লগইন করুন
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা উত্তম চরিত্র, সুমহান আচরণ এবং সৎ আমলের প্রতি আহবান করে:
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
وَيَدْعُونَ إِلَى مَكَارِمِ الْأَخْلَاقِ وَمَحَاسِنِ الْأَعْمَالِ وَيَعْتَقِدُونَ مَعْنَى قَوْلِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَيَنْدُبُونَ إِلَى أَنْ تَصِلَ مَنْ قَطَعَكَ وَتُعْطِيَ مَنْ حَرَمَكَ وَتَعْفُوَ عَمَّنْ ظَلَمَكَ وَيَأْمُرُونَ بِبِرِّ الْوَالِدَيْنِ وَصِلَةِ الْأَرْحَامِ وَحُسْنِ الْجِوَارِ وَالْإِحْسَانِ إِلَى الْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَالرِّفْقِ بِالْمَمْلُوكِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْفَخْرِ وَالْخُيَلَاءِ وَالْبَغْيِ وَالِاسْتِطَالَةِ عَلَى الْخَلْقِ بِحَقٍّ أَوْ بِغَيْرِ حَقٍّ وَيَأْمُرُونَ بِمَعَالِي الْأَخْلَاقِ وَيَنْهَوْنَ عَنْ سَفْسَافِهَا وَكُلُّ مَا يَقُولُونَهُ وَيَفْعَلُونَهُ مِنْ هَذَا وَغَيْرِهِ فَإِنَّمَا هُمْ فِيهِ مُتَّبِعُونَ لِلْكِتَابِ وَالسُّنَّةِ
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা উত্তম চরিত্র, সুমহান আচরণ এবং সৎ আমলের প্রতি আহবান করে। তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই বাণীর মর্মার্থকেও বিশ্বাস এবং বাস্তবায়ন করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا ‘‘ঐ ব্যক্তিই পূর্ণ ঈমানদার, যার চরিত্র উত্তম’’।[1]
যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখার আহবান জানায়, যে তোমাকে বঞ্চিত করে, তাকে দান করার আদেশ করে এবং যে তোমার উপর যুলুম করে, তাকে ক্ষমা করে দেয়ার উপদেশ দেয়।[2]
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখা এবং প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার, ইয়াতীমদের প্রতি, মিসকীনদের প্রতি দয়া করার উপদেশ দেয়, মুসাফিরদের প্রতি অনুগ্রহ করার আদেশ করে এবং দাস-দাসী ও অধিনস্তদের প্রতি কোমল ব্যবহার করার আহবান জানায়। একই সাথে তারা গর্ব, দাম্ভিকতা, অহংকার, যুলুম এবং ন্যায়ভাবে কিংবা অন্যায়ভাবে নিজেকে বড় মনে করা ও অন্যকে ছোট মনে করা হতে নিষেধ করে। তারা সুমহান চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করার আদেশ করে এবং মন্দ স্বভাব বর্জন করার আহবান জানায়। মোটকথা, উপরোক্ত বিষয়গুলো এবং অন্যান্য বিষয় থেকে তারা যা বলে ও বাস্তবায়ন করে, তাতে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণ করে।
ব্যাখ্যাঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা উত্তম চরিত্র গঠণের উপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে। তারা নিজেরা উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন করে, অন্যদেরকেও তা অর্জনের প্রতি উৎসাহ দেয় এবং সুন্দরতম চারিত্রিক গুণাবলীর প্রতি মানুষকে আহবান জানায়। الأخلاق শব্দটি خلق -এর বহুবচন। خلق শব্দের خاء ও لام বর্ণে পেশ দিয়ে পড়া হলে উহা দ্বারা উদ্দেশ্য হবে মানুষের অভ্যন্তরীন গুণাবলী।
