قلت يارسول الله وما رياض الجنة قال المساجد قلت وما الرتع قال سبحان الله والحمدلله ولا إله إلا الله والله أكبر
“তোমরা যখন জান্নাতের বাগানসমূহে যাবে বা তা অতিক্রম করবে তখন তৃপ্তির সাথে বিচরণ ও ভক্ষণ করবে। আমি বললামঃ
হে আল্লাহর রাসূল, জান্নাতের বাগানসমূহ কি? তিনি বললেনঃ মসজিদসমূহ। আমি বললামঃ বিচরণ ও ভক্ষণ কি? তিনি বললেনঃ ‘সুব‘হা- নাল্লাহ’, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’।” হাদীসটি হাসান।[3]
অন্য বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) আবু বকরকে (রাঃ) বলেনঃ (الا ترتع فى روضة الجنة) “তুমি কি জান্নাতের বাগানে তৃপ্তির সাথে বিচরণ ও ফল ভক্ষণ করবে না?” তিনি প্রশ্ন করেন: “হে আল্লাহর রাসূল, জান্নাতের বাগানের ফল ভক্ষণ কি?” তিনি বলেন: “‘সুব‘হা-নাল্লাহ’, ‘আল-হামদুলিল্লাহ’, ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ‘আল্লাহু আকবার’।”[4]
এভাবে বিভিন্ন সহীহ ও হাসান হাদীসে এই বাক্যগুলির অপরিমেয় সাওয়াব উল্লেখ করা হয়েছে। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ), সালমান ফারিসী (রাঃ), আবু হুরাইরা (রাঃ) ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে, এই বাক্য চারিটির প্রতিটি বাক্য একবার বললে জান্নাতে একটি করে বৃক্ষ রোপণ করা হয়।[5]
আবু যার (রাঃ) ও আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “এই বাক্যগুলির প্রত্যেক বাক্য একবার যিকর করা একবার আল্লাহর ওয়াস্তে দান করার সমতুল্য।”[6]
আবু সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ “এই বাক্যগুলি কিয়ামতের দিনে বান্দার আমল নামায় সবচেয়ে বেশি ভারী হবে।”[7]
আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন : “এই বাক্যগুলিই জাহান্নামের আগুন থেকে মুমিনের ঢাল।”[8]
আনাস বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ “গাছের ডালে ঝাকি দিলে যেমন পাতাগুলি ঝরে যায় অনুরূপভাবে এই যিকরগুলি বললে বান্দার গোনাহ ঝরে যায়।”[9]
আবু হুরাইরা (রাঃ) ও আবু সাঈদ (রাঃ) উভয়ে নবীয়ে আকরাম (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ “আল্লাহ এই চারটি বাক্যকে বেছে পছন্দ করে নিয়েছেন। এই বাক্যগুলির যে কোনো একটি বাক্য একবার বললে আল্লাহ ২০ টি সাওয়াব প্রদান করতেন এবং ২০ টি গোনাহ ক্ষমা করবেন। আর এভাবে যে বেশি বেশি যিকর করবে সে মুনাফিকী থেকে মুক্তি লাভ করবে।”[10]
আব্দুল্লাহ ইবনু উমার বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
من قال سبحان الله والحمد لله ولااله الاالله والله اكبر كتبت له بكل حرف عشر حسنات
“এই চারিটি বাক্য যিকরকারী প্রতিটি বাক্যের প্রতিটি অক্ষরের জন্য ১০টি করে সাওয়াব লাভ করবেন।”[11]
অন্য হাদীসে আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ ‘নূহ (আ.) মৃত্যুর পূর্বে তাঁর পুত্রকে যে ওসীয়ত করেন তা তোমাদেরকে বলছি। তিনি বলেনঃ
آمُرُكَ بِاثْنَتَيْنِ وَأَنْهَاكَ عَنِ اثْنَتَيْنِ آمُرُكَ بِلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَإِنَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعَ وَالْأَرْضِينَ السَّبْعَ لَوْ وُضِعَتْ فِي كِفَّةٍ وَوُضِعَتْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فِي كِفَّةٍ رَجَحَتْ بِهِنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ... وَسُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ فَإِنَّهَا صَلَاةُ كُلِّ شَيْءٍ وَبِهَا يُرْزَقُ الْخَلْقُ وَأَنْهَاكَ عَنِ الشِّرْكِ وَالْكِبْرِ
