লগইন করুন
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় পাপ হচ্ছে শির্ক করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ‘আর যখন লুকমান হাকিম তার ছেলেকে বললেন, হে আমার আদরের সমত্মান! তুমি আল্লাহর সাথে শিরক করো না। নিশ্চয়ই শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ’ (লুকমান ১৩)। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ- ‘নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করেছেন এবং তার বাসস্থান হচ্ছে জাহান্নাম। আর অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই’ (আল-মায়িদাহ ৭২)।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন, وَلَوْ أَشْرَكُوا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ- ‘যদি তারা শির্ক করে তাহলে তাদের আমলসমূহ নষ্ট হয়ে যাবে’ (আন‘আম ৮৮)।
আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنْ الْخَاسِرِينَ-
‘আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি আদেশ করা হয়েছে যে, যদি আপনি আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করেন তাহলে আপনার আমল নষ্ট হয়ে যাবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন’ (যুমার ৬৫)।
আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,
إِنَّ اللهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا-
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না, যে লোক তাঁর সাথে শির্ক করে। আর তিনি এর চেয়ে নিম্নপর্যায়ের পাপ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর আল্লাহর সাথে যারা শিরক করে, নিশ্চয়ই তারা মহাপাপে জড়িয়ে মিথ্যা রচনা করে’ (আন-নিসা ৪৮)।
عَنْ عَبْدُ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ أَىُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَدْعُوَ ِللهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ. قَالَ ثُمَّ أَىٌّ قَالَ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ مَخَافَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ. قَالَ ثُمَّ أَىٌّ قَالَ أَنْ تُزَانِىَ حَلِيلَةَ جَارِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَهَا (وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِى حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا) الآية.
আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর নিকটে কোন্ গোনাহটি সবচেয়ে বড়? তিনি বললেন, আল্লাহর কোন সমকক্ষ সাব্যস্ত করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলল, তারপর কোন্টি? তিনি বললেন, তোমার সন্তানকে হত্যা করা এই ভয়ে যে, সে তোমার সাথে খাবে (অর্থাৎ দারিদ্রে্যর ভয়ে সন্তান হত্যা করা) সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে তোমার ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া’। রাসূল(সা.) -এর একথারই সত্যায়ন করে আল্লাহ পাক (নেক্কার লোকদের প্রশংসায় আয়াত নাযিল করেন, ‘এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্যকে আহবান করে না এবং যারা নাহকভাবে মানুষ হত্যা করে না যাকে আল্লাহ হারাম করেছেন এবং যারা ব্যভিচার করে না’ (ফুরক্বান ৬৮; বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯)।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِىِّ قَالَ الْكَبَائِرُ الإِشْرَاكُ بِاللهِ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ، وَالْيَمِينُ الْغَمُوسُ، وَشَهَادَةُ الزُّورِ. وَفِي رِوَايَةِ أَنَسٍ: وَشَهَادَةُ الزُّورِ.
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ রাযিয়াল্লাহু আলাহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)এরশাদ করেছেন যে, কাবীরা গোনাহ সমূহ হ’ল : (১) আল্লাহর সাথে শরীক করা (২) পিতামাতার অবাধ্য হওয়া (৩) মানুষ হত্যা করা এবং (৪) মিথ্যা শপথ করা’ (বুখারী)। কিন্তু আনাস (রা.) -এর বর্ণনায় ‘মিথ্যা শপথ’-এর বদলে ‘মিথ্যা সাক্ষ্য’ শব্দ এসেছে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫০)।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ قَالَ اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ. قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ، وَمَا هُنَّ قَالَ الشِّرْكُ بِاللهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِى حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ، وَالتَّوَلِّى يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلاَتِ.
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বিষয় হ’তে দূরে থাকবে। ছাহাবীগণ বললেন, সেগুলি কী? আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, (১) আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করা (২) জাদু করা (৩) নাহকভাবে কোন মানুষকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন (৪) সুদ খাওয়া (৫) ইয়াতীমের মাল (অন্যায়ভাবে) ভক্ষণ করা (৬) জিহাদের ময়দান থেকে পালিয়ে যাওয়া এবং (৭) সরলা নির্দোষ মুমিন মহিলাদের নামে ব্যভিচারের অপবাদ দেওয়া’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫২)।
عَنْ مُعَاذٍ قَالَ أَوْصَانِى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِعَشْرِ كَلِمَاتٍ قَالَ لاَ تُشْرِكْ بِاللهِ شَيْئًا وَإِنْ قُتِلْتَ وَحُرِّقْتَ وَلاَ تَعُقَّنَّ وَالِدَيْكَ وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ وَلاَ تَتْرُكَنَّ صَلاَةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّداً فَإِنَّ مَنْ تَرَكَ صَلاَةً مَكْتُوبَةً مُتَعَمِّداً فَقَدْ بَرِئَتْ مِنْهُ ذِمَّةُ اللهِ وَلاَ تَشْرَبَنَّ خَمْراً فَإِنَّهُ رَأْسُ كُلِّ فَاحِشَةٍ وَإِيَّاكَ وَالْمَعْصِيَةَ فَإِنَّ بِالْمَعْصِيَةِ حَلَّ سَخَطُ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ وَإِيَّاكَ وَالْفِرَارَ مِنَ الزَّحْفِ وَإِنْ هَلَكَ النَّاسُ وَإِذَا أَصَابَ النَّاسَ مَوْتٌ وَأَنْتَ فِيهِمْ فَاثْبُتْ وَأَنْفِقْ عَلَى عِيَالِكَ مِنْ طَوْلِكَ وَلاَ تَرْفَعْ عَنْهُمْ عَصَاكَ أَدَباً وَأَخِفْهُمْ فِى اللهِ.
মু‘আয বিন জাবাল (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)আমাকে ১০টি বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, (১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না। যদিও তোমাকে হত্যা করা হয় বা জ্বালিয়ে দেওয়া হয় (২) তুমি তোমার পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না। যদিও তারা তোমাকে তোমার পরিবার ও মাল-সম্পদ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন (৩) ইচ্ছাকৃতভাবে কখনো ফরয ছালাত ত্যাগ করবে না। তার পক্ষে আল্লাহর যিম্মাদারী উঠে যাবে (৪) কখনোই মাদক সেবন করবে না। কেননা এটিই হ’ল সকল অশ্লীলতার মূল (৫) সর্বদা গোনাহ থেকে দূরে থাকবে। কেননা গোনাহের মাধ্যমে আল্লাহর ক্রোধ আপতিত হয় (৬) সাবধান! জিহাদের ময়দান হ’তে পলায়ন করবে না। যদিও সকল লোক ধ্বংস হয়ে যায়। (৭) যদি কোথাও মহামারী দেখা দেয়, এমতাবস্থায় তুমি যদি সেখানে থাক। তাহ’লে তুমি সেখানে দৃঢ়ভাবে অবস্থান করবে মৃত্যুর ভয়ে পালাবে না)। (৮) তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় করবে (অযথা কৃপণতা করে তাদের কষ্ট দিবে না)। (৯) তাদের উপর থেকে শাসনের লাঠি তুলে নিবে না এবং (১০) তাদেরকে সর্বদা আল্লাহর ভয় দেখাবে (আহমাদ, মিশকাত হা/৬১)।