লগইন করুন
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) বলেন,
بَلْ يُؤْمِنُونَ بِأَنَّ اللَّهَ لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ فلَا يَنْفُونَ عَنْهُ مَا وَصَفَ بِهِ نَفْسَهُ وَلَا يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَنْ مَوَاضِعِهِ
বরং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের লোকেরা বিশ্বাস করেন যে, সৃষ্টি জগতের কোনো কিছুই আল্লাহর মত নয়, অথচ তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। অতএব আল্লাহ তাআলা নিজেকে যেই সুউচ্চ গুণে গুণান্বিত করেছেন, তাকে তারা তাঁর থেকে নাকোচ করে না এবং আল্লাহর কালামকে আসল স্থান থেকে সরিয়ে ফেলে না।
ব্যাখ্যা: কুরআন ও সহীহ হাদীছে আল্লাহ্ তাআলার যেসব সিফাত (গুণাবলী) রয়েছে, কোন প্রকার تحريف (পরিবর্তন করা), تعطيل (অস্বীকার ও বাতিল করা), تكييف (পদ্ধতি ও ধরণ বর্ণনা করা) এবং কোনো প্রকার تمثيل (উদাহরণ, উপমা ও দৃষ্টান্ত পেশ করা) ব্যতীতই সেগুলোর প্রতি ঈমান আনয়ন করা ওয়াজিব, -এই কথা বলার পর শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমীয়া (রঃ) এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অবস্থান কী? তা বর্ণনা করেছেন। সুতরাং তিনি বলেছেন, সঠিক ও বিশুদ্ধ পদ্ধতিতেই তারা আল্লাহ তাআলার সেই সিফাতগুলোর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেন। সিফাতগুলোকে প্রকৃত অর্থসহকারেই তারা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করেন এবং একই সাথে সৃষ্টি জগতের কোন কিছুর সাথেই সেই সিফাতগুলোর সাদৃশ্য ও তুলনা করা থেকে দূরে থাকেন।
সুতরাং আহলে সুন্নাতের লোকেরা সিফাতগুলোকে অস্বীকারও করেন না এবং সেগুলোকে সৃষ্টির মাখলুকের সিফাতের সাথে তুলনাও করেন না। বরং সূরা শুরার ১১ নং আয়াতে যেভাবে আল্লাহর সিফাতের বর্ণনা এসেছে, তারা সেভাবেই বিশ্বাস করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,﴿لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ﴾ ‘‘সৃষ্টি জগতের কোনো কিছুই আল্লাহ তাআলার সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’। আল্লাহর বাণীঃ ليْس كَمِثْلِهِ شَيْءٌ ‘‘সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই আল্লাহ তাআলার সদৃশ নয়’’-এই কথা দ্বারা ঐ সব লোকের প্রতিবাদ করা হয়েছে, যারা আল্লাহকে মাখলুকের সাথে তুলনা করে। অর্থাৎ যারা বলে আল্লাহর সিফাতগুলো মাখলুকের সিফাতের মতই। আর আল্লাহর বাণীঃ وَهُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ ‘‘তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা’’ -এর দ্বারা আল্লাহর সিফাতে অবিশ্বাসীদের প্রতিবাদ করা হয়েছে। কেননা এর মধ্যে আল্লাহর জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টি সাব্যস্ত করা হয়েছে।
সুতরাং এই সম্মানিত আয়াতটি আসমা ওয়াস সিফাতের (আল্লাহর অতি সুন্দর নাম ও সুউচ্চ গুণাবলীর) অধ্যায়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের একটি সংবিধান ও মূলনীতিতে পরিণত হয়েছে। কেননা এটি একই সাথে আল্লাহর জন্য সিফাত সাব্যস্ত করে এবং মাখলুকের মধ্যে সেই সিফাতগুলোর উপমা ও দৃষ্টান্ত হওয়াকে অস্বীকার করে। সামনে এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ আসবে, ইনশা-আল্লাহ।