“আমি তোমাকে দুটি কাজের নির্দেশ দিচিছ এবং দুটি কাজ থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাকে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’-এর আদেশ প্রদান করছি। কারণ সাত আসমান ও জমিন যদি এক পাল্লায় রাখা হয় এবং ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ অন্য পাল্লায় রাখা হয় তাহলে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ ভারী হবে ... এবং আমি তোমাকে ‘সুব’হা-নাল্লাহি ওয়া বি’হামদিহী’-এর নির্দেশ দিচ্ছি (অর্থাৎ, এই দুটি যিকর বেশি বেশি আদায় করতে নির্দেশ প্রদান করছি।) এই যিকর সকল সৃষ্টির দু’আ, সালাত ও তাসবীহ এবং এর ওসীলাতেই সকল সৃষ্টি রিযিক প্রাপ্ত হয়। আর আমি তোমাকে শিরক ও অহংকার থেকে নিষেধ করছি।”[12]
সাহাবীগণও এ সকল বাক্য বেশি বেশি করে যিকর করতে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেনঃ
لَأَنْ أَقُولَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إلَهَ إلَّا اللَّهُ وَاَللَّهُ أَكْبَرُ أَحَبُّ إلَيَّ مِنْ أَنْ أَتَصَدَّقَ بِعَدَدِهَا دَنَانِيرَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ
“সুব‘হা-নাল্লাহ, আল-‘হামদু লিল্লাহ, লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার - বলা আমার নিকট আল্লাহর রাস্তায় সমসংখ্যক স্বর্ণমুদ্রা ব্যয় করার চেয়ে বেশি প্রিয়।”[13]
তিনি আরো বলেনঃ “মহান আল্লাহ তোমাদের মধ্যে যেরূপভাবে মাল-সম্পদের রিযিক বণ্টন করেছেন তেমনভাবে তোমাদের আচরণ ও স্বভাব বণ্টন করেছেন। আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন ও যাকে পছন্দ করেন না সকলকেই সম্পদ দেন। তবে ঈমান তিনি শুধু তাকেই প্রদান করেন যাকে তিনি পছন্দ করেন। যে ব্যক্তি সম্পদ ব্যয় করতে কৃপণতা বোধ করে, শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ করতে ভয় পায় এবং রাত জেগে ইবাদত করতে আলসেমি অনুভব করে, সে যেন বেশি বেশি করে ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহু’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘আল-‘হামদু লিল্লাহ’ ও ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’ বলতে থাকে।” হাদীসটির সনদ সহীহ।[14]
(গ) বিশেষ তাসবীহ-তাহলীল
উপরের চারটি বাক্য মহান আল্লাহর একত্ব, পবিত্রতা, মর্যাদা ও প্রশংসা জ্ঞাপক সাধারণ যিকর যা সর্বদা ও বেশি বেশি করে আদায়ের জন্য এভাবে অসংখ্য হাদীসে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কোনো কোনো হাদীসে এই বাক্যগুলির এক বা একাধিক বাক্যের অর্থ একত্রে বিশেষ ব্যাপক অর্থবোধক বাক্যে যিকর করতে বিশেষ উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। উপরে ৫, ৬, ৭ ও ৮ নং যিকরে পবিত্রতা জ্ঞাপক কয়েকটি অতিরিক্ত যিকরের উল্লেখ করেছি। ৫ ও ৬ নং যিকরের মর্যাদার বর্ণনায় আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
