লগইন করুন
আল্লাহ তাআলা তাঁর সৃষ্টির হেদায়াত ও কল্যাণের জন্য যেসমস্ত নবী ও রাসূল পাঠিয়েছেন তাদের সকলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের অন্যতম রুকন। তারা যে সমস্ত বিষয়ের সংবাদ দিয়েছেন তাতে তারা সত্যবাদী। তারা তাদের প্রভুর রেসালাত পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করিনা; বরং তাদের সকলের উপর ঈমান রাখি। কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা যাদের নাম উল্লেখ করেছেন, তাদের প্রতি ঈমান রাখি এবং তাদের মধ্য হতে যাদের নাম উল্লেখ করেন নি তাদের সকলের প্রতি আমরা ঈমান রাখি। আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿وَرُسُلًا قَدْ قَصَصْنَاهُمْ عَلَيْكَ مِنْ قَبْلُ وَرُسُلًا لَمْ نَقْصُصْهُمْ عَلَيْكَ﴾
‘‘আর নিশ্চয়ই আমি তোমার নিকট ইতিপূর্বে বহু রাসূলের ঘটনা বর্ণনা করেছি এবং এমন আরো অনেক রাসূল রয়েছেন, যাদের কথা তোমাকে বলিনি’’। (সূরা নিসাঃ ১৬৪)
রাসূলদের মধ্যে সর্বোত্তম হলেন أولو العزم অর্থাৎ আল্লাহর দিকে দাওয়াত প্রচারে সুদৃঢ় ইচ্ছার অধিকারী রাসূলগণ।[1] তারা হলেন নূহ, ইবরাহীম, মুসা, ঈসা এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সম্মান ও মর্যাদার দিক দিয়ে তাদের পরে ছিলেন অন্যান্য রাসূলগণ। অতঃপর নবীগণ। নবী-রাসূলদের মধ্যে সর্বোত্তম ও সর্বশেষ হচ্ছেন আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। নবী ও রাসূলের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তার মধ্যে সর্বাধিক বিশুদ্ধ হচ্ছে নবী ঐ পুরুষ ব্যক্তিকে বলা হয়, যার কাছে শরীয়তের অহী পাঠানো হয়েছে, কিন্তু তাঁকে তাবলীগ করার আদেশ দেয়া হয়নি। আর রাসূল ঐ পুরুষ লোককে বলা হয়, যার কাছে আল্লাহর শরীয়ত পাঠানো হয়েছে এবং সেই শরীয়তের তাবলীগ করার আদেশও দেয়া হয়েছে।[2]
[2] - শাইখ এখানে নবী ও রাসূলের মধ্যকার যেই পার্থক্য বর্ণনা করেছেন, তাতে কোন কোন আলেম আপত্তি করেছেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে নতুন শরীয়ত দিয়ে কাউকে নবী করে পাঠানো হবে, অথচ তাকে সেই শরীয়ত প্রচার করার আদেশ দেয়া হবেনা, এটি কিভাবে হতে পারে? তাই তারা অন্যভাবে নবী ও রাসূলের মধ্যকার পার্থক্য নিরুপন করেছেন। তাদের মতে রাসূল হচ্ছেন সেই পুরুষ ব্যক্তি, যাকে আলাদা শরীয়তসহ প্রেরণ করা হয়েছে এবং তাকে সেই শরীয়ত মানুষের মধ্যে প্রচার করার আদেশ করা হয়েছে। আর নবী হচ্ছেন সেই পুরুষ ব্যক্তি, যাকে তার পূর্বের রাসূলের শরীয়ত অনুযায়ী স্বীয় উম্মতকে সংশোধন ও পরিচালনা করার জন্য পাঠানো হয়েছে।