আর যদি خاء বর্ণে যবর এবং لام বর্ণে সাকীন দিয়ে পড়া হয়, তাহলে উহা দ্বারা বাহ্যিক গঠন ও আকৃতি উদ্দেশ্য হবে। বাহ্যিক আকৃতি বলতে মানুষের প্রকাশ্য স্বভাব-চরিত্র উদ্দেশ্য। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা সর্বোত্তম কাজ যেমন ভদ্রতা, বীরত্ব, সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা ইত্যাদি মহৎ গুণাবলীর প্রতি আহবান জানায়। তারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এই বাণীর প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং উক্ত বাণীর দাবী অনুযায়ী আমল করে, যেখানে তিনি বলেছেনঃ ‘‘ঐ ব্যক্তিই পূর্ণ ঈমানদার, যার চরিত্র সর্বাধিক উত্তম’’। ইমাম আহমাদ ও তিরমিযী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ইহাকে হাসান সহীহ বলেছেন। সর্বোত্তম চরিত্র বলতে কোমল, নরম ও সুন্দরতম চরিত্র উদ্দেশ্য।
সুতরাং এই হাদীছে সুন্দরতম চরিত্রে চরিত্রবাণ হওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এই হাদীছ থেকে আরো জানা গেল যে, বান্দাদের আমলসমূহ ঈমানের মধ্যে গণ্য। আরো জানা গেল, ঈমান বৃদ্ধি পায়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা একদিকে যেমন মানুষের সাথে সর্বোত্তম আচরণ করার আহবান জানায়, হকদারদের হক আদায় করার আদেশ করে, অপর দিকে এর বিপরীত বিষয়গুলো যেমন অহংকার, দাম্ভিকতা ও যুলুম করা হতে সতর্ক করে।
সুতরাং যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং দুর্ব্যবহার করে তারা তোমাকে ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা ও সদ্ব্যবহার করার আহবান জানায়, যে তোমাকে মাহরুম করে, তোমাকে ঐ ব্যক্তির জন্য খরচ করা, তাকে উপঢৌকন এবং অন্যান্য বস্ত্ত দান করার আহবান জানায়। কেননা ইহাই প্রকৃত ইহসান ও ভদ্রতার পরিচয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা তোমাকে আরো আহবান জানায় যে, তোমার উপর যে ব্যক্তি যুলুম করেছে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দিবে। অর্থাৎ তোমার জান-মাল ও মান-সম্মানের কোন ক্ষতি করলেও তুমি তাকে ক্ষমা করে দিবে। কেননা তাকে ক্ষমা করে দেয়ার মাধ্যমে তুমি তার ভালবাসা অর্জন করতে পারবে, আল্লাহ তাআলার কাছে এর বিনিময় পাবে।
بر الوالدين পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করাঃ আল্লাহ তাআলা কুরআনে হকদারদের হকসমূহ আদায় করার যেই আদেশ করেছেন, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা সেই হকগুলো আদায় করার আদেশ করে। যেমন পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা, পাপাচারের আদেশ ব্যতীত তাদের অন্যান্য আদেশ পালন করা এবং কথা ও কাজের মাধ্যমে তাদের প্রতি অনুগ্রহ ও দয়া প্রদর্শন করা।
صلة الأرحام আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখাঃ তারা আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখার অর্থাৎ নিকটাত্মীয়দের প্রতি সুন্দরতম আচরণ করার আহবান জানায়। الأرحام শব্দটি رحم শব্দের বহুবচন। যার সাথে আপনার আত্মীয়তার বন্ধন রয়েছে, সেই আপনার رحم (নিকটাত্মীয়)।
حسن الجوار প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহারঃ যারা আপনার আশপাশে বসবাস করে, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার করা এবং তাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট না দেয়ার আহবার জানায়।
