লগইন করুন
عَنْ جَابِرٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ وَمَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ.
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে বিন্দুমাত্র শরীক করবে সে জাহান্নামে যাবে আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে বিন্দুমাত্র শরীক করবে না সে জান্নাতে যাবে’ (মুসলিম, মিশকাত, বাংলা মিশকাত ১ম খন্ড হা/৩৪, ‘ঈমান’ অধ্যায় হা/৩৮)।
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الله تَعَالَى : يَا ابْنَ آدَمَ، إنَّكَ مَا دَعَوْتَنِيْ وَرَجَوْتَنِيْ غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ مِنْكَ وَلاَ أُبَالِي. يَا ابْنَ آدَمَ ، لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوْبُكَ عَنَانَ السَّمَاءِ، ثُمَّ اسْتَغْفَرْتَنِيْ غَفَرْتُ لَكَ وَلاَ أُبَالِيْ. يَا ابْنَ آدَمَ، إِنَّكَ لَوْ أتَيْتَنِيْ بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا، ثُمَّ لَقِيْتَنِيْ لاَ تُشْرِكْ بِيْ شَيْئاً، لأَتَيْتُكَ بقُرَابِهَا مَغْفِرَةً-
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন, হে আদম সন্তান! যতদিন তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার নিকট ক্ষমার আশা রাখবে আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যাই হোক না কেন। আমি কারো পরওয়া করি না। আদম সন্তান তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্তও পৌঁছে অতঃপর তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, আমি ক্ষমা করার ব্যাপারে কারও পরওয়া করি না। আদম সন্তান তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার দরবারে উপস্থিত হও এবং আমার সাথে কোন শরীক না করে আমার সামনে আস, আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব’ (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, মিশকাত হা/২৩৩৬)।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللهُ بِضُرٍّ فَلاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّهُوَ وَإِنْ يَمْسَسْكَ بِخَيْرٍ فَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ-
‘যদি আল্লাহ তোমাকে কষ্ট দেন, তবে তিনি ব্যতীত তা অপসারণকারী আর কেউ নেই; পক্ষান্তরে যদি তোমার কল্যাণ দান করেন তবে তিনিই তো সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান’ (আন‘আম ১৭)।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
أَفَأَمِنُوا أَنْ تَأْتِيَهُمْ غَاشِيَةٌ مِنْ عَذَابِ اللهِ أَوْ تَأْتِيَهُمْ السَّاعَةُ بَغْتَةً وَهُمْ لاَ يَشْعُرُونَ-
‘আল্লাহ যদি তোমাকে কষ্ট দেন, তাহলে তিনি ব্যতীত তা মোচনকারী আর কেউ নেই; আর যদি আল্লাহ তোমার মঙ্গল চান তাহলে তাঁর অনুগ্রহ রদ করারও কেউ নেই। তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা তিনি মঙ্গল দান করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (ইউনুস ১০৭)।
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
قُلْ أَفَرَأَيْتُمْ مَا تَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللهِ إِنْ أَرَادَنِي اللهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كَاشِفَاتُ ضُرِّهِ أَوْ أَرَادَنِي بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكَاتُ رَحْمَتِهِ قُلْ حَسْبِي اللهُ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُونَ.
‘হে নবী আপনি বলুন! তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি আল্লাহ আমাকে কষ্ট দেয়ার ইচ্ছা করেন, তবে তোমরা আল্লাহ্কে ছেড়ে দিয়ে যাদেরকে ডাক তারা কি সে কষ্ট দূর করতে পারবে? অথবা তিনি আমার প্রতি রহমত করা ইচ্ছা করলে তারা কি সে রহমত রোধ করতে পারবে? বলুন, আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে’ (যুমার ৩৮)।
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ تَعَلَّقَ تَمِيمَةً فَلاَ أَتَمَّ اللهُ لَهُ وَمَنْ تَعَلَّقَ وَدَعَةً فَلاَ وَدَعَ اللهُ لَهُ.
