লগইন করুন
যে কোন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করা যরূরী। ছালাত আদায় না করে বসা যাবে না। উল্লেখ্য, মসজিদের নামে দু’রাক‘আত হতে হবে এমনটি যরূরী নয়। যে কোন ছালাত হতে পারে। অর্থাৎ বসার পূর্বে কোন না কোন ছালাত হতে হবে।
عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا دَخَلَ أَحَدُكُمُ الْمَسْجِدَ فَلاَ يَجْلِسْ حَتَّى يُصَلِّىَ رَكْعَتَيْنِ-
আবু ক্বাতাদা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে, তখন সে যেন দু’রাক‘আত ছালাত আদায় না করা পর্যন্ত না বসে’ (বুখারী, মুসলিম, রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১১৪৪; মিশকাত হা/৭০৪)।
عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ صَلِّ رَكْعَتَيْنِ-
জাবির (রাঃ) বলেন, আমি নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট আসলাম, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। তিনি বললেন, দু’রাক‘আত ছালাত আদায় কর’ (বুখারী, মুসলিম, রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১১৪৫; মিশকাত হা/৭০৪)। প্রকাশ থাকে যে, ছালাত আদায় করা নিষিদ্ধ সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলেও ছালাত আদায় করা ব্যতীত বসা যাবে না। কারণ এ হচ্ছে মসজিদের হক্ব, যা যে কোন সময়ে আদায় করা আবশ্যক।
সফর থেকে এসে প্রথমে মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে বাড়ীতে আসা ভাল। এতে সফর ও বাড়ীর কল্যাণ কামনা করা হবে।
عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لاَ يَقْدَمُ مِنْ سَفَرٍ إِلاَّ نَهَارًا فِي الضُّحَى فَإِذَا قَدِمَ بَدَأَ بِالْمَسْجِدِ فَصَلَّى فِيْهِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ جَلَسَ فِيْهِ-
কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যখনই সফর থেকে বাড়িতে আসতেন, তখনই দিনের প্রথম ভাগে আসতেন। প্রথমে তিনি মসজিদে প্রবেশ করতেন। সেখানে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন। তারপর মসজিদে বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেন’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭০৫)।
ওযূ করে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করা ভাল। এতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم يَقُوْلُ مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوْءَ، ثُمَّ قَامَ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ أَوْ أَرْبَعًا يَشُكُّ سَهْلٌ يُحْسِنُ فِيْهِنَّ الذِّكْرَ وَالْخُشُوْعَ ثُمَّ اسْتَغْفَرَ اللهَ غُفِرَ لَهُ-
আবু দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করে দু’রাক‘আত বা চার রাক‘আত (রাবী সাহল সন্দেহ করেন) ছালাত আদায় করল, যাতে সে যিকর ও নম্রতা অবলম্বন করল, অতঃপর আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করল, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন’ (আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/৩৪৬)।
আযানের পর দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করা ভাল। যেসব আমলের বিনিময়ে মানুষ পরকালে বড় লাভবান হবে আযানের পর দু’রাক‘আত ছালাত তার অন্যতম।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُغَفَّلٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ، بَيْنَ كُلِّ أَذَانَيْنِ صَلاَةٌ ثُمَّ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ لِمَنْ شَاءَ-