كَلِمَتَانِ خَفِيفَتَانِ عَلَى اللِّسَانِ ثَقِيلَتَانِ فِي الْمِيزَانِ حَبِيبَتَانِ إِلَى الرَّحْمَنِ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ
“দুটি বাক্য জিহ্বায় উচ্চারণের জন্য খুবই হালকা, আর কিয়ামতের দিন কর্ম পরিমাপের পাল্লায় খুবই ভারী এবং আল্লাহর নিকট প্রিয় : সুব‘হা-নাল্লাহি ওয়া বি‘হামদিহী, সুবহানাল্লাহিল ‘আযীম।”[15]
যিকর নং ১১ :
الحَمْدُ للهِ عَدَدَ مَا أَحْصَى كِتَابُهُ، وَالحَمْدُ للهِ مِلْءَ مَا أَحْصَى كِتَابُهُ وَالحَمْدُ للهِ عَدَدَ مَا أَحْصَى خَلقُهُ وَالحَمْدُ للهِ مِلْءَ مَا فِي خَلْقِهِ وَالحَمْدُ للهِ مِلْءَ سَمَوَاتِهِ وَأَرْضِهِ وَالحَمْدُ للهِ عَدَدَ كُلِّ شَيْءٍ وَالحَمْدُ للهِ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ
উচ্চারণঃ (১) আল-‘হামদু লিল্লা-হি ‘আদাদা মা- আ‘হসা কিতাবুহু, (২) ওয়া আল-‘হামদু লিল্লা-হি মিলআ মা- আ‘হসা কিতাবুহু, (৩) ওয়া আল-‘হামদু লিল্লা-হি ‘আদাদা মা- আ‘হসা খালকুহু, (৪) ওয়া আল-হামদু লিল্লাহি মিলআ মা- ফী খালকিহী, (৫) ওয়া আল-হামদু লিল্লা-হি মিলআ সামাওয়া-তিহী ওয়া আরদিহী, (৬) ওয়া আল-হামদু লিলাল -হি ‘আদাদা কুল্লি শাইয়িন, (৭) ওয়াল‘হামদু লিল্লা-হি ‘আলা- কুলিল শাইয়িন।
অর্থঃ “(১) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, তাঁর কিতাব যা গণনা করেছে সেই পরিমাণ, (২) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, তাঁর কিতাব যা গণনা করেছে তা সব পূর্ণ করে, (৩) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, তাঁর সৃষ্টি যা গণনা করে সেই পরিমাণ, (৪) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, তাঁর সৃষ্টির মধ্যে যাকিছু আছে তা পূর্ণ করে, (৫) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, তাঁর আসমন ও জমিন পূর্ণ করে, (৬) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, সকল কিছুর সংখ্যার সমপরিমাণ, (৭) সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, সব কিছুর উপর।”
আবু উমামা (রাঃ) বলেনঃ
رآني النبي صلى الله عليه وسلم وأنا أحرك شفتي فقال لي بأي شيء تحرك شفتيك يا أبا أمامة فقلت أذكر الله يا رسول الله فقال ألا أخبرك بأكثر وأفضل من ذكرك بالليل والنهار قلت بلى يا رسول الله قال تقول فذكر
রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে দেখেন যে আমি আমার ঠোঁট নাড়াচ্ছি। তিনি আমাকে বলেনঃ হে আবু উমামাহ, তুমি কী বলে তোমার ঠোঁট নাড়াচ্ছ? আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি আল্লাহর যিকর করছি। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমার রাতদিন যিকরের চেয়েও উত্তম (যিকর) তোমাকে শিখিয়ে দেব? আমি বললামঃ হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল। তিন বলেনঃ তুমি বলবে ... ( উপরের যিকরগুলি তিনি শিখিয়ে দিলেন)। এরপর বললেনঃ (وتسبيح مثل ذلك وتكبير مثل ذلك)
“উপরে যেভাবে (আল-হামদু লিল্লাহ) বলেছ ঠিক অনুরূপভাবে অনুরূপভাষায় তাসবীহ ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’ বলবে এবং অনুরূপভাবে তাকবীর ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে।” অর্থাৎ, উপরের ৭ টি বাক্যে ‘আল-হামদু লিল্লাহ’- স্থলে ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’ দ্বারা ও ‘আল্লাহু আকবার’ দ্বারা ৭ বার করে বলতে হবে। হাদীসটি হাসান।”[16]