উক্ববাহ ইবনু আমির (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি তা‘বীয ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে পূর্ণতা দিবেন না। আর যে কড়ি ব্যবহার করবে আল্লাহ তাকে মঙ্গল দান করবেন না (আহমাদ হা/১৬৭৬৩, হাদীছ ছহীহ)।
عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ الْجُهَنِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْبَلَ إِلَيْهِ رَهْطٌ فَبَايَعَ تِسْعَةً وَأَمْسَكَ عَنْ وَاحِدٍ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ بَايَعْتَ تِسْعَةً وَتَرَكْتَ هَذَا قَالَ إِنَّ عَلَيْهِ تَمِيمَةً فَأَدْخَلَ يَدَهُ فَقَطَعَهَا فَبَايَعَهُ وَقَالَ مَنْ عَلَّقَ تَمِيمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ-
উক্ববাহ ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসূল (ছাঃ)-এর খিদমতে একদল লোক উপস্থিত হল। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) দলটির ৯ জনকে বায়‘আত করালেন এবং একজনকে বায়‘আত করালেন না। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি ৯ জনকে বায়‘আত করালেন আর একজনকে ছেড়ে দিলেন? রাসূল (ছাঃ) বললেন, তার সাথে একটি তা‘বীয রয়েছে। তখন লোকটি হাত ভিতরে ঢুকিয়ে তা‘বীয ছিড়ে ফেললেন। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তাকেও বায়‘আত করালেন এবং বললেন, যে ব্যক্তি তা‘বীয ব্যবহার করল সে শির্ক করল’ (আহমাদ হা/১৬৭৭১, হাদীছ ছহীহ)।
عَنْ رُوَيْفِعَ بْنَ ثَابِتٍ يَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ يَا رُوَيْفِعُ لَعَلَّ الْحَيَاةَ سَتَطُولُ بِكَ بَعْدِي فَأَخْبِرْ النَّاسَ أَنَّهُ مَنْ عَقَدَ لِحْيَتَهُ أَوْ تَقَلَّدَ وَتَرًا أَوْ اسْتَنْجَى بِرَجِيعِ دَابَّةٍ أَوْ عَظْمٍ فَإِنَّ مُحَمَّدًا بَرِيءٌ مِنْهُ إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ-
রুওয়াইফী‘আ ইবনু ছাবিত (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘হে রুওয়াইফা! হয়তো তুমি আমার পরেও অনেক দিন বেঁচে থাকবে। সুতরাং তুমি লোকদেরকে এ কথা বলে দিও যে, যে ব্যক্তি দাড়িতে গিট দিল অথবা তা‘বীয জাতীয় বেল্ট বা সুতা (ছেলে-মেয়ের বা প্রাণীর গলায়) পরাল কিংবা চতুষ্পদ জন্তুর গোবর অথবা হাড় দিয়ে ইসতেঞ্জা করল, নিশ্চয়ই তার সাথে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর কোন সম্পর্ক নেই’ (আবূদাঊদ, মিশকাত হা/৩৫১ সনদ ছহীহ, বাংলা মিশকাত ২য় খন্ড, হা/৩২৪ ‘পেশাব-পায়খানার শিষ্টাচার’ অনুচ্ছেদ)।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمُ وَالتِّوَلَة شِرْكٌ ‘নিশ্চয়ই ঝাড়ফুঁক তা‘বীয এবং ভালবাসা সৃষ্টি করার জন্য কৌশল অবলম্বন করা শির্ক’ (আবূদাঊদ সনদ হাসান, মিশকাত হা/৪৫৫২, বঙ্গানুবাদ ৮ম খন্ড, হা/৪৩৫৩ ‘চিকিৎসা ও ঝাড়ফুঁক’ অধ্যায়)।
অত্র আয়াত এবং হাদীছসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কোন মাধ্যমে রোগ মুক্তি চাওয়া বা বিপদ থেকে বাঁচতে চাওয়া শিরক। যেমন রোগ মুক্তির আশায় তামার বালা অথবা অষ্ট ধাতুর আংটি ব্যবহার করা শির্ক। গাভীকে যে কোন ক্ষতি থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে গাভীর গলায় চামড়া ব্যবহার করা বালা-মছীবত থেকে বাঁচার জন্য সাদা কড়ি চুলে বেঁধে ব্যবহার করা বাচ্চাকে শয়তানের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার আশায় কালো সুতায় গিরাহ দিয়ে ব্যবহার করা বাচ্চা যেন না মরে এ আশায় কান ফুঁড়িয়ে বালি ব্যবহার করা এবং যে কোন উদ্দেশ্যে তাবীয ব্যবহার করা শির্ক। কারণ যে কোন সমস্যার সমাধান একমাত্র আল্লাহ করতে পারেন অন্য কিছু নয়। তবে জীবিত মানুষের মাধ্যমে বিপদ থেকে বাঁচতে চাওয়া যায়। যেমন উমর (রাঃ) আববাস ইবনু আব্দুল মুত্তালিব (রাঃ)-কে পানি চাওয়ার মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন (বুখারী, মিশকাত হা/১৫০৯)। এবং ভাল আমলের মাধ্যমে বিপদ থেকে বাঁচতে চাওয়া যায়। যেমন তিনজন ব্যক্তি গর্তে অাঁটকা পড়লে ভাল আমলের মাধ্যমে বাঁচতে চেয়েছিলেন (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৩৮)।