নবী (সা.) এর ছলাত সম্পাদনের পদ্ধতি সালাত বিষয়ে বিস্তারিত মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দিন আলবানী (রহ.)
فضل السجود সাজদার ফযীলত

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেনঃ


مَا مِنْ أُمَّتِي مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَأَنَا أَعْرِفُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " ، قَالُوا : وَكَيْفَ تَعْرِفُهُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ فِي كَثْرَةِ الْخَلَائِقِ ؟ قَالَ : " أَرَأَيْتَ لَوْ دَخَلْتَ صَبْرَةً فِيهَا خَيْلٌ دُهْمٌ بُهْمٌ ، وَفِيهَا فَرَسٌ أَغَرُّ مُحَجَّلٌ ، أَمَا كُنْتَ تَعْرِفُهُ مِنْهَا ؟ " قَالَ : بَلَى . قَالَ : فَإِنَّ أُمَّتِي يَوْمَئِذٍ غُرٌّ مِنَ السُّجُودِ ، مُحَجَّلُونَ مِنَ الْوُضُوءِ

আমার যে কোন উম্মতকে কিয়ামতের দিন আমি চিনে নিতে পারব। ছাহাবাগণ বললেনঃ এতসব সৃষ্টিকুলের মধ্যে আপনি তাদেরকে কিভাবে চিনবেন হে আল্লাহর রাসূল? তিনি উত্তরে বললেনঃ তুমি যদি কোন আস্তাবলে[1] প্রবেশ করা যেখানে নিছক কাল ঘোড়ার মধ্যে এমন সব ঘোড়াও থাকে যেগুলোর হাত পা[2] ও মুখ ধবধবে সাদা। তবে কি তুমি উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে না? ছাহাবী বললেনঃ হ্যাঁ, পারব। তিনি বললেনঃ ঐ দিন সাজদার কারণে আমার উম্মতের চেহারা[3] সাদা ধবধবে হবে, আর ওযুর কারণে হাত-পা উজ্জ্বল সাদা[4] হবে।[5] তিনি আরো বলতেনঃ

إذا أراد الله رحمة من أراد من أهل النار، أمر الله الملائكة أن يخرجوا من يعبد الله، فيخرجونهم ويعرفونهم بآثار السجود، وحرم الله على النار أن تأکل أثر السجود، فیخرجون من النار فکل ابن آدم تأکله النارالا اثر السجود

আল্লাহ যখন জাহান্নামীদের কাউকে দয়া করতে চাইবেন তখন ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিবেন ঐ লোকদের বের করার জন্য যারা আল্লাহ্‌র ইবাদত করতো। অনন্তর তারা তাদেরকে বের করবেন। তারা তাদেরকে সাজদার চিহ্নসমূহ দেখে চিনে নিবেন। আল্লাহ আগুনের উপর সাজদার চিহ্ন ভক্ষণ হারাম করে দিয়েছেন। এভাবে তারা তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করবেন। বস্তুতঃ আদম সন্তানের সর্বাঙ্গ আগুন ভক্ষণ করবে শুধু সাজদার স্থান ব্যতীত।[6]

[1] এখানে মূলেঃ صيرة শব্দের অর্থঃ আস্তাবল— যা পশুর জন্যে পাথর অথবা বৃক্ষের ডাল-পালা দ্বারা বানানো হয়। এর বহুবচন হচ্ছে صير ‘আননিহায়াহ’। পূর্বের মুদ্রণগুলোতে صبرة শব্দ বসানো ছিল যার অর্থ (পেশ দ্বারা) স্তুপীকৃত বস্তু বুঝায়। এটি ভুল ছিল যা সন্মানিত শাইখ বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু যাইদ ২০-২-১৪০৯ হিজর পত্র মারফত আমাকে অবহিত করেছেন। আল্লাহ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

[2] এখানে মূলে যে المحجل শব্দ রয়েছে তার অর্থ হচ্ছে এমন ব্যক্তি যার হাত ও পা’র বেড়ি বন্ধনের স্থান পর্যন্ত উচ্চে শুভ্রতা ছড়ায় যা কজি অতিক্রম করে কিন্তু হাঁটু অতিক্রম করে না। কেননা এ দুটি হাজল তথা নুপুর ও বেড়ি বন্ধনের স্থান। শুধু এক হাতের বা দুই হাতের শুভ্রতা দ্বারা محجل হবেনা যতক্ষণ না এক বা উভয় পায়েও তা বিদ্যমান থাকবে।

[3] মূলে العزة শব্দটির অর্থঃ মুখমণ্ডলের শুভ্ৰতা। এখানে উযুর মাধ্যমে মুখমণ্ডলের শুভ্রতা উদ্দেশ্য।

[4] এখানে محجلون শব্দের অর্থ হচ্ছে- উযুর মাধ্যমে হাত, পা ও মুখমণ্ডলের সাদা স্থানসমূহ। মানুষের দু’হাত, পা ও চেহারায় ফুটে উঠা চিহ্নকে ঘোড়ার হাত, পা ও চেহারার শুভ্রতার সাথে রূপকার্থে সদৃশতা দেয়া হয়েছে।

[5] ছহীহ সনদে আহমাদ, তিরমিযী এর কিয়দাংশ বর্ণনা করে ছহীহ বলেছেন। হাদীছটিকে ‘আছ ছাহীহা’ গ্রন্থে উদ্ধৃত করা হয়েছে।

[6] বুখারী ও মুসলিম। এ হাদীছে পাওয়া যাচ্ছে যে, পাপী মুছাল্পীগণ জাহান্নামে চীরস্থায়ী হবে না, এমনিভাবে অলসতাবশত ছালাত তরককারী তাওহীদবাদী ব্যক্তিও চীরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না। এ বিষয়টি বিশুদ্ধভাবে সাব্যস্ত হয়েছে দেখুন ‘আছ ছাহীহা’ (২০৫৪)। (উল্লেখ্য যে, শেষোক্ত কথাটি লেখকের মত যা সংশ্লিষ্ট হাদীছের মর্ম বিরোধী -সম্পাদক)