লগইন করুন
إخراج بعض العصاة من النار برحمة الله بغير شفاعة واتساع الجنة عن أهلها
কতিপয় গুনাহগারকে শাফাআত ব্যতীত শুধু আল্লাহর রহমতেই জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। জান্নাতীদের জান্নাতে প্রবেশের পর সেখানে জায়গা খালী থাকলে বা জান্নাতীদের তুলনায় জান্নাত অধিক প্রশস্ত হলে কী করা হবে?
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,
وَيُخْرِجُ اللَّهُ مِنَ النَّارِ أَقْوَامًا بِغَيْرِ شَفَاعَةٍ بَلْ بِفَضْلِهِ وَرَحْمَتِهِ وَيَبْقَى فِي الْجَنَّةِ فَضْلٌ عَمَّنْ دَخَلَهَا مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا فَيُنْشِئُ اللَّهُ لَهَا أَقْوَامًا فَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ وَأَصْنَافُ مَا تَضَمَّنَتْهُ الدَّارُ الْآخِرَةُ مِنَ الْحِسَابِ وَالثَّوَابِ وَالْعِقَابِ وَالْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَتَفاصِيلُ ذَلِكَ مَذْكُورَةٌ فِي الْكُتُبِ الْمُنَزَّلَةِ مِنَ السَّمَاءِ وَالْآثَارِ مِنَ الْعِلْمِ الْمَأْثُورِ عَنِ الْأَنْبِيَاءِ وَفِي الْعِلْمِ الْمَوْرُوثِ عَنْ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ ذَلِكَ مَا يَشْفِي وَيَكْفِي فَمَنِ ابْتَغَاهُ وَجَدَهُ
কোন শাফাআত ছাড়াই আল্লাহ তাআলা স্বীয় অনুগ্রহে ও দয়ায় অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে বের করবেন। দুনিয়াবাসীদের থেকে যারা জান্নাতবাসী হবে, তারা জান্নাতে প্রবেশ করার পরেও জান্নাতে কিছু বাড়তি জায়গা থাকবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা জান্নাতের জন্য নতুন কিছু মানুষ সৃষ্টি করবেন এবং তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আখেরাতের জগতে যেসব বিষয় হবে যেমন হিসাব, ভাল আমলের ছাওয়াব, মন্দ আমলের শাস্তি প্রদান, জান্নাত, জাহান্নাম ইত্যাদির বিস্তারিত বিবরণ আসমানি কিতাবসমূহে এবং নবীদের থেকে বর্ণিত ইলমের মধ্যে রয়েছে। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এ বিষয়ে যা বর্ণিত হয়েছে, তা অত্যন্ত সুস্পষ্ট এবং আমাদের জন্য তাই যথেষ্ট। যে ব্যক্তি তা অনুসন্ধান করবে, সে তা পেয়ে যাবে।
ব্যাখ্যা: (৯) কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার অনুমতিতে যত প্রকার শাফাআত হবে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঐসব লোকদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার শাফাআত, যারা ইতিমধ্যেই জাহান্নামে প্রবেশ করেছে। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) প্রথমে তাদের বিষয়টি উল্লেখ করার পর এখানে উল্লেখ করেছেন যে, শাফাআত ছাড়াও অন্য একটি কারণে অনেক লোক জাহান্নাম থেকে বের হবে। আর সেটি হচ্ছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার রহমত, অনুগ্রহ এবং তাঁর দয়া। সুতরাং তাওহীদপন্থী যেসব গুনাহগার মুমিনের অন্তরে একটি দানার চেয়েও কম পরিমাণ ঈমান থাকবে, তারা জাহান্নাম থেকে বের হবে। আল্লাহ তাআলা সূরা নিসার ৪৮ নং আয়াতে বলেনঃ
﴿إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ﴾
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করেন না। শির্ক ব্যতীত অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করেন’’। বুখারী ও মুসলিমের হাদীছে রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ
«شَفَعَتِ الْمَلاَئِكَةُ وَشَفَعَ النَّبِيُّونَ وَشَفَعَ الْمُؤْمِنُونَ وَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَرْحَمُ الرَّاحِمِينَ فَيَقْبِضُ قَبْضَةً مِنَ النَّارِ فَيُخْرِجُ مِنْهَا قَوْمًا لَمْ يَعْمَلُوا خَيْرًا قَطُّ»
‘‘ফেরেশতাগণ শাফাআত করেছে, নবীগণ শাফাআত করেছেন এবং মুমিনগণও শাফাআত করেছেন। এখন সবচেয়ে দয়ালু আল্লাহ তাআলা ছাড়া আর কারো শাফাআত বাকী নেই। অতঃপর তিনি জাহান্নামের আগুন থেকে একমুষ্ঠি গ্রহণ করবেন। এর মাধ্যমে তিনি জাহান্নাম থেকে এমন একদল মানুষকে বের করবেন, যারা কখনো কোন ভাল আমলই করেনি’’।[1]
ويبقى في الجنة فضل জান্নাতে কিছু বাড়তি জায়গা থাকবেঃ অর্থাৎ দুনিয়াবাসীদের থেকে যারা জান্নাতবাসী হবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করার পরও তাতে প্রশস্ত জায়গা খালী পড়ে থাকবে। কেননা আল্লাহ তাআলা জান্নাতকে খুব প্রশস্ত করে সৃষ্টি করেছেন। তিনি সূরা আল ইমরানের ১৩৩ নং আয়াতে বলেনঃ
﴿وَسَارِعُوا إِلَىٰ مَغْفِرَةٍ مِّن رَّبِّكُمْ وَجَنَّةٍ عَرْضُهَا السَّمَاوَاتُ وَالْأَرْضُ أُعِدَّتْ لِلْمُتَّقِينَ﴾
‘‘তোমরা দৌড়ে চলো তোমাদের রবের ক্ষমার পথে এবং সেই জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা পৃথিবী ও আকাশের সমান। মুত্তাকী লোকদের জন্য উহা তৈরী করে রাখা হয়েছে’’।
فَيُنْشِئُ اللَّهُt অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করবেন অনেক লোক। فيدخلهم الجنة অতঃপর তিনি তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহ ও দয়ায় জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। কেননা জান্নাত হচ্ছে আল্লাহর রহমত। এর মাধ্যমে তিনি যাকে ইচ্ছা দয়া করবেন। আর জাহান্নামে কেবল তাদেরকেই শাস্তি দিবেন, যারা হেদায়াতের দলীল পৌঁছার পর আল্লাহ তাআলাহকে অস্বীকার করেছে এবং রাসূলদেরকে অমান্য করেছে।وَأَصْنَافُ مَا تَضَمَّنَتْهُ الدَّارُ الْآخِرَةُ الخ..... আখেরাতের জগতে যেসব বিষয় হবে..ঃ শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া আখেরাত দিবসের অবস্থা এবং তাতে যা হবে, উহা থেকে অনেক বিষয় উল্লেখ করার পর বাকীগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানার জন্য কুরআন ও সুন্নাহর দিকে ফিরে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন। কেননা আখেরাতের বিষয়গুলো ইলমে গায়বের অন্তর্ভূক্ত, যা অহীর মাধ্যম ছাড়া অবগত হওয়া সম্ভব নয়।