আমরা সকাল সন্ধ্যার যিকরের আলোচনায় এই ধরনের আরো ব্যাপক অর্থবোধক তাসবীহ তাহলীলের আলোচনা করব, ইনশাআল্লাহ।
যিকর নং ১২ : (الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ)
উচ্চারণঃ আল-হামদু লিল্লা-হি হামদান কাসীরান তাইয়িবান মুবা-রাকান ফীহি।
অর্থঃ “সকল প্রশংসা আল্লাহর, অনেক অনেক প্রশংসা, পবিত্র ও বরকতময় প্রশংসা”।
আবু আইঊব (রাঃ) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট বসে এই বাক্যটি বলে। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘এই বাক্যটি কে বলল?’ লোকটি ভাবল যে, সে হয়ত কোনো বেয়াদবি করেছে এজন্য সে চুপ করে থাকে। রাসূলুল্লাহ (সা.) আবারো প্রশ্ন করলে সে বলেঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল, আমিই বলেছি। আর আমি ভালো উদ্দেশ্যেই বলেছি।’ তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেনঃ (والذي نفسي بيده لقد رأيت ثلاثة عشر ملكاً يبتدرون كلمتك أيهم يرفعها إلى الله) “যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ করে বলছি, আমি দেখেছি তের জন ফিরিশতা দ্রুত এগিয়ে এসেছেন, কে আগে এই বাক্যটিকে নিয়ে আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হবেন সে জন্য।”
হাদীসটির সনদ হাসান। আনাস (রাঃ) থেকেও এই অর্থে আরেকটি হাদীস নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে।[17]
যাকিরকে বুঝতে হবে, বিভিন্ন সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, বান্দা যখন এই যিকরগুলি বলেন তখন আল্লাহও তার সাথে সাথে সাড়া দেন। কাজেই, সেভাবে আদব ও মনোযোগের সাথে আল্লাহর সাথে কথা বলার অনুভুতি নিয়ে যিকর করতে হবে।[18]
(ঘ) এ সকল যিকর নির্দিষ্ট সংখ্যায় আদায়ের নির্ধারিত সাওয়াব
উপরের হাদীসগুলি থেকে যিকরের মহান চারিটি বাক্য বা উক্ত বাক্যগুলির অর্থের সমন্বয়ে ব্যপকার্থক বিভিন্ন বাক্য দ্বারা যিকরের অপরিমেয় সাওয়াব, বরকত ও মর্যাদার কথা আমরা জানতে পেরেছি। এ সকল হাদীসের আলোকে আমরা বুঝতে পারি যে, মুমিন সর্বদা সুযোগ মতো যত বেশি পারবেন এসকল বাক্যের যিকর করবেন। যত বেশি তিনি যিকর করবেন তত বেশি সাওয়াব, বরকত ও মর্যাদা তিনি লাভ করবেন।
তবে মুমিন হয়ত সর্বদা যিকর করতে অপারগ হয়ে পড়েন। সে ক্ষেত্রে অন্তত নির্দিষ্ট সংখ্যায় যিকর করলে তিনি বিশেষ মর্যাদা ও সাওয়াব অর্জন করবেন। আমরা বিভিন্ন হাদীসে উপরের বাক্যগুলির নির্দিষ্ট সংখ্যয় জপ করলে বিশেষ সাওয়াবের উল্লেখ দেখতে পাই। কোনো কোনো হাদীসে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক যিকরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা সে সকল হাদীস পরবর্তী অধ্যায়ে সকাল সন্ধ্যার যিকর বা সময় নির্ধারিত যিকরের আলোচনায় উল্লেখ করব। কোনো কোনো হাদীসে সাধারণভাবে রাতদিনে যে কোনো সময়ে এসকল যিকর নির্ধারিত সংখ্যায় পাঠ করলে বিশেষ সাওয়াবের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে। এ ধরনের কয়েকটি হাদীস এখানে উল্লেখ করছি।
(১) ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী’ ১০০ বার বলা :
