লগইন করুন
صَلَّيْتُ لَيْلَةً مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَزَلْ قَائِمًا حَتَّى هَمَمْتُ بِأَمْرِ سُوءٍ " قِيلَ لَهُ : وَمَا هَمَمْتَ بِهِ ؟ قَالَ : " هَمَمْتُ أَنْ أَقْعُدَ وَأَدَعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আমি এক রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে ছালাত পড়ি, তিনি এত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন যে, এক পর্যায়ে আমি একটি মন্দ পরিকল্পনা করে ফেলছিলাম। জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কী পরিকল্পনা করেছিলেন? তিনি বললেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বাদ দিয়ে বসে পড়ার পরিকল্পনা করেছিলাম।[1]
হুযাইফা বিন ইয়ামান (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বলেনঃ
صليت مع النبي صلى الله عليه وسلم ذات ليلة فافتتح البقرة فقلت : یر کع عند المائة، ثم مضی فقلت : یصلي بها في (رکعتین)، فمضی، فقلت : يركع بها، ثم افتتح النساء فقرأها، ثم افتتح آل عمران فقرأها، يقرأ مترسلا، إذا مر بآية فيها تسبيح سبح، وإذا مر بسؤال سأل، وإذا مر بتعوذ تعوذ، ثم رکع ...... الحدیث
আমি এক রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সাথে ছালাত পড়ি। তিনি ‘সূরা বাকারা' দিয়ে শুরু করলেন। আমি মনে মনে বললাম, একশত আয়াত পূর্ণ করে হয়ত রুকু করবেন, কিন্তু না- তিনি অতিক্রম করে গেলেন। আমি বললাম, হয়ত একে দুই রাকাআতে ভাগ করে পড়বেন- কিন্তু তাও না, তিনি পড়তে থাকলেন। এবার ভাবলাম এটা শেষ করে বোধ হয় রুকু করবেন, না। তিনি সূরা 'নিসা’ শুরু করলেন এবং পূরোটাও পড়ে ফেললেন। এরপর “আ-লে ইমরান”[2] ধরলেন ও পাঠও সম্পন্ন করলেন। তিনি থেমে থেমে তা পাঠ করছিলেন। আল্লাহর পবিত্ৰতা জ্ঞাপক আয়াত আসলে তিনি পবিত্ৰতা জ্ঞাপন করতেন। আবেদন মূলক আয়াতে আবেদন করতেন। আশ্রয় ভিক্ষার আয়াতে আশ্রয় ভিক্ষা করতেন। অতঃপর রুকু করেন ..... আলহাদীছ।[3]
এক রাতে ব্যথিত শরীর নিয়েও তিনি লম্বা ৭টি সূরা পাঠ করেন।[4]
কখনো তিনি এগুলো হতে একটি করে সূরা প্রত্যেক রাকাআতে পাঠ করতেন।[5]
ماعلم أنه قرأ القرآن كله في ليلة (قط)
আদৌ একথা জানা যায়নি যে, তিনি এক রাত্রে পূর্ণ কুরআন খতম করেছেন।[6] বরং তিনি আব্দুল্লাহ ইবনু আমির (রাযিয়াল্লাহু আনহু)-কে এ বিষয়ে অনুমতি দেননি। তাকে বলেছিলেন
اقرأ القرآن في کل شهر قال قلت: إني أجد قوة قال فاقرأه في عشرين ليلة قال : قلت : إنی آجد قوة، قال : فاقرأه في سبع ولا تزد على ذلك
প্রত্যেক মাসে একবার কুরআন পড়বে, তিনি বলেন, আমি বললাম- আমি তার চেয়েও বেশী শক্তি রাখি। তখন তিনি বললেনঃ তবে বিশ রাত্রে তা পড়বে। তিনি বলেন, আমি বললাম, আমি আরো ক্ষমতা অনুভব করি। তিনি বললেনঃ তবে এক সপ্তাহে, এর উপরে যাবে না। (তথা এর চেয়ে কম সময়ে খতম দিবে। না)।[7] অতঃপর তাকে পাঁচ দিনের অনুমতি দেন[8] এবং পরবর্তীতে তিন দিনেরও অনুমতি দেন[9] এবং এর চেয়ে কমে পড়তে তিনি তাকে নিষেধ করেন।[10] তিনি তাকে এর কারণ দর্শাতে যেয়ে বলেছেনঃ
لايفقه من قرأ القرآن فى أقل من ثلاث، وفى لفظ : لايفقه من قرأ القرآن في أقل من ثلاث