আব্দুল্লাহ ইবনু মুগাফ্ফাল (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, প্রত্যেক আযান ও ইক্বামতের মধ্যে ছালাত রয়েছে, প্রত্যেক আযান ও ইক্বামতের মধ্যে ছালাত রয়েছে। অতঃপর তৃতীয়বারে বলেন, যে ইচ্ছা করে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৬৬২; বাংলা মিশকাত হা/৬১১)।
জুম‘আর দিন খুৎবা শুরু হয়ে গেলেও কমসে কম দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতে হবে।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَخْطُبُ إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ وَلْيَتَجَوَّزْ فِيْهِمَا-
জাবির (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) খুৎবা দেওয়ার সময় বললেন, যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি ইমামের খুৎবা দেয়ার সময় আসে তখন সে যেন সংক্ষিপ্তভাবে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে নেয়’ (মুসলিম, মিশকাত হা/১৪১১; বাংলা মিশকাত হা/১৩২৭)। জুম‘আর খুৎবা চলাকালীনও দু’রাক’আত ছালাত আদায় করা ব্যতীত বসা যাবে না।
এশরাক, চাশত ও আওয়াবীন তিন নামে এক ছালাত। সাধারণত সকালের দিকে এই ছালাত আদায় করা হলে মানুষ তাকে এশরাক বলে। আর একটু দেরী করে ১০/১১-টার দিকে আদায় করলে মানুষ তাকে চাশত বা আওয়াবীন বলে। প্রকাশ থাকে যে, মাগরিবের পর ছয় রাক‘আত ছালাতের নাম আওয়াবীন বলে কোন হাদীছ নেই। মাগরিবের পর ছয় রাক‘আত ছালাত পড়ার প্রমাণে বর্ণিত হাদীছটি নিতান্তই যঈফ।
عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «صَلَاةُ الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلَى صَلَاتِهِ فِي بَيْتِهِ وَفِي سُوقِهِ خَمْسًا وَعِشْرِينَ ضِعْفًا وَذَلِكَ أَنَّهُ إِذَا تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ لَا يُخْرِجُهُ إِلَّا الصَّلَاةُ لَمْ يَخْطُ خُطْوَةً إِلَّا رُفِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَةٌ وَحُطَّ عَنْهُ بِهَا خَطِيئَةٌ فَإِذَا صَلَّى لَمْ تَزَلِ الْمَلَائِكَةُ تُصَلِّي عَلَيْهِ مَا دَامَ فِي مُصَلَّاهُ اللهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ الله ارْحَمْهُ وَلَا يَزَالُ أَحَدُكُمْ فِي صَلَاةٍ مَا انْتَظَرَ الصَّلَاةَ» . وَفِي رِوَايَةٍ: قَالَ «إِذَا دَخَلَ الْمَسْجِدَ كَانَتِ الصَّلَاةُ تَحْبِسُهُ» . وَزَادَ فِي دُعَاءِ الْمَلَائِكَةِ: اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللهُمَّ تُبْ عَلَيْهِ. مَا لَمْ يُؤْذِ فِيهِ مَا لَمْ يُحْدِثْ فِيهِ.
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তির মসজিদে জামা‘আতে ছালাত আদায়ের নেকী তার ঘরে বা তার বাজারে ছালাত আদায় অপেক্ষা পঁচিশ গুণ বেশী। আর এই নেকী তখনই হয় যখন সে ব্যক্তি সুন্দর করে ওযূ করে আর একমাত্র ছালাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে যায়। এমতাবস্থায় সে যত পদক্ষেপ রাখে প্রত্যেক পদক্ষেপের দরুণ একটা করে পদ উন্নত করা হয় এবং একটা করে গুনাহ ক্ষমা করা হয়। অতঃপর যখন সে ছালাত আদায় করতে থাকে ফিরিশতাগণ তার জন্য দো‘আ করতে থাকেন। তারা বলেন, اللهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ الله ارْحَمْهُ اللهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللهُمَّ تُبْ عَلَيْهِ- হে আল্লাহ তুমি তার প্রতি অনুগ্রহ কর, হে আল্লাহ তুমি তারপ্রতি দয়া কর, হে আল্লাহ তুমি তাকে ক্ষমা কর, হে আল্লাহ তুমি তার তওবা কবুল কর। আর এভাবে তারা বলতে থাকে যে পর্যন্ত সে ছালাত আদায়ের স্থানে থাকে। যতক্ষণ সে কাউকে কষ্ট না দেয় এবং ওযূ ভঙ্গ না করে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৭০২; বাংলা মিশকাত হা/৬৫০)।