আবু তালহা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
من قال سبحان الله وبحمده مائة مرة كتب الله له مائة ألف حسنة واربعا وعشرين ألف حسنة. قالوا يا رسول الله إذا لا يهلك منا أحد قال بلى إن أحدكم ليجئ بالحسنات لو وضعت على جبل أثقلته ثم تجئ النعم فتذهب بتلك ثم يتطاول الرب بعد ذلك برحمته
“যদি কেউ ১০০ বার ‘সুব‘হা-নাল্লহি ওয়া বি‘হামদিহী’ বলে, তাহলে আল্লাহ তাঁর জন্য ১,২৪,০০০ (একলক্ষ চবিবশ হাজার) সাওয়াব লিখবেন। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, তাহলে তো আমাদের কেউই বিপদে পড়বে না (জাহান্নামে কাউকেই যেতে হবে না।) তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। তোমাদের অনেকেই এত বেশি সাওয়াব নিয়ে কিয়ামতের দিন হাজির হবে যে, পাহাড়ের উপরে দিলেও পাহাড় ভেঙ্গে যাবে, কিন্তু এরপর আল্লাহ তাঁকে যে নিয়ামত দিয়েছিলেন তা এসে সব সাওয়াব নিয়ে চলে যাবে। এরপর মহাপ্রভু রহমত নিয়ে এগিয়ে আসবেন।” হাদীসটি সহীহ।[19]
এই হাদীস থেকে জানা যায় যে, যার উপর আল্লাহর নিয়ামত যত বেশি তার তত বেশি সাওয়াবের কাজ করা প্রয়োজন। আল্লাহ আমাদেরকে নিয়ামতের শুকরিয়া প্রকাশের তাওফিক প্রদান করুন এবং সকল অবহেলা ও পাপ ক্ষমা করে দিন।
অন্য হাদীসে আবু হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ
مَنْ قَالَ سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ فِي يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ حُطَّتْ خَطَايَاهُ وَإِنْ كَانَتْ مِثْلَ زَبَدِ الْبَحْرِ
“যদি কেউ এক দিনের মধ্যে ১০০ বার ‘সুব্‘হা-নাল্লা-হি ওয়া বি‘হামদিহী’ বলে তাঁর সকল গোনাহ ক্ষমা করা হয়, যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমতুল্য হয়।”[20]
(২) ১০০ বার ‘সুব‘হানাল্লাহ’, ১০০ বার ‘আল-‘হামদু লিল্লাহ’, ১০০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ ও ১০০ বার ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা :
উম্মু হানী (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমি বৃদ্ধ ও দুর্বল হয়ে গিয়েছি, আমাকে এমন একটি আমল শিখিয়ে দিন যা আমি বসে বসে পালন করতে পারব। তিনি বলেনঃ “তুমি ১০০ বার ‘সুব‘হা-নাল্লাহ’ বলবে, তাহলে ১০০ টি ক্রীতদাস মুক্ত করার সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।
তুমি ১০০ বার ‘আল হামদু লিল্লাহ’ বলবে, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধের জন্য ১০০ টি সাজানো ঘোড়ায় মুজাহিদ প্রেরণের সমপরিমাণ সাওয়াব তুমি পাবে।
তুমি ১০০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে, তাহলে ১০০ টি মাকবুল উট কুরবানির সমপরিমাণ সাওয়াব পাবে।
তুমি ১০০ বার ‘লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ বলবে, তাহলে তোমার সাওয়াবে আসমান ও জমিন পূর্ণ হয়ে যাবে [এবং তোমার কোনো পাপই বাকি থাকবে না : দ্বিতীয় বর্ণনায়]। যে ব্যক্তি তোমার এই যিকরগুলির সমপরিমাণ যিকর করবে সে ছাড়া কেউই ঐ দিনে তোমার চেয়ে বেশি বা উত্তম আমল আল্লাহর দরবারে পাঠাতে পারবে না।” হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে এবং সনদগুলি হাসান বা গ্রহণযোগ্য।[21]