যে ব্যক্তি তিন দিনের কমে কুরআন পড়বে সে তা বুঝতে সক্ষম হবে না।[11] অপর শব্দে এসেছে ঐ ব্যক্তি কুরআন বুঝে না যে তিন দিনের কমে তা পড়ে।[12]
অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেনঃ
فإنَّ لكلِّ عابدٍ شِرَّةٌ ولكلِّ شِرَّةٍ فترةٌ فإمَّا إلى سنَّةٍ وإمَّا إلى بدعةٍ ، فمن كانت فترتُه إلى سنَّةٍ فقد اهتدَى ومن كانتْ فترتُه إلى غيرِ ذلك فقد هلك
প্ৰত্যেক ইবাদতকারীর রয়েছে তেজদীপ্ততা।[13] আর প্রত্যেক তেজস্বিতার রয়েছে স্থিরতা আর এর শেষ পরিণতি হয় সুন্নাতের প্রতি হবে, অন্যথায় বিদ’আতের প্রতি হবে। যার স্থিরতা সুন্নাতের প্রতি হবে সে হিদায়াত পাবে। পক্ষান্তরে যার স্থিরতা অন্য কোন কিছুর প্রতি হবে সে ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।[14]
তাইতো নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিন দিনের কমে কুরআন খতম করতেন না।[15] তিনি বলতেনঃ
من صلى في ليلة بمائة آية فإنه يكتب من القانتين المخلصين
যে ব্যক্তি রাত্রে দু’শত আয়াত পড়ার মাধ্যমে ছালাত আদায় করবে। সে (قانتين مخلصين) একনিষ্ট অনুগতদের তালিকায় লিখিত হবে।[16]
তিনি প্রত্যেক রাত্রে সূরা ‘বানী ইসরাঈল’ (১৭ : ১১১) ও সূরা ‘যুমার’ (৩৯ : ৭৫) পাঠ করতেন।[17] তিনি বলতেনঃ
من صلى في ليلة بمائة آية لم يكتب من الغافلين
যে ব্যক্তি রাত্রে এক শত আয়াত পড়ার মাধ্যমে ছালাত আদায় করবে সে গাফিলদের তালিকায় লিপিবদ্ধ হবে না।[18] কখনো তিনি প্রত্যেক রাক’আতে পঞ্চাশ বা ততোধিক আয়াত পাঠ করতেন।[19] কখনো বা “ইয়া আইয়ুহাল মুযযাম্মিল” (৮৩ : ২০) এর পরিমাণ কিরা'আত পাঠ করতেন।[20]
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কদাচিৎ ছাড়া পূর্ণ রাত্রি ছালাত পড়তেন না।[21]
আব্দুল্লাহ বিন খাব্বাব বিন আরত্ব (যিনি রাসূলের সঙ্গে বদর যুদ্ধে অংশ নেন) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এক রাত্রে ফজর পর্যন্ত (ইবাদতরত থাকতে) লক্ষ্য করেন, অপর বর্ণনায় ছালাত পড়তে দেখেন। যখন তিনি স্বীয় ছালাত শেষে সালাম ফিরালেন তখন খাব্বাব (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাকে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল, আপনার জন্য আমার পিতা মাতা উৎসর্গ হউক আজ রাতে আপনি এমন ছালাত পড়েছেন যা আর কোন দিন পড়েননি? তিনি বলেনঃ
أجل إنها صلاة رغب ورهب وإني سألت ربي عزوجل ثلاث خصال، فأعطاني اثنتين ومنعني واحدة : سألت ربي أن لا يهلكنا بما أهلك به الأمم قبلنا (وفي لفظ : أن لايهلك أمتي بسنة)، فأعطانيها، وسألت ربي عزوجل أن لايظهر علينا عدوا من غيرنا، فأعطانيها، وسألت ربي أن لايلبسنا شيعا، فمنعنیها
হ্যাঁ, এটি ছিল আশা ও ভয়ের ছালাত। আমি (এই ছালাতে) আমার প্রতিপালকের নিকট তিনটি বস্তু চেয়েছিলাম যার দু’টি আমাকে দিয়েছেন এবং একটি দেননি। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট চেয়েছি, তিনি যেন পূর্বেকার জাতিকে যে কারণে ধ্বংস করেছেন সে কারণে আমাদেরকে ধ্বংস না করেন। (অপর বর্ণনায় রয়েছেঃ আমার উম্মতকে যেন দুৰ্ভিক্ষ দ্বারা ধ্বংস না করে দেন)। তিনি ইহা দান করেছেন। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট এই দুআ করেছি যে, তিনি যেন আমাদের উপর বিজাতীয় শক্রকে বিজয়ী না করেন। তিনি আমাকে এটা দিয়েছেন। আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আরো দুআ করি যে, তিনি যেন আমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত না করে দেন, কিন্তু এটি কবুল করেননি।[22]