وَالْإِحْسَانِ إِلَى الْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ ইয়াতীমদের প্রতি, মিসকীনদের প্রতি এবং মুসাফিরদের প্রতি অনুগ্রহ করাঃ اليتامى শব্দটি يتيم -এর বহুবচন। আভিধানিক অর্থে অনাথ শিশুকে ইয়াতীম বলা হয়। আর ইসলামের পরিভাষায় প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বেই যেই শিশুর পিতা মারা যান, তাকে ইয়াতীম বলা হয়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা ইয়াতীমের প্রতি ইহসান করার আহবান জানায়। ইয়াতীমদের খোঁজ-খবর নেয়া, তাদের ধন-সম্পদের দেখা-শোনা করা এবং তাদের প্রতি দয়া করাই হলো তাদের প্রতি অনুগ্রহ করার নামান্তর। মিসকীনদের প্রতি দয়া করাও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকদের অন্যতম বৈশিষ্ট।
مَسَاكيْن শব্দটি مسكين শব্দের বহুবচন। মিসকীন বলা হয় সেই অভাবী লোককে, দারিদ্র এবং অভাব যাকে দুর্বল করে ফেলেছে। তাদেরকে দান-খয়রাত করা এবং কোমল ব্যবহারের মাধ্যমেই তাদের প্রতি অনুগ্রহ করতে হবে। মুসাফিরের প্রতি সদ্ব্যবহর করা ও তার হক আদায় করাও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্যতম বৈশিষ্ট। যেই মুসাফিরের পথের সম্বল শেষ হয়ে গেছে কিংবা তার টাকা-পয়সা হারিয়ে গেছে অথবা চুরি হয়ে গেছে, তাকেই কেবল সাহায্য করা আবশ্যক।[3] কেউ কেউ বলেছেনঃ কুরআনের যেই আয়াতে মুসাফিরের হক আদায় করতে বলা হয়েছে, সেখানে মুসাফির বলতে মেহমান উদ্দেশ্য।
الرفق بالمملوك দাস-দাসী ও অধিনস্তদের প্রতি কোমল ব্যবহার করাঃ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা দাস-দাসী ও অধিনস্তদের প্রতি সদাচরণ করার আহবান জানায়। চতুস্পদ জন্তুও অধিনস্তদের মধ্যে গণ্য। সুতরাং জীব-জন্তুর প্রতিও ইহসান করতে হবে এবং তাদের অধিকার পুরোপুরি দিতে হবে।[4] الرفق ضد العنف অর্থাৎ কঠোরতার বিপরীত ব্যবহারই হলো কোমল ব্যবহার অর্থাৎ নম্রতা।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা গর্ব, অহংকার এবং যুলুম করতে নিষেধ করে। বংশমর্যাদা এবং আভিজাত্য নিয়ে বড়াই করার নাম গর্ব। الخيلاء শব্দের خاء বর্ণে পেশ দিয়ে পড়া হয়েছে। ইহার অর্থ হলো অহংকার ও দাম্ভিকতা। মানুষের জান-মাল ও মান-সম্মানের উপর আক্রমণ করাকে البغي বলা হয়।
الاستطالة على الخلق ন্যায়ভাবে কিংবা অন্যায়ভাবে নিজেকে বড় মনে করা ও অন্যকে ছোট মনে করা হতে নিষেধ করাঃ অর্থাৎ মানুষের উপর নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করা, মানুষকে তিরস্কার করা এবং তাদের মান-সম্মানে আঘাত করা হতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা নিষেধ করে। সেটি ন্যায় সংগতভাবেই হোক আর অন্যায়ভাবেই হোক। ন্যায় সংগতভাবে নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করা হলে তা অহংকার ও দাম্ভিকতা বলে গণ্য হবে। আর অন্যায়ভাবে হলে তা যুলুম হিসাবে গণ্য হবে। দুই অবস্থার কোন অবস্থাতেই নিজের বড়ত্ব প্রকাশ করা জায়েয নেই।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা মানুষকে সুমহান ও সুউচ্চ চারিত্রিক গুণাবলীর দিকে আহবান জানায় এবং নিকৃষ্ট ও ঘৃণীত স্বভাব-চরিত্র হতে তাদেরকে নিষেধ করে। প্রত্যেক জিনিষের নিকৃষ্ট ও ঘৃণীত অংশকে السفساف বলা হয়। এটি সুমহান ও সুউচ্চ চারিত্রিক গুণাবলীর বিপরীত। চালনি দিয়ে আটা চালার সময় আটা থেকে যা উড়ে যায় এবং শুকনো যমীন চাষ করার সময় যে ধুলা উড়ে উহাকে سفساف বলা হয়।
উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে তারা যা বলে ও বাস্তবায়ন করে, তাতে তারা আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাতের অনুসরণ করেঃ অর্থাৎ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে যা কিছু বলে ও বাস্তবায়ন করে এবং পূর্বোক্ত বিষয়সমূহ থেকে যা কিছুর আদেশ করে ও যা থেকে নিষেধ করে, সেগুলো তাদের প্রভুর কিতাব কুরআনুল কারীম ও তাদের নবীর পবিত্র সুন্নাত থেকেই নিয়েছে। চাই তা এই সংক্ষিপ্ত পুস্তকে উল্লেখিত বিষয়সমূহের অন্তর্ভুক্ত হোক কিংবা এর বাইরে যা রয়েছে তার অন্তর্ভুক্ত হোক। তারা নিজেদের পক্ষ হতে তাদের আকীদাহ তৈরী করেনি এবং এ বিষয়ে তারা অন্যদের তাকলীদও করেনি। উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার ৩৬ নং আয়াতে বলেনঃ
﴿وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا وَبِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَالْجَارِ ذِي الْقُرْبَىٰ وَالْجَارِ الْجُنُبِ وَالصَّاحِبِ بِالْجَنبِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَن كَانَ مُخْتَالًا فَخُورًا﴾‘‘
আর তোমরা সবাই আল্লাহর বন্দেগী করো৷ তাঁর সাথে কাউকে শরীক করোনা৷ পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহার করো৷ নিকট আত্মীয় ও ইয়াতীম-মিসকীনদের সাথে সদ্ব্যবহার করো৷ আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্বসাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাধীন বাদী ও গোলামদের প্রতি সদয় ব্যবহার করো৷ নিশ্চয়ই আল্লাহ দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না’’। এই অর্থে অনেক হাদীছ রয়েছে। সেগুলো থেকে শাইখ কিছু হাদীছ উপরে উল্লেখ করেছেন।
[2] - দানের বদলে দান করা এবং সদ্ব্যবহারের পরিবর্তে সদ্ব্যবহার করা প্রকৃত সদাচরণ ও বদান্যতা নয়; বরং ইহা ক্রয়-বিক্রয়ের মতই। দুর্ব্যবহারের মোকাবেলায় উত্তম ব্যবহার করা এবং বঞ্চিত করার বদলে দান করাই প্রকৃত বদান্যতা ও উদারতার পরিচয়।
[3] - সুতরাং যেই মুসাফিরের কাছে টাকা-পয়সা এবং অন্যান্য সম্পদ রয়েছে, তার জন্য সাদকাহ ও মানুষের অন্যান্য অনুগ্রহ গ্রহণ করা জায়েয নেই।
[4] - অন্যথায় পরিণাম কী হতে পারে, এ সম্পর্কে নিম্নের হাদীছটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত আমার নিকটবর্তী হয়েছিল। আমি ইচ্ছা করলে জান্নাতের ফলসমূহ থেকে এক ছড়া ফল তোমাদের কাছে নিয়ে আসতে পারতাম। এমনিভাবে জাহান্নামও আমার নিকটবর্তী হয়েছিল। আমি বললামঃ হে আমার প্রতিপালক! আমাকেও কি তাদের সাথে রাখা হবে? হঠাৎ আমি সেখানে একটি মহিলা দেখতে পেলাম। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমার ধারণা তিনি বলেছেনঃ একটি বিড়াল মহিলাকে নখ দিয়ে খামচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করছিল। আমি বললামঃ এই মহিলাটির অবস্থা এমন কেন? তাঁরা বললেনঃ মহিলা বিড়ালটিকে অনাহারে মৃত্যু পর্যন্ত বেঁধে রেখেছিল। সে বিড়ালটিকে খেতে দেয়নি এবং যমীন থেকে পোকা-মাকড় ধরে খাওয়ার জন্য ছেড়েও দেয়নি। (বুখারী)