লগইন করুন
রোগীর মৃত্যু উপস্থিত হলে নিম্নের কাজগুলি করা উচিতঃ
(ক) কলেমা ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দেওয়া। পিয়ারা রসূল (ﷺ) বলেন, তোমরা তোমাদের মরণাপন্ন ব্যক্তিকে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ স্মরণ করিয়ে দাও।’’[1]
(খ) মুমূর্ষুর জন্য দু‘আ করা; আল্লাহ! ওকে ক্ষমা করে দাও। আল্লাহ! ওর মরণকষ্ট আসান করে দাও ---’ ইত্যাদি।
(গ) কোন প্রকারের মন্দ কথা বা অন্যায় মন্তব্য না করা। কারণ, রসূল (ﷺ) বলেন, যখন তোমরা কোন রোগী বা মরণাপন্ন ব্যক্তির নিকট উপস্থিত থাকবে, তখন ভালো কথাই বলো। কেননা, তোমরা যা বলবে তার উপর ফিরিশ্তাবর্গ ‘আমীন-আমীন’ বলবেন।’’[2] সুতরাং এ মুহূর্তে দু‘আ ও বদ্দুআ উভয়ই কবুল হওয়ার আশা ও আশঙ্কা থাকে।
(ঘ) তার চক্ষুদ্বয় খোলা থাকলে বন্ধ করে দেওয়া এবং তার জন্য পুনঃপুনঃ দু‘আ করা। যেমন, ‘আল্লাহ ! তুমি ওকে ক্ষমা কর, সৎপথপ্রাপ্ত লোকেদের দলভুক্ত কর এবং ওকে মাফ করে দাও প্রভু! ওর মত (ভালো লোক) ওর বংশে পুনঃ দান কর। আমাদেরকে এবং ওকে মাফ করে দাও প্রভু! ওর কবরকে প্রশস্ত করো এবং তা আলোময় করে দিও---।’’ ইত্যাদি।
উম্মে সালামাহ (রাঃ) বলেন, রাসুল (ﷺ) আবু সালামার নিকট উপস্থিত হলেন। তখন তার চক্ষু (মৃত্যুর পর) খোলা ছিল। তিনি তা বন্ধ করে দিলেন এবং বললেন, ‘‘রূহ কবয হয়ে গেলে চোখ তার দিকে তাকিয়ে থাকে।’’ রাসুল (ﷺ) বললেন, ‘‘তোমরা নিজেদের উপর বদ্দুআ করো না। বরং মঙ্গলের দু‘আ কর। কারণ, তোমরা যা বল তার উপর ফিরিশ্তাবর্গ ‘আমীন-আমীন’ (কবুল কর) বলে থাকেন।’’
অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি আবু সালামাহকে ক্ষমা করে দাও। ওর মর্যাদা উন্নীত করে ওকে হেদায়াতপ্রাপ্তদের দলভুক্ত করে দাও। ওর অবশিষ্ট পরিজনের মধ্যে ওর প্রতিনিধি প্রদান কর। আমাদেরকে এবং ওকে মাফ করে দাও হে সারা জাহানের প্রভু! ওর জন্য ওর কবরকে প্রশস্ত ও আলোকিত করে দাও।’’[3]
(ঙ) মুখগহ্বর খোলা থাকলে বন্ধ করে দিন। প্রয়োজনে দুই চিবুক চেপে কিছু বেঁধে দিন। হাত-পা হিলিয়ে ঢিলা করে দিন। অনিবার্য কারণে দাফন-কার্যে দেরী হবে আশঙ্কা করলে লাশ ফ্রিজে রাখার ব্যবস্থা করুন।
(চ) একটি চাদর বা কাঁথা দ্বারা তার সর্বশরীর ঢেকে দিন। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘‘আল্লাহর রাসুল (ﷺ) যখন ইন্তেকাল করলেন তখন তাঁকে চেককাটা ইয়ামানী চাদর দ্বারা ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।’’[4]
[2]. মুসলিম, তিরমিযী, প্রমুখ
[3]. মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আহমাদ ৬/২৯৭, বাইহাকী ৩/৩৩৪
[4]. বুখারী, আবু দাউদ, প্রমুখ