পূর্ণ এক রাত্রি তিনি একটি আয়াত বারংবার পাঠ করে করে ফজর পর্যন্ত গড়িয়ে দেন। আয়াতটি হচ্ছেঃ
إِنْ تُعَذِّبْهُمْ فَإِنَّهُمْ عِبَادُكَ وَإِنْ تَغْفِرْ لَهُمْ فَإِنَّكَ أَنْتَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ
অর্থাৎ যদি তুমি তাদেরকে শাস্তি দাও। তবে ওরাতো তোমারই দাস আর যদি তাদেরকে ক্ষমা কর, তবে তুমিতো পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। (৫ : ১১৮)
এই আয়াতটি তিনি রুকূতে পড়েন, সাজদাতে পড়েন এবং এর মাধ্যমে দুআও করেন। সকাল হলে আবু যর (রাযিয়াল্লাহু আনহু) তাকে বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি গত রাতে এই একটি মাত্র আয়াত ফজর পর্যন্ত পড়তে থেকেছেন। রুকু, সাজদা এবং দু'আতে এটাই পড়েছেন। অথচ আল্লাহ তা'আলা আপনাকে পূর্ণ কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে কেউ এ রকম করলে আমরা তা আপত্তিকর ভাবতাম। তিনি বললেনঃ আমি আমার প্রভুর নিকট আমার উম্মতের জন্য সুপারিশাধিকার আবেদন করি ফলে তিনি আমাকে তা দান করেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না সে ইনশাআল্লাহ তা লাভ করবে।[23]
এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমার এক প্রতিবেশী রয়েছে যে রাত্রিকালীন ছালাত পড়ে তবে সে তাতে (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) ব্যতীত অন্য কোন কিরা'আত পড়ে না; এটাই বারবার পাঠ করে, অতিরিক্ত কিছুই পড়ে না। অভিযোগকারী যেন একে অপর্যাপ্ত মনে করেছে। আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ إِنَّهَا لَتَعْدِلُ ثُلُثَ الْقُرْآنِ
ঐ সত্ত্বার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে এই সূরা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।[24]
[2] এভাবেই রিওয়ায়াত এসেছে 'নিসা’ আলে-ইমরান এর পূর্বে। এতে এ কথার প্রমাণ পাওয়া যায় যে, উসমানী কুরআনের সিরিয়াল ভঙ্গ করা বৈধ। পূর্বেও এমন কথার উল্লেখ হয়েছে।
[3] মুসলিম ও নাসাঈ।
[4] আবু ইয়ালা, হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী ঐকমত্য পোষণ করেন। অপর বর্ণনায় الطول শব্দ এসেছে। ইবনুল আসীর বলেনঃ যম্মা দ্বারা طولى এর বহুবচন যেমন كبرى এর বহুবচন كبر সাতটি দীর্ঘ সূরা হচ্ছে ‘আল-বাকারা’ ‘আলে-ইমরান’ ‘আন-নিসা’ ‘আল-মা-ইদা’ ‘আল-আন’আম’ ‘আল-আরাফ’ ‘আত্-তাওবাহ’।
[5] ছহীহ সনদে আবু দাউদ, নাসাঈ।
[6] মুসলিম ও আবু দাউদ।
[7] বুখারী ও মুসলিম।
[8] নাসাঈ ও তিরমিযী এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন।
[9] বুখারী ও আহমাদ।
[10] দারিামী, সাঈদ বিন মানছুর স্বীয় “সুনান” গ্রন্থে ছহীহ সনদে।
[11] ছহীহ সনদে আহমাদ।
[12] দারিমী, তিরমিযী এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন।