আবু উমামা (রাঃ) থেকে এই অর্থে বর্ণিত অন্য হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) সকলকে ১০০ বার করে উক্ত যিকরগুলি আদায় করতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং অনুরূপ সাওয়াবের সুসংবাদ প্রদান করেছেন। হাদীসটি হাসান।[22]
[2] সহীহ মুসলিম ৪/২০৭২, নং ২৬৯৫।
[3] সুনানুত তিরমিযী ৫/৫৩২, নং ৩৫০৯, আত-তারগীব ২/৪২২, নং ২৩২৩, মাজমাউয যাওাইদ ১০/৯১।
[4] মাজমাউয যাওাইদ ১০/৯১। সনদের একজন রাবী কিছুটা অপরিচিত। বাকী রাবীগণ নির্ভরযোগ্য।
[5] ইমাম মুনযিরী, আত-তারগীব ২/৪০৭-৪০৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৮-৯০।
[6] সহীহ মুসলিম ১/৪৯৮, নং ৭২০, নং ২/৬৯৭, নং ১০০৬।
[7] নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/৫০, মুসনাদে আহমাদ ৩/৪৪৩, ৪/২৩৭, ৫/৩৬৫, তাবারানী আল-মু’জামুল কাবীর ২২/৩৪৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ১/৪৯, ১০/৮৮।
[8] মুসতাদরাক হাকিম ১/৭২৫, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১২২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮৯, আত-তারগীব ২/৪১৬।
[9] মুসনাদু আহমাদ ৩/১৫২, আত-তারগীব ২/৪১৮।
[10] নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১০, মুসনাদু আহমাদ ২/৩১০, ৩/৩৫, ৩৭, মুসান্নাফু ইবনু আবী শায়বা ৬/১০৪, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১০৪, আত-তারগীব ২/৪১০, নং ২২৯৯।
[11] তাবারানী, আল-মু’জামুল আওসাত ৬/৩০৯, আল-মু’জামুল কাবীর ১২/৩৮৮, মাজমাউয যাওয়াইদ, আত-তারগীব ২/৪২১।
[12] মুসনাদু আহমাদ ২/১৬৯, নং ৬৫৮৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২১৯-২২০। হাদিসটির সনদ হাসান।
[13] মুসান্নাফ ইবনু আবী শাইবা ৬/৯২, ৭/১৭৬, ১৭৭, বাইহাকী শু’আবুল ঈমান ১/৪৪৭, ৪৪৮।
[14] তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৯/২০৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯০, আত-তারগীব ২/৪২০-৪২১।
[15] সহীহ বুখারী ৫/২৩৫২, নং ৬০৪৩, ৬/২৪৫৯, নং ৬৩০৪, সহীহ মুসলিম ৪/২০৭২, নং ২৬৯৪।
[16] মুসনাদু আহমাদ ৫/২৪৯, তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৮/২৩৮, ২৯২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯৩, আত-তারগীব ২/৪২৬,-৪২৭।
[17] সহীহ মুসলিম ১/৪১৯, নং ৬০০, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৪৯, নং ৩৮০২, নাসাঈ আস-সুনানুল কুবরা ৬/৯২, মুসনাদু আহমাদ ৩/১৫৮, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১২৫, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩৪৫-৩৪৬, মাজমাউয যাওয়াইদ ২/১০৭।
[18] মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩২৪-৩২৬।
[19] মুসতাদরাক হাকিম ৪/২৭৯।
[20] সহীহ মুসলিম ৪/২০৭১, নং ২৬৯১।
[21] মুসনাদু আহমাদ ৬/৩৪৪, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/১২৫২, নং ৩৮১০, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/২১১, তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ২৪/৪১০, মুসতাদরাক হাকিম ১/৬৯৫, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯২।
[22] তাবারানী, আল-মু’জামুল কাবীর ৮/২৬৩, আত-তারগীব ২/৪১০, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৯২।