লগইন করুন
عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ مَرْفُوْعًا مُرْسَلاً أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ قَبْلَ الظُّهْرِ يَعْدِلْنَ بِصَلاَةِ السَّحْرِ-
আবু ছালেহ মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, ‘যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত রাতের তাহাজ্জুদ ছালাতের সমান’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৩৬)।
যোহরের পুর্বে চার রাক‘আত সুন্নাত ছালাত আদায় করলে রাতে তাহাজ্জুদ ছালাত আদায় করার সমান নেকী হবে।
عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ زَادَكُمْ صَلاَةً إِلَى صَلاَتِكُمْ هِىَ خَيْرٌلَّكُمْ مِنْ حُمْرِ النِّعَمِ اَلاَ وَهِيَ رَكَعَتَانِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ-
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ছালাতের উপর একটি ছালাত বৃদ্ধি করেছেন তা তোমাদের জন্য লাল উটের চেয়ে উত্তম। আর তা হচ্ছে ফজরের পূর্বে দু’রাক‘আত সুন্নাত ছালাত’ (সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৫৯)। সেকালে আরবের লোকদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ছিল লাল উট। অতএব লাল উট যেমন মানুষের কাছে সবচেয়ে বেশী কল্যাণকর তেমনি ফজরের দু’রাক‘আত সুন্নাত ছালাতও মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশি কল্যাণকর।
عَنْ رَبِيْعَةَ بْنِ كَعْبٍ قَالَ كُنْتُ أَبِيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَتَيْتُهُ بِوَضُوْئِهِ وَحَاجَتِهِ فَقَالَ لِيْ سَلْ فَقُلْتُ أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ فِي الْجَنَّةِ قَالَ أَوَ غَيْرَ ذَلِكَ قُلْتُ هُوَ ذَاكَ قَالَ فَأَعِنِّيْ عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُوْدِ-
রাবী‘আ ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন আমি রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে রাত্রি যাপন করতাম। একদা তাঁর ওযূ ও এস্তেঞ্জার পানি উপস্থিত করলাম। তিনি আমাকে বললেন, তোমার কিছু চাওযার থাকলে চাও। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সাথে জান্নাতে থাকতে চাই। রাসূল (ছাঃ) বললেন, এছাড়া আর কিছু চাও। আমি বললাম, এটাই চাই। তিনি বললেন, তাহলে বেশী বেশী করে সিজদা করে এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য কর’ (মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৬; বাংলা মিশকাত হা/৮৩৬)।
এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, বেশী বেশী নফল ছালাত আদায় করলে রাসূল (ছাঃ)-এর সাথে জান্নাতে থাকার সুযোগ হবে।
عَنْ أُمِّ حَبِيْبَةَ أُمِّ اَلْمُؤْمِنِيْنَ رَضِيَ اَللهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى اِثْنَتَا عَشْرَةَ رَكْعَةً فِيْ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ بُنِيَ لَهُ بِهِنَّ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعًا قَبْلَ اَلظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ اَلْمَغْرِبِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ-
উম্মু হাবীবা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দিন-রাতে বার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে। চার রাক‘আত যোহরের পূর্বে, দুই রাক‘আত যোহরের পরে, দুই রাক‘আত মাগরিবের পরে, দুই রাক‘আত এশার পরে এবং দু’রাক‘আত ফজরের পূর্বে’ (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, তাহক্বীক্বে মিশকাত হা/১১৫৯; বাংলা মিশকাত হা/১০৯১)।
এ হাদীছ দ্বারা বুঝা যায় যে, পাঁচ ওয়াক্ত ছালাতের সাথে বার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করলে প্রতি বার রাক‘আতের বিনিময়ে জান্নাতে একটি করে ঘর নির্মাণ করা হবে।
عَنْ أُمِّ حَبِيْبَةَ أُمِّ اَلْمُؤْمِنِيْنَ رَضِيَ اَللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ اَلظُّهْرِ وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا حَرَّمَهُ اَللهُ عَلَى اَلنَّارِ-
উম্মু হাবীবা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি বরাবর যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং যোহরের পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের প্রতি হারাম করে দিবেন’ (আহমাদ, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৬৭; বাংলা মিশকাত হা/১০৯৯)।
অত্র হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং পরে চার রাক‘আত সুন্নাত ছালাত পড়া যায়। এর প্রতিদানে জাহান্নামকে তার প্রতি হারাম করা হবে। এরূপ আমলকারী জাহান্নামে যাবে না বরং জান্নাতে যাবে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ السَّائِبِ رَضِيَ اَللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّي أَرْبَعًا بَعْدَ أَنْ تَزُوْلَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ وَقَالَ إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيْهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِيْ فِيْهَا عَمَلٌ صَالِحٌ-
আবদুল্লাহ ইবনু সায়েব (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) সূর্য ঢলে যাওয়ার পর যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন এবং বলতেন যে এই সময় এমন এক সময় যাতে আসমানের দরজা সমূহ খোলা হয়। অতএব আমি ভালাবাসি যে এ সময় আমার ভাল আমল উপরে উঠে যাক’ (তিরমিযী, হাদীছ ছহীহ, আলবানী, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৬৯; বাংলা মিশকাত হা/১১০১)।
ব্যাখ্যা : সূর্য ঢলামাত্র আসমানের দরজা খোলা হয়। প্রত্যেক মানুষের জন্য কর্তব্য এসময় কিছু সৎ আমল উপরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। এজন্য যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা ভাল।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اَللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَحِمَ اللهُ إِمْرَاءً صَلَّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعًا-
আবদুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আছরের পূর্বে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করে আল্লাহ তার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন’ (আহমাদ, হাদীছ ছহীহ, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৭০)। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূল (ছাঃ) আছরের পূর্বে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতেন (আবুদাঊদ, হাদীছ ছাহীহ, তাহক্বীক্ব মিশকাত হা/১১৭২; বাংলা মিশকাত হা/১১০৪)।
ব্যাখ্যা : আছরের পূর্বে কোন ব্যক্তি চার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করলে আল্লাহ তার প্রতি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। এমন ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) রহমত বর্ষণের দো‘আ করেছেন। তবে আছরের পূর্বে দু’রাক‘আতও পড়া যায়।