[13] شِرَّةٌ শিন সাকিন ও রা-তাশদীদ যুক্ত হবে এর অর্থঃ কর্ম তৎপরতা ও মনোবল। যৌবনের شِرَّةٌ তেজস্বিতা হচ্ছে প্রাথমিক ও তেজদীপ্ত মুহুর্ত। ইমাম ত্বাহাবী বলেনঃ এটি বিভিন্ন বিষয়াভ্যান্তরস্থ সেই তেজদীপ্ততা- যা মুসলিমগণ তাদের মহান প্রতিপালকের নৈকট্য অর্জনের বিভিন্ন আমলের ক্ষেত্রে নিজেদের ভিতর থাকা কামনা করেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক্ষেত্রে তাদের তেজদীপ্ততা থাকা পছন্দ করেছেন। তবে ঐ তেজদীপ্ততা নয় যা থেকে তাদের ক্ষান্ত থাকা উচিত এবং যা তা থেকে অন্য কিছুর দিকে বের করে নিয়ে যায়।
আর তিনি এসব নেক আমলকে মৃত্যু পর্যন্ত ধরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন যেগুলো নিয়মিত পালনের বৈধতা রয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এর ব্যাখ্যায় বর্ণিত হয়েছে أَحَبَّ الأَعْمَالِ عِنْدَ اللَّهِ أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ অর্থঃ আল্লাহর নিকট সর্বাপেক্ষা প্ৰিয়তম আমল হচ্ছে- নিয়মিত আমল যদি তা কমও হয়। আমি (লেখক) বলতে চাইঃ এই হাদীছটি যাকে শুরুতে ইমাম ত্বাহাবী روى অর্থাৎ বর্ণিত হয়েছে বলেছেন তা বিশুদ্ধ- যাকে বুখারী ও মুসলিম বর্ণনা করেছেন আইশা (রাযিয়াল্লাহু আনহা) থেকে ।
[14] আহমাদ ও ইবনু হিব্বান স্বীয় “ছহীহ” গ্রন্থে।
[15] ইবনু সা’দ (১/৩৭৬) ও আবুশ শাইখ “আখলাকুন নবী” (২৮১)।
[16] দারিমী, হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
[17] আহমাদ, ইবনু নাছর, ছহীহ সনদে।
[18] দারিামী, হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন ও যাহাবী তাতে ঐকমত্য পোষণ করেছেন।
[19] বুখারী ও আবু দাউদ।
[20] ছহীহ সনদে আহমাদ ও আবু দাউদ।
[21] মুসলিম ও আবু দাউদ। আমি (লিখক) বলতে চাইঃ এ হাদীছটিসহ অন্যান্য হাদীছের আলোকেই সর্বদা বা অধিকাংশ সময় পূর্ণ রাত জেগে ইবাদত করা মাকরুহ। কেননা এটা সুন্নতের বিপরীত। যদি পূর্ণ রাত্রি জেগে ইবাদত করা উত্তম হত তবে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা ছাড়তেন না। আর সর্বোত্তম নির্দেশনা হচ্ছে- মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নির্দেশনা।
ইমাম আবু হানীফা সম্পর্কে যে কথা প্রচলিত আছে যে, তিনি দীর্ঘ চল্লিশ বৎসর ইশার উযু দিয়ে ফজর পড়েছেন তা শুনে ধোঁকায় পড়া চলবে না। কেননা এর কোন ভিত্তি নেই। বরং আল্লামা ফিরুজ আবাদী (রহঃ) الرد على المعترض কিতাবে বলেনঃ এটি স্পষ্ট মিথ্যা সম্ভারের একটি ঘটনা যার সম্বন্ধ ইমাম সাহেবের দিকে করা সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কেননা এতে কোন উল্লেখযোগ্য মর্যাদা প্রমাণিত হয় না বরং তার মত ইমামের পক্ষে উচিত ছিল উত্তম পদ্ধতি অবলম্বন করা। আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে, প্রত্যেক ছালাতের জন্য উযু নবায়ন করা উত্তম ও পরিপূর্ণ কাজ। তাও তখনকার ব্যাপার যখন তাঁর একাধারে চল্লিশ বৎসর রাত্রি জাগরণ সাব্যস্ত হবে। বস্তুত এমনটি অসম্ভব হওয়াই স্বাভাবিক। যা কিছু অজ্ঞ ও গোড়া লোকেদের কপোলকল্পিত অবান্তর কাহিনী মাত্র যা আবু হানীফাসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের ব্যাপারে রটনা করেছে। বস্তুত এসবই হচ্ছে মিথ্যা।
[22] নাসাঈ, আহমাদ, ত্বাবারানী (১/১৮৭/২) এবং তিরমিযী একে ছহীহ বলেছেন।
[23] নাসাঈ, ইবনু খুযাইমা (১/৭০/১) আহমাদ, আবু নছর ও হাকিম এবং তিনি একে ছহীহ বলেছেন আর যাহাবী তার সমর্থন করেছেন।
[24] আহমাদ ও বুখারী।